গ্রামে সিংহবাহিনী অষ্টধাতুর মূর্তি আছে। দুর্গাপুজোর চার দিন এই অষ্টধাতুর মূর্তিকেই পুজো করা হয়। এ ছাড়া গ্রামে আর কোনও দুর্গাপুজো হত না। শুধু তাই নয়, মূর্তি গড়ে দুর্গাপুজোর প্রচলন নেই মুরারই থানার গোঁড়শা গ্রামে।
তবে প্রাচীন রীতি মেনে গোঁড়শা গ্রামের পূর্ব ও পশ্চিমএই দুই প্রান্তে দু’টি পাকা দালানে লক্ষ্মীপুজো হয়। কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে দু’পাড়াতেই লক্ষ্মী কোজাগরী রূপে পূজিত হয়। দুই পাড়ার মধ্যে গ্রামের পশ্চিম পাড়ার পুজো প্রাচীন। ওই দু’টি পাড়ার লক্ষ্মী পুজো সর্বজনীন। দুই পড়ার লক্ষ্মী পুজোর নামে তিন বিঘে করে জমি আছে। ওই জমির ধান পুজোর খরচে ব্যবহার করা হয়। বাকি টাকা দুটি পাড়ার বাসিন্দারা ভাগ করে চাঁদা তোলেন। দুই পাড়ারই লক্ষ্মীর বাহন প্যাঁচার সঙ্গে আরও দু’টি ছোট পুতুল থাকে। ওই দু’টি পুতুলকে ‘ছায়া ছবি’ নামে মানেন।
দুই পাড়ার মূর্তির মধ্যে তারতম্য থাকলেও আয়োজনে দুই পাড়ার মধ্যে চলে প্রতিযোগিতা। এক পাড়ায় এক ধরনের বাজি পোড়ানো হলে অন্য পাড়ায় অন্য ধরনের বাজি পোড়ানো হয়। এক পাড়া যদি পুজোর রাতে কবি গানের আসর বসায় অন্য পাড়া বাউল গানের আসর বসায়। আলোকসজ্জাতেও প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যায়। লক্ষ্মী পুজোর পরের দিন রাত ১২টার পরে বিসর্জন হয়। ভোর ৪টে থেকে চলে বাজি পোড়ানোর প্রতিযোগিতা। প্রতিমার ঘট ভরা থেকে নিরঞ্জন পর্যন্ত দু’টি পাড়া দু’টি আলাদা পুকুর ব্যবহার করে। গ্রামবাসী পঞ্চানন সেন, সঞ্জীব রায়দের কথায়, “লক্ষ্মী পুজোই গ্রামের প্রধান উৎসব। কাজের জন্য যাঁরা বাইরে থাকেন এবং আত্মীয়স্বজনেরা লক্ষ্মী পুজোর কটা দিন আমাদের গ্রামে কাটিয়ে যান।” |