টলি বিলাস
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়
এই গাড়িটা আমার ভাবমূর্তির সঙ্গে দারুণ যায়। যেমন দেখতে, তেমন টেকসই,
আর স্টাইলের দিক থেকেও লা-জবাব। ঠিক যেমনটা এতদিন ধরে চেয়েছি।
টালিগঞ্জের এক নম্বর সুপারস্টার আবারও ইন্ডাস্ট্রির প্রাচুর্যের মাত্রাটা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখন জাগুয়ার কোম্পানির ল্যান্ড রোভার ডিসকভারি-৪ গর্বিত মালিক। টালিগঞ্জে এই মুহূর্তে এটাই সবচেয়ে দামি গাড়ি। যে দিন থেকে এ খবরটা ইন্ডাস্ট্রি জেনেছে, সে দিন থেকে অভিনন্দন বার্তায় ভরে যাচ্ছে বুম্বাদা’র ইনবক্স।

প্রসেনজিৎ নিজেও নতুন গাড়ি নিয়ে বিরাট উত্তেজিত। “আমার গাড়ি-প্রীতি বহু দিনের। ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম নিসান, প্রথম সিয়েলো, এবং প্রথম টেরাক্যানটা আমিই কিনেছিলাম। এমন কী মারুতি ৮০০ আমিই প্রথম কিনি ইন্ডাস্ট্রিতে। যে দিন স্টুডিয়োয় নিয়ে গিয়েছিলাম, সে কী হইচই সবার মধ্যে! প্রায় উৎসবের মেজাজ। প্রাইভেট ওনার হিসেবে বাসের লাইসেন্সও কলকাতায় বোধহয় আমারই প্রথম। সেটা আমার ভ্যানিটি ভ্যানের জন্য। অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম একটা গাড়ি কিনব। ল্যান্ড রোভারটাই পছন্দ হল,” বলছেন প্রসেনজিৎ।

গাড়িটিও দুর্দান্ত! “গত শুক্রবার জন্মদিনের পার্টি ছিল সাউথ সিটিতে। পার্কিং থেকে নামছিলাম আর আমার ড্রাইভার ভয়ে ভয়ে গাড়িটা চালাচ্ছিল,” বলছেন প্রসেনজিৎ। “তখন আমিই বললাম ক্রুজ কন্ট্রোল বাট্নটা চাপতে। ক্রুজ কন্ট্রোলে দিলে ক্লাচ, ব্রেক সব ছেড়ে দেওয়া যায়। গাড়িটা আপনাআপনি ঢাল বুঝে স্পিড কমবেশি করে নিতে পারে।” শুধু তাই নয়, ল্যান্ড রোভারের জন্য স্পেশাল গ্যারেজও বানাচ্ছেন বুম্বাদা। “ইংল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচ বা উইম্বলডনের সময়ে বৃষ্টি এলে যখন পিচ ও কোর্ট ঢাকা হয়, তার নীচে পাম্প দিয়ে কৃত্রিম হাওয়া ছড়ানো হয় যাতে বাষ্প না জমে। এই গাড়িটার জন্যও একটা সে রকম ঢাকনা কিনছি। দাম আড়াই লাখ টাকা,” বলছেন বুম্বাদা।
সঙ্গে এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে সচিন তেন্ডুলকরও এই গাড়িটাই কিনেছেন। “সচিন নাকি রাতে গাড়িটা নিয়ে বেরোয়। খুব শিগগিরই আমাকেও রাতে দেখতে পাবেন, এই গাড়িটা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি কলকাতার রাস্তায়,” বলছেন নায়ক।

প্রসেনজিতের ল্যান্ড রোভারের মূল্য: ৬৫ লাখ টাকা।
দেব
গাড়ি বলতে আমি বুঝি স্টাইল আর গাড়িটা দেখতে কতটা সেক্সি। ঠিক আমার বিএমডব্লিউটার মতো।
গভীর রাতের দিকে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড ধরে যদি যান, হয়তো দেখতে পাবেন কুচকুচে কালো হন্ডা সিটি হু-উ-স করে বেরিয়ে গেল আপনাকে পাশ কাটিয়ে। যদি মনে প্রশ্ন জাগে কে এই গাড়ির মালিক, উত্তরটা হল তিনি টালিগঞ্জে এই মুহূর্তের সেরা হার্টথ্রব দেব। তবে হন্ডা সিটিতে কি আর আজকাল হার্টথ্রবদের মন ভরে? ভরে না যে, তার প্রমাণ হলেন দেব স্বয়ং। এখন তা হলে কোন গাড়ি চালান? দেব আজকাল চালান একটা বিএমডব্লিউ ৫ সিরিজ। “ড্রাইভিংটা ভীষণ ভালবাসি। স্টিয়ারিংয়ের পিছনে বসলে বিএমডব্লিউ-র মালিক হওয়ার পরিতৃপ্তি আর থ্রিল, দু’টোই অনুভব করি। প্রচুর ড্রাইভ করি, আর এই গাড়িটা ড্রাইভ করলে তো মনে হয় আমি সব রাস্তার সম্রাট,” হাসতে, হাসতে বলেন দেব।
দেবের বিএমডব্লিউ ৫ সিরিজের মূল্য: ৩৮ লাখ টাকা।
জিৎ
আমি সব সময়ই এসইউভি-ই পছন্দ করি। কারণ এই গাড়িগুলোতে প্রচুর জায়গা থাকে আর আমার গাড়িতে
প্রচুর জায়গা না হলে মুশকিল। কেননা শু্যটিংয়ে যাওয়ার সময় প্রচুর জিনিসপত্র গাড়িতেই রাখি।
টালিগঞ্জের অন্যতম গাড়ি-পাগল নায়ক। এত দিন একটা হন্ডা সিআরভি ড্রাইভ করতেন, এখনও করেন। কিন্তু আজকাল টালিগঞ্জের পাল্টানো সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জিৎ-ও ভাবছেন গাড়ি বদলানোর কথা। “মনটা ঠিক করতে পারছি না,” বলছিলেন জিৎ। “মাথায় তিনটে গাড়ির কথা ঘুরছে। যদি সিডান কিনতে হয়, তা হলে আমার পছন্দ জাগুয়ার এক্স-এফ। কিন্তু এসইউভি হলে কোনটা কিনব ঠিক করে উঠতে পারছি না। বিএমডব্লিউ এক্স-৫ হতে পারে, আবার জাগুয়ারও হতে পারে। মনে হয় দিওয়ালির মধ্যে মন ঠিক করে নিতে পারব।” এমনিতেই জিৎ হাইওয়েতে অসম্ভব ভাল ড্রাইভ করেন। আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্পিড তুলেছেন ১৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টায়। এর পর এই গাড়িগুলো কিনলে টালিগঞ্জের এই নায়ক কতটা স্পিড তোলেন, সেটাই দেখার।
জিতের স্বপ্নের গাড়ি জাগুয়ারের মূল্য: ৬৫ লাখ টাকা। আর বিএমডব্লিউ এক্স-৫-এর মূল্য: ৫৪ লাখ।
কোয়েল মল্লিক
আমার গাড়ির মধ্যে একটা না-বলা আভিজাত্য থাকবে। আর থাকবে গ্রেস। ঠিক যেমনটা আমি ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ করি।

ইন্ডাস্ট্রিতে কোয়েলের গাড়ি-প্রেমের কথা সবাই জানেন। সত্যি বলতে, তিনিই টালিগঞ্জের একমাত্র নায়িকা যাঁর কাছে আছে বাহন-সম্মানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্বাক্ষরতিন তারার চিহ্ন দেওয়া সেই মার্সিডিজ বেনজ। “সারা জীবন একটা গাড়ির মালিক হওয়ারই স্বপ্ন দেখেছি, এবং সেটা মার্সিডিজ বেনজ। আমার কাছে মার্সিডিজ মানে সৌন্দর্য, সৌকর্য আর শৈলীর অপূর্ব মিশেল,” বলছেন কোয়েল। “আর যেহেতু সাদা আমার সবচেয়ে প্রিয় রং, আমি একটা সাদা সি-ক্লাস মার্সিডিজ বেনজ-এ করে ঘুরে বেড়াই। সত্যি বলব? দারুণ লাগে,” বলছেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, কোয়েলের মার্সিডিজ নানা রকম সফ্ট টয় দিয়ে ঠাসা। কিন্তু তিনি কি মার্সিডিজটা নিজে চালান? “আমি চালিয়েছি দু’একবার কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই আমায় গাড়ির পিছনেই দেখতে পাবেন। লাইট ক্ল্যাসিকাল মিউজিক শুনতে শুনতে শু্যটিংয়ে যাচ্ছি,” মার্সিডিজে বসে বললেন রঞ্জিত মল্লিকের কন্যা।
কোয়েলের সি-ক্লাস মার্সিডিজ বেনজ-এর মূল্য: ৩০ লাখ টাকা।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত
স্টাইল আর কতটা টেকসই এই দু’টোর যোগফল মিলিয়ে গাড়ি বাছি। তা ছাড়া
গাড়ির এয়ার কন্ডিশানিং সিস্টেমটা কেমন, সেটাও আমার কাছে খুব ইম্পর্ট্যান্ট।
এই কিছু দিন আগে পর্যন্ত একটা টয়োটা ইনোভা চড়তেন। কিন্তু তাঁর পরিবেশিত ছবি ‘ইচ্ছে’র দুর্দান্ত সাফল্য সেলিব্রেট করতে একটা নতুন গাড়ি
কিনে ফেলেছেন। এখন তাঁর বাহন একটা টয়োটা ফরচুনার। “আমি বরাবরই গাড়ি ভালবাসি। আর এই নতুন গাড়িটায় আমি সত্যিই প্রচুর খরচা করেছি,”
বলছেন ঋতুপর্ণা। আর গাড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক? সে যে কত গভীর! সাক্ষাৎকার দেওয়া থেকে শুরু করে নতুন ছবির চিত্রনাট্য শোনাসবটাই
ঋতুপর্ণা সারেন নিজের গাড়িতে বসে। “গাড়ি হল আমার সেকেন্ড হোম। লং ড্রাইভে যেতে হলে আমি সিনেমাও দেখি
গাড়িতে বসে। আমার গাড়ি আমারই একটা এক্সটেনশন,” বলছেন নায়িকা।
ঋতুপর্ণার নতুন গাড়ি টয়োটা ফরচুনার-এর মূল্য: ২৫ লাখ টাকা।
যিশু সেনগুপ্ত
আমার সব সময়ই রাফ অ্যান্ড টাফ গাড়িই পছন্দ। আর প্যাজেরো হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম সেরা শক্তপোক্ত গাড়ি।
একেবারে মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা যিশু সেনগুপ্তর জীবন এখন অন্য স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। একটা সময়ে সাধারণ এস্টিম চড়তেন। তার পর কিনেছিলেন একটা হন্ডা সিভিক। এখন তিনি শুধু অভিনেতা নন, প্রযোজকও। তাঁর সাফল্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রমাণ তাঁর লাল-সাদা মিৎসুবিশি প্যাজেরো। “এটুকুই বলতে পারি যে প্রথম দর্শনেই প্রেম। ঈশ্বরের দয়ায় টাকাও জোগাড় হয়ে গেল,” বলছিলেন যিশু। স্ত্রী নীলাঞ্জনাকে ওঁর জন্মদিনে হন্ডা সিটি-ও উপহার দিয়েছেন তিনি। এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন যিশু। “বাইকের খুব শখ। কাওয়াসাকি নিঞ্জা তো কিনেই ফেলেছি। সামনের মার্চ মাস নাগাদ দেশে হার্লে ডেভিডসন এলে সেটাও কিনব,” জানাচ্ছেন যিশু।
যিশুর মিৎসুবিশি প্যাজেরোর মূল্য: ২৪ লাখ টাকা। হন্ডা সিটির মূল্য: ৮ লাখ টাকা। কাওয়াসাকি নিঞ্জার মূল্য: ৩ লাখ টাকা।
অরিজিৎ দত্ত
অসাধারণ ইঞ্জিন পাওয়ার, ফাটাফাঠি স্পিড আর অসামান্য ইন্টিরিয়র। এই হল আমার গাড়ি।
প্রিয়া সিনেমা হলের মালিক অরিজিৎ দত্ত ওরফে টালিগঞ্জের ‘দাদুল দা’র গাড়ির শখ বহু দিনের। প্রিয়ার সামনে যে-কোনও দিন অরিজিতের দু’টো ফোর্ড এন্ডেভরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। “সব সময়েই এসইউভি-র ফ্যান। এমনিতেই হাইওয়ে থাকলেও আমি কিন্তু এসইউভি নিয়ে গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাওয়াই পছন্দ করি,” জানাচ্ছেন অরিজিৎ। গাড়িপুজো-টুজোয় বিশ্বাস করেন না। তা আজ পর্যন্ত এসইউভি-তে সবচেয়ে বেশি স্পিড কত তুলেছেন? “১৮০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় চালিয়েছি। বোলপুর থেকে প্রিয়া সিনেমা দেড় ঘণ্টায় পৌঁছেছিলাম,” চোখে সানগ্লাস লাগাতে লাগাতে জানালেন টালিগঞ্জের ‘দাদুল-দা’।
অরিজিতের ফোর্ড এন্ডেভরের মূল্য: ২০ লাখ টাকা।
রাজ চক্রবর্তী
আমার গাড়িতে স্পিডটাই হল সবচেয়ে বড় কথা। গাড়ি কেনার সময় শুধু ওই কথাটাই মাথায় রাখি।
টালিগঞ্জের হিট পরিচালক একটা হন্ডা সিটি, মারুতি ইকো আর টাটা উইঙ্গারের মালিক। হালিশহরের রাজ এখন ভাবছেন পরের বছর একটা বিএমডব্লিউ কেনার কথা। “টাটা উইঙ্গার আর মারুতি ইকোটা আমার প্রোডাকশন টিমের যাতায়াতের সুবিধের জন্য। ঠিক করেছি পরের বছরের মধ্যে একটা বিএমডব্লিউ এক্স-১ কিনবই,” জানাচ্ছেন রাজ। সত্যি বলতে লক্ষ্মীমন্ত টালিগঞ্জের অন্যতম মুখ হলেন রাজ। অনেকেই জানেন না, কলকাতার সবচেয়ে বিলাসবহুল কমপ্লেক্স, ‘আরবানো’তে রাজ দেড় কোটি টাকা দিয়ে একটা ফ্ল্যাটও বুক করে ফেলেছেন। “হ্যাঁ, ফ্ল্যাট আমি বুক করে ফেলেছি। আর আমি একটা বিএমডব্লিউ-ও কিনতে চাই। এই গাড়ি-বাড়ির মালিক হওয়াটা আমায় মোটিভেট করে,” বলছেন রাজ।
রাজের স্বপ্নের গাড়ি বিএমডব্লিউ এক্স-১-এর মূল্য: ৩১ লাখ টাকা।
অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী
দু’টো জিনিস দেখি। গাড়ির ভেতরে কতটা জায়গা আছে আর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স। এ শহরে যে পরিমাণে গাড্ডা আর বাম্প!
এই কিছু দিন আগে পর্যন্ত একটা টয়োটা ইনোভায় চড়ে ঘুরে বেড়াতেন। এখন ঠিক করেছেন গাড়ি পাল্টাবেন। বিএমডব্লিউ এক্স-১, ভোক্সভাগেন জেট্টা আর স্কোডা সুপার্ব-এর মধ্যে কোনটা কিনবেন, ঠিক করে উঠতে পারছেন না। তবে তিনটে গাড়ির মধ্যে বিএমডব্লিউ-র দিকেই পাল্লা ভারী। “কোন কোম্পানির গাড়ি চড়ছি, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাই না। আরামটাই সবচেয়ে বড় কথা,” বলছেন অনিরুদ্ধ। সে জন্যই গাড়ির মালিক হয়েও কোনও দিনই ড্রাইভিং শেখেননি ‘অপরাজিতা তুমি’র পরিচালক।
অনিরুদ্ধর পছন্দের বিএমডব্লিউ এক্স-১-এর মূল্য: ৩১ লাখ টাকা।
ভোক্সভাগেন জেট্টার মূল্য: ১৯ লাখ টাকা। স্কোডা সুপার্ব-এর মূল্য: ২৪ লাখ টাকা।
রাজীব আর শ্রাবন্তী
আমার গাড়ি এমন হবে যার ভেতর প্রচুর জায়গা থাকবে। যেটায় একসঙ্গে সাত-আট জন চড়তে পারে।
এক কথায় ফ্যামিলি কার। ব্যাস! আর কিছুই দেখি না আমি।
টালিগঞ্জে সাংঘাতিক বিলাসবহুল গাড়ির ভিড়ে এই পরিচালক-অভিনেত্রী দম্পতি সম্পূর্ণ আলাদা। বর রাজীব চালান মারুতি সুইফ্ট আর বউ
শ্রাবন্তী আই-১০। অবশ্য তাঁরাও খুব শিগ্গিরিই পাল্টাতে চলেছেন তাঁদের চার চাকাগুলো। “শ্রাবন্তী ডিসেম্বরের মধ্যে ইনোভা কিনছে,
আর আমি কিনছি হন্ডা সিটি,” বলছেন টালিগঞ্জের ‘গার্ল নেক্সট ডোর’ নায়িকার বর রাজীব। কিন্তু এই মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউর ভিড়ে
তাঁরা এমন আমজনতার গড়িতেই খুশি কেন? “আমি বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, সব ক’টাই চড়ে দেখেছি। সেগুলোতে কিন্তু ভেতরে
তেমন জায়গা নেই,” বলছেন শ্রাবন্তী। “আমার সে রকম গাড়িই পছন্দ, যে গাড়িতে মা, বাবা, সবাইকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়।”

শ্রাবন্তীর পছন্দের ইনোভার মূল্য: ১০ লাখ টাকা।
রাজীবের পছন্দের হন্ডা সিটির মূল্য: ৮ লাখ টাকা
অশোক ধানুকা
স্টাইল আর লুক্সএ দু’টো আমার কাছে গাড়ি পছন্দ করার সবথেকে বড় মাপকাঠি। আর যবে থেকে রবি শাস্ত্রীকে অডি ড্রাইভ করতে দেখেছি,
তবে থেকেই জেদ চেপে গিয়েছিল যে, একটা অডি আমার চাই-ই। সুতরাং আমার অডি কেনার পেছনে সেটাও একটা কারণ।
টালিগঞ্জের আর এক প্রথম শ্রেণির প্রযোজক অশোক ধানুকার বহু দিন থেকেই গাড়ির শখ। তাঁকে দেখলেই বোঝা যায় টালিগঞ্জের লক্ষ্মী কতটা গাড়ি-নির্ভর। টালিগঞ্জে বহু দিন আছেন, এবং গাড়ি চড়ার প্রায় প্রত্যেকটা ধাপেই পা রেখেছেন। প্রথমে চড়তেন একটা স্কুটার। সেখান থেকে হল মারুতি ৮০০। তার পর জেন। তার পর এস্টিম। সেখান থেকে ইনোভা। আর এখন অশোক ধানুকা একটা অডি-র মালিক। “অডি দুর্দান্ত গাড়ি, কোনও সন্দেহ নেই। শুধু কলকাতার রাস্তায় পার্কিং-এর একটু অসুবিধে হয়,” বলছেন টালিগঞ্জের ‘অশোকজি’। শুধু তাই নয়, অশোক ধানুকার গাড়ির নম্বর কিন্তু সংখ্যাতত্ত্ব মানে নিউমারোলজি অনুসারে ঠিক করা। “আমার সব গাড়ির নম্বরের যোগফল এক হতেই হবে। আর কালীঘাটে পুজো না দিয়ে আমি নতুন গাড়িতে উঠিই না,” জানাচ্ছেন অশোকজি।
অশোক ধানুকার অডি এ-৪-এর মূল্য: ৩৪ লাখ টাকা।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
প্রচুর জায়গা, চড়ে আরাম, হাই স্পিডেও নিরাপদ। এই হল আমার গাড়ি।
আজকে পর্যন্ত স্রেফ দু’টো ছবি। তার মধ্যে ‘ইচ্ছে’ এ বছরের সুপারহিট আর ‘হ্যালো মেমসাহেব’-এর বক্স অফিসও খারাপ নয়। তার মধ্যেই শিবপ্রসাদ কিন্তু বড় গাড়ির মালিক। তিনি এখন চালান মহীন্দ্রা জাইলোর সবচেয়ে দামি মডেলটি। এবং এটা তাঁর দ্বিতীয় গাড়ি। “এর আগে আমার একটা টয়োটা কোয়ালিস ছিল। সেটা একদিন হঠাৎ গড়িয়াহাট অঞ্চল থেকে চুরি হয়ে যায়। তার পর এই জাইলোটা কিনি,” জানাচ্ছেন শিবু। এবং শিবু কিন্তু এই গাড়ি শুধু কলকাতায় চালান, তা নয়। “আমি মুম্বই, হায়দরাবাদ, মধ্যপ্রদেশএ সব জায়গায় কলকাতা থেকে গাড়ি চালিয়ে গেছি। আমার হাইওয়েতে চালাতে দারুণ লাগে আর আজকাল তো রাস্তা এত ভাল হয়ে গেছে যে অ্যাক্সিডেন্টের চিন্তা কম। আমি তো অনায়াসে কলকাতা থেকে তিন দিনে মুম্বই পৌঁছে যাই গাড়ি চালিয়ে,” জানাচ্ছেন টালিগঞ্জের নতুন ‘ওয়ান্ডার’ পরিচালক।
শিবপ্রসাদের নতুন মহীন্দ্রা জাইলোর মূল্য: ১২ লাখ টাকা।
মহেন্দ্র সোনি ও শ্রীকান্ত মোহতা
• গাড়িটা ড্রাইভ করে কতটা ভাল লাগছে,
সেটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গাড়ি চালানোটা আমার প্যাশন। ইঞ্জিন ভাল হওয়াটা
এ ক্ষেত্রে খুব দরকারি আর গাড়ির পেছনে
অনেকটা স্পেস থাকতে হবে, যাতে যারা পেছনে
বসে আছে, তাদের অসুবিধে না হয়।
• আমার গাড়িতে হাইটটা ঠিকঠাক
হতে হবে। তেল ঠিকঠাক খাবে।
আসলে প্রোডাকশনের লোক তো, খরচের হিসেবটা তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! আর স্টিরিওটা একদম সেরা হতে হবে।
টালিগঞ্জে দামি গাড়ি কেনার হিড়িক কিন্তু এঁদের দেখাদেখি। বলা যায় ইন্ডাস্ট্রিকে ‘মিন মেশিন’-এ চড়ানোর পথ-প্রদর্শক এঁরাই। টালিগঞ্জের গাড়ি-বাজার
প্রথম গরম করেন শ্রীকান্ত একটা ঝকঝকে অডি এ-৪ কিনে। ক’দিন আগে শ্রীকান্তের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মহেন্দ্র সোনিও। আজকাল তিনি শহরের রাস্তায়
সাঁইসাঁই করে ঘোরেন একটা বিএমডব্লিুউ এক্স-ওয়ান-এ চড়ে। “যখন ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম, তখন মারুতি এস্টিম চালাতাম আমরা। দেখতাম শিল্পীরা বাস,
ট্রাম কি ট্যাক্সি করে আসেন। তখনই আমাদের মনে হয়েছিল টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে উন্নতির বিরাট জায়গা আছে। আজকে ১৫ বছর পর সেই পরিবর্তনটা
দেখা যাচ্ছে,” বলছেন মহেন্দ্র সোনি। সত্যি বলতে, দুই সুপারস্টার জিৎ আর দেবকেও প্রথম গাড়ি এঁরাই দিয়েছিলেন। “জিৎ যখন এসেছিল ওর গাড়ি
ছিল না। ওকে আমরা আমাদের জেনটা দিয়ে দিয়েছিলাম। দেবকেও আমরা আমাদের গাড়িটা দিয়ে দিয়েছিলাম,” জানাচ্ছেন এই প্রযোজক জুটি।
শুধু তা-ই নয়, নানা রকম ‘ফাস্ট’ সুরের গানের সঙ্গে মহেন্দ্র সোনির গাড়িতে ওঁর জিমের প্লে লিস্টের গানও থাকে। “জিম-এর প্লে লিস্টটা
আমার খুব ফেভারিট। ওটা না থাকলে গাড়িটা কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগে,” জানাচ্ছেন মহেন্দ্র সোনি।

শ্রীকান্তের অডি এ-৪-এর মূল্য: ৩৪ লাখ টাকা।
মহেন্দ্র সোনির বিএমডব্লিউ এক্স ১-এর মূল্য: ৩১ লাখ টাকা।

ছবি: কৌশিক সরকার, মোহন প্রভু, অরিত্র মুখোপাধ্যায়



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.