বুদবুদ-গুসকরা রাস্তা ঠিকঠাক সংস্কার হয় না কখনওই। শুধু তাপ্পি মেরে সায়মিক ভাবে পরিস্থতি সামাল দেওয়া হয়। ফলে নিত্যদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন বাসিন্দারা। পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ গলসি ১, আউশগ্রাম ১ ও ২ নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ অংশের বাসিন্দাদের।
বুদবুদের জাতীয় সড়ক থেকে রাস্তাটি গিয়েছে গুসকরা পর্যন্ত। দৈর্ঘ্য প্রায় ২২ কিমি। তার মধ্যে সংস্কারের অভাবে মানকর থেকে গন্না দরিয়াপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিমি রাস্তা বেহাল। বুদবুদ ছাড়তেই রাস্তার বেহাল দশা শুরু। মানকরের বেশ কিছু অংশে পিচ উঠে গিয়েছে। বেরিয়ে রয়েছে বড় বড় পাথর। খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, মানকর গ্রামের ভিতরের রাস্তার অংশ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পূর্ত দফতরকে বার বার বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি। অথচ এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কাটোয়া, কৃষ্ণনগর, বোলপুর, গুসকরা, দুর্গাপুর, আসানসোল রুটের বহু বাস চলাচল করে। এছাড়া অন্য যানবাহন তো আছেই। মানকরে কলেজ, দু’টি হাইস্কুল, হাসপাতাল, পঞ্চায়েত অফিস, লাইব্রেরি রয়েছে। গলসি ১ ব্লকের বিডিও অফিসটি বুদবুদে অবস্থিত। ওদিকে অমরারগড়ে আউশগ্রাম ২ বিডিও অফিস রয়েছে। যাতায়াতের রাস্তা একটিই। |
এলাকার বাসিন্দা আনন্দ মণ্ডল, শীতল পালরা বলেন, “রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ি নিয়ে গেলে মনে হয় এই বুঝি উল্টে গেল। আবার হেঁটে যাওয়ার সময়েও ভয় লাগে। কারণ রাস্তার খানাখন্দ থেকে রেহাই পেতে রাস্তার ধার ধরে চলে যানবাহন। ফলে চাপা পড়ার ভয় থাকে। তাছাড়া মাঝে মাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে খানাখন্দগুলি ভরে যাচ্ছে জলে। গাড়ি বা যানবাহন গেলে সেই নোংরা জল গায়ে লাগছে।” বাসিন্দাদের দাবি, মোটর বাইকে চড়ে যাতায়াতের ঝুঁকি আরও বেশি। ভাঙা রাস্তায় যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে বেহাল এই রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে কংগ্রেসের নেতৃত্বে মানকরে পথ অররোধ করা হয়। পুরুষদের পাশাপাশি বাড়ির মহিলারাও যোগ দেন অবরোধে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ ছিল। অবরোধকারীদের পক্ষে জয়গোপাল দে জানান, বছরের পর বছর ধরে রাস্তাটি বেহাল। আমূল সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু পূর্ত দফতর নির্বিকার। অবিলম্বে রাস্তা সংস্কার করা না হলে ফের রাস্তা অবরোধ করা হবে বলে জানান তিনি। গলসি ১ ব্লকের বিডিও নিরঞ্জন কর জানান, বাসিন্দাদের দাবির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মানকরের ভিতরের রাস্তার পাশে স্থায়ী নিকাশি ব্যবস্থা নেই। ফলে রাস্তার উপর দিয়ে জল বয়ে যায়। পিচের ক্ষতি হয়। তাই সারাই করা হলেও ফের রাস্তা বেহাল হয়ে যায়। তাছাড়া রাস্তার বেশ কিছু অংশের মাটিও নরম। মাস কয়েক আগে ওই রাস্তার ভেঙে যাওয়া অংশ সারানো হয়েছিল। কিন্তু মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি হওয়ার জন্য ফের রাস্তাটি বেহাল হয়ে গিয়েছে বলে দাবি পূর্ত দফতরের। বর্ধমানের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, শীঘ্র রাস্তাটির আমূল সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। |