খালে বধূর দেহ, জনতা-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধ বাধল খানাকুলের গ্রামে
খাল থেকে এক বধূর দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার তেতে ওঠে খানাকুলের সেকেন্দারপুর গ্রাম। বধূকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে এবং পুলিশ-কুকুর এনে তদন্তের দাবিতে দেহ আটকে রেখে সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসী। পুলিশ দেহ উদ্ধারের চেষ্টা করলে দফায় দফায় জনতার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। অভিযোগ, এক সময়ে পুলিশ লাঠি চালাতে শুরু করে। ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছুড়তে থাকে। ইটের ঘায়ে ৬ পুলিশকর্মী আহত হন। পুলিশের দু’টি গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। একটি গাড়ি উল্টে দেওয়া হয়। শেষে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। গোলমালে জড়িত অভিযোগে পুলিশ ২০ জনকে গ্রেফতার করে।
মৃতার নাম জ্যোৎস্না দে (৩৪)। ওই গ্রামেই তাঁর বাড়ি। শুক্রবার ভোরে গ্রাম সংলগ্ন কানা মুণ্ডেশ্বরী খালে তাঁর দেহটি দেখতে পান গ্রামবাসীরা। আগের রাত থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এর পরেই পুলিশ-কুকুর এনে তদন্তের দাবিতে শুরু হয় দেহ আটকে বিক্ষোভ।
সকাল ১০টাতেও পুলিশ-কুকুর না আসায় সেকেন্দারপুর রাস্তা অবরোধ করা হয়। দুপুরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। সেকেন্দারপুর ছাড়াও, তাঁতিশাল, রামমোহন-সহ আশপাশের গ্রাম থেকে কয়েকশো মানুষ চলে আসেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দেহ উদ্ধারের জন্য পুলিশ যথেচ্ছ লাঠি চালায়। জ্যোৎস্নাদেবীর দেহ আঁকড়ে বসে ছিলেন তাঁর স্বামী হেমন্ত দে। পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁর মাথায় চোট লাগে। আরও ২৯ জন জখম হন। গ্রামবাসীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম ৬ পুলিশকর্মীর মধ্যে ২ জনকে খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকাল ৪টে নাগাদ এসডিপিও (আরামবাগ) আকাশ মাগারিয়ায় নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী সেকেন্দারপুরে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। তখন ফের এক দফা লাঠি চালানো হয় বলে অভিযোগ।
লাঠি চালানোর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশেরও অনুমান, জ্যোৎস্নাদেবীকে খুন করা হয়েছে। এসডিপিও বলেন, “কারও উপরে লাঠি চালানো হয়নি। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। বর্ধমান থেকে পুলিশ-কুকুর আনার তোড়জোড় হচ্ছিল। কিন্তু জনতা ধৈর্য ধরেনি। পুলিশের উপরে হামলা চালায়।”
এ বিষয়ে এসডিপিও আরও জানান, মৃতদেহে কিছু ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ওই খালে জল কম ছিল। ডুবে মৃত্যুর সম্ভাবনা নেই। সেই কারণেই প্রাথমিক তদন্তের পরে মনে হচ্ছে, বধূকে খুন করা হয়েছে। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সেকেন্দারপুর গ্রামে পুজো উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যান হেমন্তবাবু। রাত পৌনে ১১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে তিনি স্ত্রীকে দেখতে পাননি। এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও স্ত্রী ফিরে না-আসায় খোঁজ শুরু করেন। পুলিশকেও স্ত্রীর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানান।
এ দিন দেহ উদ্ধারের পরে হেমন্তবাবু বলেন, “আমাদের কোনও শত্রু ছিল না। কে কেন খুন করল বুঝতে পারছি না। আমার মনে হচ্ছে, স্ত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। ওঁর কানের দুল দু’টোও ছিড়ে নেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.