মনোরঞ্জন ১...
নতুনদা’র সংসার
দাদা: যা ছিলেন
রাউন্ডের নাম আর ফর্ম্যাট
‘দাদাগিরি’ স্রেফ একটা রিয়্যালিটি শো ছিল না। ছিল বাংলা টেলিভিশনে কেবিসির জবাব। তার ওপর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অ্যাঙ্কর হিসেবে উপস্থিতি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে রিটায়ার করে নতুন অবতারে দুর্দান্ত চমক। সঙ্গে এমন একটা কুইজ শো, যার আর কোনও জুড়ি নেই। কী ফর্ম্যাটে, কী কনটেন্ট-এ।
রাউন্ডের নামেই নতুনত্ব। চড়া ক্রিকেটীয় গন্ধ। ‘সিলেকশন’, ‘টস’, ‘পাওয়ার প্লে’, ‘কভার ড্রাইভ’, ‘গুগলি’, ‘স্লগ ওভার’, ‘বাপি বাড়ি যা’। ‘টস’ রাউন্ডে ছ’টা ক্লু থাকত। একবার উত্তর দিয়ে দিলে আর সেটা পাল্টানো যেত না। ‘পাওয়ার প্লে’-তে একজনই উত্তর দিতে পারত। ভুল হলে অন্য প্রতিযোগীরা তার উত্তর দিতে পারত না। ‘কভার-ড্রাইভ’ ছিল অডিও-ভিস্যুয়াল রাউন্ড। ‘গুগলি’ ছিল ধাঁধার রাউন্ড। ‘স্লগ ওভার’ বার রাউন্ড। এখানেই শেষ এলিমিনেশন হত। শেষ রাউন্ডের নাম ছিল ‘বাপি বাড়ি যা’। ছ’টা বিষয়ের যে কোনও একটা পছন্দের বিষয়ের ওপর শেষ দুই প্রতিযোগীকে প্রশ্ন করা হত। যাঁর নম্বর বেশি তিনি প্রথম পছন্দের সুযোগ পেতেন। অন্য জনকে বাকিগুলোর থেকে বাছতে হত। পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই, সারা দেশেই বাঙালিরা গত দু’বারের ‘দাদাগিরি’র অনেক এপিসোডই পুঙ্খানুপুঙ্খ মনে রেখেছেন।

অ্যাঙ্কর
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রধান ইউএসপি ছিল অ্যাঙ্কর হিসেবে নতুনত্ব। ক্রিকেটার সৌরভ, ক্যাপ্টেন সৌরভ একেবারে ঢুকে পড়লেন বাঙালির ড্রইংরুমে। পরিশীলিত ভঙ্গি। তবে প্রথম প্রথম নাটকীয়তার কমতি ছিল। অ্যাঙ্কর হিসেবে প্রতিযোগীদের সাহায্য করতেন, কিন্তু একটা দূরত্ব রেখে।

অ্যাঙ্করের পোশাক
সৌরভের পোশাকে তেমন বৈচিত্র ছিল না। স্যুট আর ব্লেজার, অথবা শার্ট-ট্রাউজার-জ্যাকেটই পরতেন প্রধানত।

প্রতিযোগী
কলকাতা এবং জেলা মিলিয়ে মিশিয়ে। এত দিনের মাঠে দেখা ‘দাদা’-র সামনে বসার, তাঁকে কাছ থেকে দেখার একটা বিরাট আকর্ষণ সবার মধ্যেই ছিল। এক ধরনের অ্যাচিভমেন্ট-এর বোধ থাকত ‘দাদাগিরি’তে যেতে পারলে। কেন না সৌরভের আন্তর্জাতিক খ্যাতি আর একেবারে নিজস্ব অননুকরণীয় স্টাইল এমন একটা ব্র্যান্ড তৈরি করত যে শুধু তাঁকে কাছ থেকে দেখতেই ছুটে আসতেন প্রতিযোগীরা। তা ছাড়া থাকত সেলিব্রিটি এপিসোড। ‘দাদাগিরি’-র দু’বারের সেলিব্রিটি এপিসোডেই মিঠুন চক্রবর্তী এসেছিলেন।

আকর্ষণ মিটার
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অ্যাঙ্কারিংয়ে ‘দাদাগিরি আনলিমিটেড’ ছিল জি-বাংলার সবচেয়ে বেশি টিআরপি-র রিয়্যালিটি শো। সে সময়ে ওই একই চ্যানেলে মিঠুনের ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর সঙ্গে জোর টিআরপি-র লড়াই হত ‘দাদাগিরি’র। কখনও এই দাদা এগিয়ে, কখনও ওই দাদা।
অ্যাঙ্কর হিসেবে এবং শো-য়ের নাম, ফর্ম্যাট আর মেজাজ অনুযায়ী সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়া তখন আর কাউকে ভাবাই যায়নি। বাঙালি ড্রইংরুমের আলোচনায় সৌরভের অ্যাঙ্করিং-য়ের প্রসঙ্গ সমানে সমানে পাল্লা দিত সে সময়ে জমে ওঠা রাজনীতির লাল-সবুজের লড়াইয়ের সঙ্গে।
দাদা: যা হইয়াছেন
রাউন্ডের নাম আর ফর্ম্যাট
ক্রিকেট-ক্রিকেট গন্ধটা অনেকটা কমাতে হয়েছে। তবে সিনেমা-সিনেমা গন্ধ পাওয়া যাবে, এমন নয়। ‘সিলেকশন’ আর ‘টস’ একই থাকছে। কিন্তু ‘পাওয়ার প্লে’ পাল্টে হচ্ছে ‘প্যাক-আপ না পাঙ্গা’। ‘কভার ড্রাইভ’-এর নাম হচ্ছে ‘চতুরঙ্গ’। গুগলির নাম একই থাকছে। ‘স্লগ ওভার’ পাল্টে হচ্ছে ‘কুইক অর কোয়্যাক’। আর ‘বাপি বাড়ি যা’সৌরভ গঙ্গোপাধায়ের ক্যাচলাইন হয়ে যাচ্ছে ‘চেকমেট’। নিয়মেও কিছু কিছু বদল হচ্ছে। ‘টস’ রাউন্ডে ছ’টার জায়গায় সাতটা ক্লু থাকবে, এবং মধ্যিখানে যদি মনে হয়, উত্তরও পাল্টানো যাবে। ‘প্যাক আপ না পাঙ্গা’য় একজনের উত্তর অন্য কোনও প্রতিযোগী চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। ‘চতুরঙ্গ’র অডিও-ভিস্যুয়াল রাউন্ডেও তাই। ‘গুগলি’তে ধাঁধাই থাকবে, কিন্তু শোনা যাচ্ছে ধাঁধাগুলোতে আগের দু’বারের থেকে একটু বেশি মোচড় আসবে। ‘কুইক অর কোয়্যাক’ এ বারও বার রাউন্ড। আর ‘চেকমেট’-এ শেষ দু’জন প্রতিযোগীকে ছ’টা বিষয়ের সব ক’টার ওপরই প্রশ্ন করা হবে। যাঁর নম্বর বেশি, তিনি যে বিষয় পছন্দ করবেন, অন্যজনকে তার পরের বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। এ ভাবে দু’জন প্রতিযোগী প্রত্যেকে তিনটে করে বিষয়ের ওপর প্রশ্নের উত্তর দেবেন। একজন অন্য জনকে চ্যালেঞ্জও করতে পারেন।

অ্যাঙ্কর
মিঠুন চক্রবর্তী অনেক বেশি নাটকীয় প্রথম থেকেই। প্রতিযোগীদের সঙ্গে মিশছেন পাশের বাড়ির ছেলের মতো। আর অ্যাঙ্কর হিসেবে তিনি কখনও দাদা, কখনও বন্ধু, কখনও অভিভাবক। অনেকটাই ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর এম জি’র আর এক অবতার।

অ্যাঙ্করের পোশাক
মিঠুনের পোশাকে বৈচিত্র বেশি। ধুতি-পাঞ্জাবি, গলাবন্ধের সঙ্গে ট্রাউজার, স্যুট আর ব্লেজারনানা এপিসোডে নানা পোশাক। শোনা যাচ্ছে প্রথম এপিসোডে তিনি ধুতি-পাঞ্জাবিতে নির্ভেজাল বাঙালিবাবু।

প্রতিযোগী
এ বারও কলকাতা এবং জেলা মিলিয়ে মিশিয়ে। এখনও যে ক’টি এপিসোড শু্যট হয়েছে, তার মধ্যে একটি সেলিব্রিটি এপিসোড। বাকি গুলো জেলা ভিত্তিক। মিঠুন চক্রবর্তীর ক্ষেত্রে প্রতিযোগী-ফ্যানেদের আকর্ষণের প্রধান জায়গা এখনও সেই এক অবাঙালি মুম্বইতে লড়াই করে নিজের জায়গা করে নেওয়া এক বাঙালি। মিঠুনও সেই উষ্ণতা নিয়েই প্রতিযোগীদের সঙ্গে মিশছেন। ধুতি পাঞ্জাবিতে তাঁর নিখাদ বাঙালিয়ানা নাকি সেলিব্রিটি প্রতিযোগীদের বোল্ড-আউট করে দিয়েছে। আগামী দিনের সেলিব্রিটি এপিসোডে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

আকর্ষণ মিটার
হঠাৎ অ্যাঙ্কর পাল্টানো নিয়ে ‘দাদাগিরি’র ইউনিটের অনেকের মধ্যেই একটু দোনামনা ছিল। দর্শক কী ভাবে নেবেন অভ্যাস পাল্টানোর ব্যাপারটা। কিন্তু মিঠুন চক্রবর্তী নাকি সে সব উড়িয়ে দিয়েছেন প্রথম কয়েক দিনের শু্যটিংয়েই। একবারে ‘বাপি বাড়ি যা’ স্টাইলেই। শো-য়ের পরিচালক শুভঙ্কর চট্টোপাধ্যায় সৌরভ এবং মিঠুন, দু’জনকেই পরিচালনা করেছেন। তাঁর মতে, “গত দু’বারের থেকে কোনও অংশে কম নয়, বরং অনেক বেশিই জাঁকজমক নিয়ে হচ্ছে এ বারের শো।’


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.