|
|
|
|
গ্রামবাসীর তৎপরতায় বাঁচল কিশোরী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গ্রামের মন্দিরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল এক কিশোরী। তার পরিচয়, গ্রামের নাম কিছুই জানার উপায় ছিল না। তবে শেষমেশ গ্রামবাসীদের তৎপরতাতেই প্রাণে বাঁচল বছর পনেরোর মমতা সাঁতরা। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখতে পেয়ে চোখ ছলছল করে ওঠে মা ললিতা সাঁতরার। বলেন, “সোমবার সন্ধে থেকে কত খোঁজাখুজি করেছি। কোথাও পাইনি। যাঁরা ওর প্রাণ বাঁচালেন, তাঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
খড়্গপুর-২ ব্লকের জকপুরের মনসা মন্দিরটি প্রসিদ্ধ। বহু মানুষ এখানে পুজো দেন। সোমবার দুপুরে এই মন্দিরের সামনেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল মমতা। স্থানীয় মানুষজনই তাকে দেখতে পায়। আসেন মন্দির কমিটির কয়েক জন সদস্যও। বোঝা যায়, মেয়েটি কোনও ভাবে কীটনাশক খেয়ে ফেলেছে। কিন্তু তার নাম কী, বাড়ি কোথায়, কী ভাবেই বা এখানে এসে পড়লএ সবের জবাব তখনও অজানা। তবে সে সব জানতে গেলে দেরি হয়ে যেতে পারে। তাতে কিশোরীর প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। তাই দেরি না করে স্থানীয়রা মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে উদ্যোগী হন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। বিকেল নাগাদ গাড়ি ভাড়া করে মেয়েটিকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে এনে ভর্তি করা হয়।
ভর্তির সময়েও কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি। কারণ, হাসপাতালে কিশোরীর নাম-ঠিকানা জানতে চাওয়া হয়। তখন গোটা ঘটনার কথা জানান গ্রামবাসীরা। এর পর আর হাসপাতালের কর্মীরা কথা বাড়াননি। রাতের দিকে জ্ঞান ফেরে মেয়েটির। জানা যায়, তার নাম-পরিচয়। জকপুর থেকে মেডিক্যালে এসেছিলেন লবকান্ত রাউল। তিনি মনসা মন্দির-কমিটির সঙ্গেও যুক্ত। তাঁর কথায়, “প্রথমে মেয়েটি কিছুই বলতে চাইছিল না। কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর রাতে নাম-ঠিকানা জানায়। আমরাও ওর বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করি।” মমতার বাড়ি মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাথরায়। বাবা সাধন সাঁতরা অন্যের জমিতে মজুর খাটেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে স্ত্রী ললিতাদেবীকে নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পৌঁছন সাধনবাবু।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার রামনারায়ণ মাইতি বলেন, “আগের থেকে মেয়েটি এখন অনেকটা সুস্থ। এ ক্ষেত্রে রোগীকে তাড়াতাড়ি ভর্তি করা হয়েছে বলেই পরিস্থিতি জটিল হয়নি।” |
|
|
|
|
|