দম্পতির চেষ্টায় মায়ের কোলে ফিরল শিশু
বিসর্জনের ঘাটে যেতে রাস্তায় তখন জনস্রোত! তার মধ্যেই রাস্তার ধারে বছর দেড়েক বয়সের একটি শিশুকে তারস্বরে কাঁদতে দেখে থমকে যান শিলিগুড়ির চন্দপার্কের বাসিন্দা দম্পতি গোবিন্দ দত্ত এবং ইন্দ্রাণী দেবী। শিশুটির বাবা, মা কাছে নেই দেখে বুঝতে পারেন শিশুটি হারিয়ে গিয়েছে। উপায় কী? পথ চলতি লোকেরা এক ঝলক সে দিকে তাকিয়ে ফের নিজের মত চলে যাচ্ছেন। গোবিন্দবাবুর এক ছেলে এক মেয়ে ওই দুই শিশু সন্তানও রয়েছে তাঁদের কোলে। এর পর অবশ্য আর বেশি কিছু ভাবেননি তাঁরা। রাস্তার শিশুটিকে নিজেদের সন্তানদের মতই কোলে তুলে নেন। বেলুন, খেলনা কিনে দিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। শিশুটিকে নিয়ে যান বিসর্জনের ঘাটে পুরসভার শিবিরে। সেখান থেকে পুর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে তাঁর বাবা মায়ের হাতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়ে এমন ঘটনায় ওই দম্পতিকে ‘সুনাগরিক’ সম্মান দিয়ে পুরষ্কৃত করল পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “গোবিন্দবাবু হারিয়ে যাওয়া ওই শিশুটিকে কোলে করে শিবিরে নিয়ে এসেছেন। শিশুটির বাবা, মায়ের খোঁজ না মেলা পর্যন্ত ঠায় শিবিরে বসে থেকেছেন। তাঁদের ওই মানবিকতা বোধ প্রশংসনীয়। পুরসভার তরফে আমরা তাঁদের সুনাগরিক হিসাবে সম্মান জানিয়ে পুরষ্কৃত করেছি।” শুক্রবার রাতে মহানন্দার বিসর্জন ঘাটে শিবিরে তাদের হাতে পুরসভার তরফে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। তুলে দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথের দু’টি বই এবং একটি স্মারক উপহার। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমান রোডে মহানন্দা ক্লাবের পুজো মণ্ডপের কাছে নীল পোশাক পরা দেড় বছরের ওই শিশুটি কাঁদতে দেখেন গোবিন্দবাবুরা। পেশায় বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত গোবিন্দবাবু। শিশুটিকে পুরসভার শিবিরে নিয়ে গিয়ে বাবা মায়ের খোঁজ করে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি জানান। তৎপর হন মেয়রও। সেই মতো খোঁজখবর শুরু হয়। নিখোঁজ শিশুর ছবি স্থানীয় বৈদ্যুতিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন নিয়ে বাবা, মার খোঁজ শুরু তখনই। শিশুটির বাবা, মার সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত গোবিন্দবাবুরাও তাকে ছেড়ে অন্যত্র যেতে রাজি হননি। ঠায় বসে থাকেন তাঁরাও। পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজল চন্দ খোঁজ নিয়ে জানেন তার ওয়ার্ডের এক ফুচকা বিক্রেতার সন্তান ওই শিশুটি। খবর পেয়ে তাঁরাও পুরসভার শিবিরে আসেন। মাকে দেখে তাঁর কোলে যেতে ছটফট করে শিশুটি। পুরসভার তরফে পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়। ওই দম্পতির কাজের প্রশংসা করেন মেয়র-সহ সকলেই। ইন্দাণী দেবীরা মেয়রকে জানান, ওইটুকু তাঁরা নিজেদের কর্তব্য বলেই মনে করেছেন। তাঁর জন্য এত প্রশংসার কী আছে? শিশুটিকে তাঁরা নিজেদের সন্তানের মতই মনে করেছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.