যে কোনও কারণেই হোক, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে আলোচিত দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে টুর্নামেন্টটা ওদের পক্ষে খুব ভাল গেল না। কোনও মতে কোয়ালিফাইং পর্ব পেরিয়ে মূলপর্বে উঠেছিল। সেখানেও শেষ দুটো ম্যাচ বাদ দিলে খুব ভাল খেলতে পারেনি। শেষ দুটো ম্যাচে ওদের দেখে পুরো অন্য একটা দল মনে হচ্ছিল। সবার শরীরী ভাষা অনেক বেশি ইতিবাচক ছিল। গম্ভীর ভাল ছন্দে ছিল। নতুন বল হাতে কালিসকে বেশি স্বচ্ছন্দ দেখাল। ওর ব্যাটিংটাও বেশ ভাল হচ্ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলার সময় ব্যাটে-বলে কালিসের ভূমিকা যেমন অনেক বেশি, সে রকম ভাবেই কেকেআরের হয়ে খেলছিল ও। ভাবতে অবাক লাগছে, আইপিএল ফোর-এ কেন কালিসকে বোলার হিসেবে বেশি ব্যবহার করা হল না। কারণ ও সত্যিকারের উইকেট-টেকার।
বড় ক্রিকেটারদের উপর ফ্র্যাঞ্চাইজিরা চাপ দেয় ভাল খেলার জন্য। যেহেতু ওদের জন্য অনেক বেশি টাকা খরচ করা হয়। যার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দিয়ে ওদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে রাখাটা খুব জরুরি। কেকেআরের বোলিং আক্রমণ স্পিন-নির্ভর। গত বছর ওদের বেশির ভাগ সাফল্য এসেছিল ইডেনের টার্নিং ট্র্যাকে। আমার মনে হয় ভবিষ্যত সাফল্যের জন্য এই ব্যাপারটার দিকে ওদের নজর দিতে হবে। |
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যে দলগুলো সেমিফাইনালে উঠল, তারা টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী চারটে দল নয়। কিন্তু ওদের সাফল্য নির্ভর করে আছে দলগত চেষ্টা এবং চাপের মুখে ভাল খেলার উপর। এই ব্যাপারটা খেলাধুলোয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও ক্রীড়াবিদের জীবনে মুহূর্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ। যারা খুব বেশি দিন একটা খেলার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, তারা বার বার চাপের মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। তারা ঠিক সময় পারফর্ম করতে পারে। যে কোনও চ্যাম্পিয়ন বা চ্যাম্পিয়ন দলের কেরিয়ার দেখলে বুঝতে পারবেন, এক-একটা সময়ে তারা কিছু জিততে পারেনি। বা প্রত্যাশা মতো পারফর্ম করতে পারেনি। কিন্তু যখনই লোকে ভাবতে শুরু করেছে যে, ওদের সময় শেষ, ঠিক তখনই ওরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমার মনে হয় যে কোনও খেলায় বেশি দিন টিকে থাকার এটাই মন্ত্র।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এর দুটো আদর্শ উদাহরণ হল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং নিউ সাউথ ওয়েলস। অস্ট্রেলিয়ার এই রাজ্য থেকে বিশ্বমানের কিছু ক্রিকেটার উঠে এসেছে। গ্রুপের দুটো মরণ-বাঁচন ম্যাচে এই দলটা মাথা ঠান্ডা রেখে খেলে গিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম বারের চ্যাম্পিয়ন তো ওরাই। উল্টো দিকে বেঙ্গালুরু দু’বারের আইপিএল ফাইনালিস্ট। এই নিয়ে দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মূলপর্বে খেলল। যখন দরকার, দলের বড় ক্রিকেটাররা ঠিক তখন ভাল খেলে দিয়েছে। সমারসেটের বিরুদ্ধে গেইল, রেডব্যাকসের বিরুদ্ধে দিলশান আর কোহলি। অধিনায়ক ভেত্তোরির কথা ভুলে গেলে চলবে না। চুপচাপ আর ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে এসেছে ভেত্তোরি। |