জাকার্তায় আশিয়ান কাপ জয়ের পুনরাবৃত্তি ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে ঘটানোর ধারেকাছে যেতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। গ্রপ লিগের শেষ ম্যাচে ব্রাজিলের মাতসুবারার কাছে এক গোলে হেরে ভিয়েতনামের আইডিসি কাপ থেকে গোড়ার দিকে বিদায় নিল ট্রেভর মর্গ্যানের দল। হারলেও চমৎকার খেললেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা। সবচেয়ে বেশি জমাট দেখিয়েছে ওপারার নেতৃত্বাধীন ইস্টবেঙ্গল-রক্ষণ। ২২ মিনিটের মাথায় ভিড়ের মধ্য দিয়ে অলিভিয়েরার দূরপাল্লার একটা দুর্দান্ত শট বাদ দিলে, আর কোনও ভুল করেননি ওপারা-নির্মল-নওবারা। মর্গ্যানের দুর্ভাগ্য ওই একবারই ইস্টবেঙ্গলের জালে বল জড়ায় ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি।
গোল খাওয়ার পর ৬৮ মিনিট সময় পেয়েও সমতায় ফেরাতে পারল না কেন ইস্টবেঙ্গল? আসলে মর্গ্যানের দলকে ভুগতে হল একজন প্রকৃত স্ট্রাইকারের অভাবে। কার্ড সমস্যায় টোলগে নেই। বলজিৎ সাইনির চোট। তাই ইস্টবেঙ্গল আক্রমণভাগের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ছিল গাওয়ের কাঁধে। সোমবার রাত পর্যন্ত ঠিক ছিল, তিনি খেলবেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ গাও জানান, তাঁর বাঁ-পায়ের ঊরুতে প্রচণ্ড ব্যথা লাগছে। টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষে অনেক চেষ্টা করেও গাওকে মাঠে নামানো যায়নি। বাধ্য হয়েই পেন এবং রবিন সিংহকে সামনে রেখে দল নামান মর্গ্যান। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। ভিয়েতনাম থেকে ইস্টবেঙ্গলের ম্যানেজার রজত গুহ ফোনে বলছিলেন, “টুর্নামেন্টের সেরা ম্যাচ খেললাম আমরা। আমাদের দুর্ভাগ্য শুধু একটা গোল করার লোক ছিল না টিমে। বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরতে খুব খারাপ লাগছে।” |
গাও-টোলগে না থাকলেও গোল করার অনেক সুযোগ পেয়েছিলেন রবিন। তাঁর গোল নষ্টের পাশাপাশি ভাগ্যের কাছেও হারতে হল ইস্টবেঙ্গলকে। নির্মল এবং ওপারার একটা হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ম্যাচ শেষের মিনিট কুড়ি আগে ভাসুমের একটা দুর্দান্ত ব্যাক হেড বাঁ-দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচান মাতসুবারার গোলকিপার। এ ছাড়া পেন এবং সুশান্ত ম্যাথুর কয়েকটা শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে যায়। লাল-হলুদ ম্যানেজার অবশ্য প্রশংসা করলেন বিপক্ষ গোলকিপারের। বললেন, “আজ আসল ম্যান অফ দ্য ম্যাচ মাতসুবারার গোলকিপার। ও বেশ কয়েকটা দুর্দান্ত সেভ করেছে।”
হারের পাশাপাশি কার্ডের হাত থেকেও বাঁচতে পারল না ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে লাল কার্ড দেখলেন পেন ওরজি। গোলের খোঁজে শেষ দশ মিনিট অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে গিয়ে এই বিপক্তি। যদিও টোলগের মতো পেনের লাল কার্ড নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না ইস্টবেঙ্গলকে। কারণ টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিল তারা।
সামনেই আই লিগ। তার আগে সালগাওকরের বিরুদ্ধে সুপার কাপ খেলবে ইস্টবেঙ্গল। মর্গ্যানের জন্য সুখবর, দলে কোনও গুরুতর চোট-আঘাতের সমস্যা নেই। এখন দেখার ১৮ অক্টোবর সুপার কাপ ম্যাচে করিম বেঞ্চারিফাকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের বদলা নিতে পারেন কি না লাল-হলুদ কোচ?
ইস্টবেঙ্গল: অভ্র, নির্মল, নওবা, ওপারা, রবার্ট, ভাসুম, সুশান্ত, পাইতে, সঞ্জু (সুবোধ), পেন, রবিন। |