জমির দখলকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত হলেন ১২ জন। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের উত্তর দেবীপুর গ্রামে। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বসিরহাট থানার আইসি হাবিবুর রহমান বলেন, “উভয়পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। সংঘর্ষ বাধানোর অভিযোগে দুই মহিলা-সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াই বিঘা জমির দখল নিয়ে উত্তর দেবীপুরের বাসিন্দা ফজের আলি মণ্ডল এবং পাশের গ্রাম চকফারাসতপুরের বাসিন্দা মনসুর মণ্ডলের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ববাদ চলছিল। দু’পক্ষরই দাবি জমির মালিক তাঁরাই। এ নিয়ে মীমাংসার জন্য সালিশিও বসে। কিন্তু সেখানে জমির মালিকানার বিষয়ে মীমাংসা হয়নি। সম্প্রতি ওই জমিতে ফজের আলি মণ্ডলের পরিবার ঘর তৈরি করলে তা ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরে বিবাদ চরমে উঠলে দু’পক্ষই পুলিশের দ্বারস্থ হয়। ঠিক ছিল মঙ্গলবার সকালে পুলিশের উপস্থিতিতে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
কিন্তু এ দিন সকালে পুলিশ আসার আগেই বেলা ১১টা নাগাদ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এক পক্ষ আর এক পক্ষকে আক্রমণ করলে মারামারি বেধে যায়। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে গ্রামবাসীরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। ততক্ষণে অবশ্য দা, বল্লম, ভোজালির আঘাতে দু’পক্ষের অন্তত ১২ জন জখন হয়েছেন। গ্রামবাসীরাই তাঁদের মধ্যে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করান। ফজের আলি মণ্ডলের পরিবারের সদস্য জহুরা বিবি বলেন, “ওই জমি আমাদের। জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও মনসুর মণ্ডল তা দখল করার চেষ্টা করছে। জমিতে ঘর তৈরি করলে তা ভেঙে দিয়েছে। মীমাংসার জন্য পুলিশ এ দিন আসার কথা ছিল। তার আগেই ওরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপরে আক্রমণ করে। জমি দখলের চেষ্টা করে। আমরা বাধা দিতে গেলে মারধর করে। আমাদের পাঁচজন গুরুতর জখম হন। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে গ্রামের মানুষ ওদের ঘেরাও করে।”
অন্যদিকে, মনসুর মণ্ডলের দাবি ওই জমির মালিক তাঁরাই। তিনি বলেন, “আমরা পুলিশের মধ্যস্থতার জন্য যখন অপেক্ষা করছিলাম তখন ওরাই দা, বল্লম, ভোজালি নিয়ে আমাদের উপরে হামলা চালায়। বাধা দিতে গিয়ে আমাদের চার-পাঁচজন জখম হয়েছেন। গ্রামের মানুষ রুখে না দাঁড়ালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হত।” |