রাবণকাটা নৃত্যে মাতোয়ারা বিষ্ণুপুর |
প্রতি বছরের মতো দশমীর দিন থেকে বিষ্ণুপুরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাবণকাটা নৃত্যের প্রদর্শনী। দশমী, একাদশী ও দ্বাদশী পর্যন্ত এই উৎসব চলে। এটি আসলে মা দুর্গার মহিষাসুর বধের পরে লোকশিল্পীদের আনন্দ নৃত্য। নৃত্যের চার কুশীলববিভীষণ, জাম্বুবান, হনুমান ও সুগ্রীব।
মুখে কাঠের তৈরি বিকটদর্শন মুখোশ। লাল, কালো, সাদা রঙের পোষাক থাকে। সঙ্গে থাকে ঝাড়খণ্ডী তালবাদ্যকাড়া, নাকাড়া, ঢোল প্রভৃতি। বাজনার বোল উঠলেই শহরের মনসাতলা, মল্লেশ্বর, কালীতলা, মহাপাত্রপাড়ায় ভিড় জমান কচিকাঁচা থেকে বুড়োবুড়ি সকলেই। নাচ শেষে মাঝরাতে দশমীতে ইন্দ্রজিৎ বধ। একাদশীতে কুম্ভকর্ণ নিধন পালা এবং দ্বাদশীতে রাবণ বধ। সেই দৃশ্য দেখতে তিন দিনই শহরের কাটানধারে শ্রী শ্রী রঘুনাথ জিউ মন্দির প্রাঙ্গণে লোকেলোকারণ্য। ওই মন্দিরে রাখা থাকে তরোয়াল। নৃত্যশিল্পী জাম্বুবানের নির্দেশে আর এক নৃত্যশিল্পী হনুমান কোপ মারে ইন্দ্রজিৎ, কুম্ভকর্ণ ও রাবণের গলায়। তিন দিনের জন্য জাম্বুবান সাজেন নারায়ণ বারিক, হনুমান সুকুমার অধিকারী, বিভীষণ রঞ্জিত গরাই এবং সুগ্রীবের চরিত্রে পঞ্চানন লোহার। এঁরা কেউ আইসক্রিম বেচেন, কেউ সব্জি নিয়ে বাজারে বসেন। আবার অনেকে হোটেলে রান্না করেন।
নারায়ণবাবু বলেন, “বিভিন্ন পাড়ায় ঘুরে নাচ দেখিয়ে এক এক দিনে হাজার টাকা আয় হয়। সে সবই নিজেরা ভাগ করে নিই।” তবে রোজগারের চেয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাওয়াতেই আনন্দ বেশি বলে শিল্পীরা জানিয়েছেন। সুকুমারবাবু বলেন, “এই লোকনৃত্য পরিবেশনের জন্য অন্য সময়ে আমাদের বাইরে ডাক পড়ে। বাইরে গেলে আয় কিছুটা বেশি হয়।”
|
দশমীর বিকেলে বাজ পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃত অন্নদা সোরেনের (১৯) বাড়ি হুড়া থানার কুদরুডি গ্রামে। তিনি স্থানীয় লালপুর মহাত্মা গাঁধী কলেজে কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে অন্নদা তাঁর পড়শি কিশোর শক্তিপদ সোরেনের সঙ্গে পাড়ার মণ্ডপে বসে গল্প করছিলেন। হঠাৎ আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির মধ্যেই বাজ পড়লে দু’জনে জখম হন। তাঁদের স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে অন্নদাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। শক্তিপদকে পুরুলিয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। |