|
|
|
|
জল দূষণ রোধে ব্যবস্থা ডিপিএলে
|
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
অবশেষে দূষণ রোধে স্থায়ী বন্দোবস্ত করল দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল)। সম্প্রতি সংস্থার কোকওভেন প্ল্যান্টের দূষণ রোধে চালু হয়েছে ‘বায়োলজিক্যাল অক্সিডেশন প্ল্যান্ট’। এর মাধ্যমে মূলত কোকওভেন প্ল্যান্ট থেকে নির্গত দূষিত জল পরিশুদ্ধ করা হবে। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মৃগাঙ্ক মজুমদার বলেন, “এই মুহূর্তে ডিপিএল আর্থিক টানাটানির মধ্যে চলছে। তবু গত দু’বছরে দূষণ রোধে একাধিক পদক্ষেপ হয়েছে। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে কোকওভেন প্ল্যান্টে নতুন এই যন্ত্রটি লাগানো হয়েছে। আশা করি, এর পরে দূষণ নিয়ে আর অভিযোগ উঠবে না।”
ডিপিএলের বিরুদ্ধে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মূলত ৬০-এর দশকে গড়া ডিপিএলের ইউনিটগুলিতে দূষণ ছড়ানোর হার বেশি। ব্যতিক্রম নয় কোকওভেন প্ল্যান্টও, যেখানে হার্ড কোক ও কোল গ্যাস তৈরি হয়। এখান থেকে বিষাক্ত রাসায়নিক যুক্ত জল গিয়ে পড়ে তামলা নালায়। পরে তা মেশে দামোদরে। এই নদের জল শোধন করে শহরবাসীর পানীয় হিসেবে সরবরাহ করা হয়। শুধু ডিপিএল নয়, শিল্পাঞ্চলের বহু কারখানা থেকেই দামোদরে এসে পড়ে বর্জ্য যুক্ত জল। ফলে নদের জলে দূষণের মাত্রা এতটাই বেশি থাকে যে শোধনের পরেও সেই জলে রাসায়নিক থেকে যায়, সমীক্ষা করে এমনই জানিয়েছিল খড়গপুর আইআইটি-র একটি সমীক্ষক দল।
২০০৯ সালে জুনের শুরুতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানায়, কোকওভেন প্ল্যান্ট থেকে যে জল নিগর্ত হয় তাতে বিষাক্ত রাসায়নিক থাকছে। অবিলম্বে তা রোধ না করলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ডিপিএলের ওই বিভাগটি বন্ধ করে দিতে হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রনে কার্যকরী পদক্ষেপ না করার অভিযোগে শেষ পর্যন্ত জুলাই মাসের মাঝামাঝি ডিপিএলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। আদালত সমন পাঠায় সংস্থার পাঁচ অফিসারের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে প্ল্যান্ট চালানোর ছাড়পত্র জোগাড় করে সংস্থা।
তার পরে গত দু’বছরে দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি ব্যবস্থা নিয়েছেন ডিপিএল কর্তৃপক্ষ। সংস্থার দাবি, আর্থিক কারণে স্থায়ী কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব না হলেও ধারাবাহিক চেষ্টা চালানো হয়েছে। সপ্তম ইউনিট চালু হয়েও বিকল হয়ে যাওয়ায় বহু টাকা লোকসান হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফেও ডিপিএলের বিরুদ্ধে মামলা তুলে নেওয়া হয়। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মৃগাঙ্কবাবু জানান, কোকওভেন প্ল্যান্টের দূষণ রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ার কাজ আর্থিক কারণে পিছিয়েছে। তবে দূষণ রোধে ধারাবাহিক প্রয়াসে সন্তোষ প্রকাশ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
ডিপিএল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কোকওভেন প্ল্যান্টে ‘বায়োলজিক্যাল অক্সিডেশন প্ল্যান্ট’ বসেছে। কারখানা থেকে নির্গত দূষিত জল শোধন করবে এই যন্ত্র। মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “এই ব্যবস্থা চালু করতে পেরে আমরা খুশি। অস্থায়ী ব্যবস্থায় মাঝে মধ্যে খামতি থেকে যেত। এ বার থেকে তেমন হওয়ার প্রশ্ন নেই।” |
|
|
|
|
|