তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল কাঁকসাতেও। সোমবার রাতে মধ্য বর্ধমানের ওই এলাকায় এক গোষ্ঠী অপর গোষ্ঠীর উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। বোমা পড়ে। তবে রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে মসিম খান নামে এক তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে বোমা ছোড়ে এক দল দুষ্কৃতী। বাধা দিতে গিয়ে মার খান ফিরোজ খান, নুর আলি খান ও তাহের খান নামে তিন তৃণমূল কর্মী। শেষ দু’জনকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফিরোজ শেখের ভাই মিন্টু শেখের দাবি, “সিপিএম ছেড়ে কয়েক জন সম্প্রতি তৃণমূলে এসেছে। তাদের সমর্থন করছেন দেবদাস বক্সী নামে এক নেতা। তারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।”
শেখ মসিম ১২ জনের নামে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাঁরা সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। তবে দেবদাসবাবু অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।” তাঁর ব্যাখ্যা, “ওই এলাকায় যাঁরাই তৃণমূলে রয়েছেন, তাঁরা হয় ফরোয়ার্ড ব্লক বা সিপিএম ছেড়ে এসেছেন। কাজেই পুরনো কোনও বিবাদ থেকেও এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।” দলের ব্লক সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি উচ্চতর নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে।”
বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলা জুড়েই তৃণমূলের একের পর এক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা সামনে এসেছে। গুসকরার পুরপ্রধান-সহ বেশ কয়েক জনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরেই কাঁকসায় প্রভাব ছিল বর্তমান জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের। সে ভাবে কোনও দিনই কাঁকসায় ছাপ রাখতে পারেননি দলের বর্তমান দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল সভাপতি তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায়। দেবদাসবাবু বরাবর অপূর্ববাবুর অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। সম্প্রতি অপূর্ববাবু দলের সাংগঠনিক দায়িত্বে আসার পরে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য দেবদাসবাবুকে দলীয় প্রতিনিধি মনোনীত করেছেন।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে যাঁরা মার খেয়েছেন, তাঁরা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীর লোকজন। অভিযুক্তেরা দেবদাসবাবু অর্থাৎ অপূর্ববাবুর গোষ্ঠীর লোক। দেবদাসবাবু অবশ্য বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। আমাকে অপূর্ববাবু যে দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি শুধু সেটাই পালন করছি।” কিন্তু অপর পক্ষ তাঁর এই বক্তব্যে মোটেও খুশি নয়। ব্লক সভাপতি অশোকবাবু অবশ্য উচ্চতর নেতৃত্বকে জানানো ছাড়া আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |