টুকরো খবর
পার্বণে প্রাণ হারালেন ১১ জন
সপ্তমীতে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় মোটর বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। অষ্টমীর রাতে মারা যান আরও ৩ জন। এই হিসাব উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের। দুর্ঘটনার পরে মৃতদের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আনা হয়েছিল ময়না তদন্তের জন্য। ময়না তদন্তে ধরা পড়েছে, মৃতরা অধিকাংশই মদ খেয়ে মোটর বাইক চালাচ্ছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশও জানতে পারেন, হেলমেট না-পড়েই সকলে মোটর বাইক চালাচ্ছিলেন অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। তার পরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। এই ব্যাপারে মোটর বাইক চালকদের সচেতন করতে পুজোর পরেই একটি আলোচনা সভার আয়োজন করছে এসজেডিএ। পুলিশ, প্রশাসন, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের জন্য সচেতন করার পরিকল্পনা নেওয়া হবে। রাস্তায় নেমে প্রচার চালানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “দু’দিনের হিসাবেই চমকে উঠেছি। নিজেই রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে দেখেছি, মোটর বাইক চালানোর ক্ষেত্রে চালকদের বেপরোয়া মনোভাব। হেলমেট নেই। দ্রুত গতি। একটু সতর্ক হয়ে সাবধানতা মেনে চললেই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। এই ব্যাপারে চালকদের সচেতন করতেই পুজোর পরে আলোচনা সভা ডাকার পরিকল্পনা হয়েছে। যে করেই হোক, এই প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।” বিহার লাগোয়া পূর্ণিয়া মোড় থেকে অসম লাগোয়া কুমারগ্রাম পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক এমনিতেই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের কাছে ‘মৃত্যু সড়ক’ হিসাবে পরিচিত। দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। তার সঙ্গে জাতীয় সড়ক বেহাল হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। তবে প্রশাসনের কাছে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন, এক শ্রেণির মোটর বাইক চালক। হেলমেট না-পড়েই তাঁরা জাতীয় সড়কে বেপরোয়া ভাবে মোটর বাইক চালান বলে অভিযোগ। পুজোর সময়ে এই প্রবণতার সঙ্গে জুড়েছে মদ খেয়ে মোটর বাইক চালানো। ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা এই ধরনের প্রবণতা বন্ধ করতে আর্থিক জরিমানা করলেও সমস্যা মেটেনি। এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান বলেন, “এ বার পুজোয় শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় এমন বেশ কিছু মোটর বাইক চালককে শনাক্ত করা হয়েছে যাঁরা ন্যূনতন নিরাপত্তা বিধি মানছেন না। ফলে বিষয়টি এ বার ভাবার সময় এসেছে। পুলিশ-প্রশাসন-স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে এসজেডিএ এই কাজে নামবে।”

খুনের পরে গলায় দড়ি নিঃস্ব বৃদ্ধের
অবসাদে ভুগেই স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন বৃদ্ধ আইনজীবী শম্ভুনাথ ঘোষ। সুসাইড নোট খতিয়ে দেখে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ এমনই অনুমান করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুইসাইড নোটে আর্থিক সঙ্কটের কথাও লিখেছেন শম্ভুনাথবাবু। ‘আর্থিক দিক দিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া’, ‘স্ত্রী ও কন্যাকে ভবিষ্যতে রক্ষা করতে পারব না’, জাতীয় তথ্য সুইসাইড নোটে উল্লেখ থাকায় শম্ভুনাথবাবু মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পুলিশের অনুমান। এই বিষয়ে মনোবিদদের সঙ্গেও পুলিশ আলোচনা করেছে। সুইসাইড নোটে আর্থিক আয় ব্যয়ের হিসেব উল্লেখ করা হয়েছে। জলপাইগুড়ি সদরের ডিএসপি হরিপদ শী বলেন, “বিস্তারিত রিপোর্ট পাওয়া গেলে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে পুলিশ সবরকম ভাবেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।” গত মঙ্গলবার আনন্দপাড়ার বাড়ি থেকে সত্তর বছরের বৃদ্ধ শম্ভুনাথবাবু, তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা দেবী এবং মেয়ে মামনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বন্ধ বাড়ির ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকায় পড়শিরা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ গিয়ে বাড়ির তালা ভেঙে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে। বিমা সংস্থার কর্মী শম্ভুনাথবাবু অবসর গ্রহণের পরে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। ইংরেজী বিষয়ের গৃহশিক্ষকতাও করতেন তিনি। পুলিশের মতে, শম্ভুনাথবাবুর চাকরি বা পরবর্তীতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করায় তেমন আর্থিক সঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণ নেই। তবে শম্ভুনাথবাবুর মেয়ে মামনের মানসিক সমস্যা ছিল। বয়সের সঙ্গে তাঁর মানসিক বিকাশ হয়নি। স্ত্রী কৃষ্ণা দেবী মধুমেহ রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতিও তেমন ভাল ছিল না বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও পরিবারগত নানান সমস্যার কথাও শম্ভুনাথবাবু তাঁর সুইসাইড নোটে লিখেছেন। সব মিলিয়ে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন বলে এখনও পর্যন্ত তদন্তে উঠে এসেছে। মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় আনন্দপাড়ার বাড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে, পুলিশ কুকুর এনে তল্লাশি করেও বহিরাগত ব্যাক্তির উপস্থিতির ঘটনা পুলিশ খুঁজে পায়নি। সেই কারণে ঘটনাটিকে খুনের নয় বলেই দাবি করা হয়েছে।

জোড়া খুনে ধৃত অভিযুক্ত
শহরের পাইকারি বাজারের সিটু নেতা এবং এক আত্মীয়ের খুন ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রধাননগর থানার পুলিশ উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া থেকে ওই অভিযুক্তকে ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সঞ্জিৎ যাদব। পাইকারি বাজার এলাকায় তার বাড়ি। এই নিয়ে জুলাই মাসের ওই খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “খুনের ঘটনার পর থেকে আমরা অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিলাম। চোপড়ায় সঞ্জিৎ এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিল বলে খবর মেলে। বিশেষ পুলিশ টিম গিয়ে সঞ্জিতকে সেখান থেকে ধরেছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, গত জুলাই মাসে রাতে পাইকারি বাজার এলাকায় দুষ্কৃতীরা গুলি করে বাজারের সিটু নেতা রাজু যাদব এবং তাঁর আত্মীয় সুরেন্দ্র যাদবকে। ঘটনাস্থলেই সুরেন্দ্রর মৃত্যু হয়। পরেরদিন শহরের একটি নার্সিংহোমে রাজু যাদব মারা যান। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এলাকা দখলের অভিযোগ তুলে শহরে বন্ধ ডাকে সিপিএম। সুরেন্দ্র যাদব বিহারের দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে জড়িত রয়েছে বলে পাল্টা তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়। এই চাপানউতোরের মাঝে ২ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। দার্জিলিঙের স্পেশাল আইজি রমেশবাবুর নিয়মিত তদন্তের তদারকি করতে থাকেন। তাঁরই নির্দেশে একটি বিশেষ পুলিশ টিমও তৈরি করা হয়। এরই মাঝে চোপড়ায় সঞ্জিৎ যাদবের লুকিয়ে থাকার খবর মেলে।

দোকান লুঠ, গ্রেফতার ৬
শিলিগুড়ির এনটিএস মোড়ের সোনার দোকান থেকে লুটপাট করা সোনার একটি অংশ হ্যামিলটনগঞ্জে বিক্রি করা হয়েছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। এনটিএস মোড়ের ওই সোনার দোকানে ডাকাতির অভিযোগে পুলিশ আমিনুল মিয়াঁ ওরফে জুল্লত নামে এক দুষ্কৃতী-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে প্রচুর অস্ত্রও উদ্ধার করেছে। ধৃত কে জেরা করে পুলিশ হ্যামলিটনগঞ্জের দোকানের সন্ধান পায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল জানান, মঙ্গলবার ওই দোকানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু সোনার অলঙ্কার আটক করা হয়েছে। সেগুলি ডাকাতির মাল কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতরা কোথা থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীরা বিহারের নানা এলাকা থেকে ২৫-৩০ হাজার দরে একটি নাইন এমএম, ৩৫-৪০ হাজার দরে একটি কার্বাইন, ৪৫-৫০ হাজার দরে একটি একে-৪৭ রাইফেল এবং ১০০-১৫০ টাকা দরে গুলি কিনত। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের একটি দল বিহারের জমালপুর ও মুঙ্গেরে তদন্তের কাজে যাবেন। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়েছে।

হাসপাতালের পাতেও পুজো
স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ বার শারদোৎসব একটু অন্যরকম ভাবে ধরা দিয়েছে। সপ্তমী থেকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের দু’বেলার খাবার মেনু বদলেছে। ফ্রায়েড রাইস, মুরগির মাংস, মাছের কালিয়া, পায়েস-সহ নানা খাবার দু’বেলা হাজির হয়েছে রোগীদের পাতে। সপ্তমীতে দেওয়া হয়েছে সরু চালের ভাত, মুগ ডাল, ভাজা এবং মাছের কালিয়া। অষ্টমীতে রোগীরা পেয়েছেন খিচুড়ি, পটল ভাজা এবং পায়েস। নবমীতে দেওয়া হয়েছে ফ্রায়েড রাইস, ডিমের ঝোল, ভাজা এবং মিষ্টি। আজ, বৃহস্পতিবার দশমীতে দেওয়া হবে সরু চালের ভাত, মুরগির মাংস, ভাজা, ডাল এবং মিষ্টি। শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্যের সব হাসপাতালেই পুজোর ক’দিন স্পেশাল মেনু হচ্ছে। এ ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যবস্থা হয়েছে।”

বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ
ইটখোলা দুর্গা বাড়ি ২৯ তম পুজোতে নেপালের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে তৈরি করা হয়েছে। একচালার সাবেকি প্রতিমা রয়েছে। নবমীতে দর্শনার্থীদের জন্য খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা হয়েছে। পুজো কমিটির সম্পাদক সুমিত ভট্টাচার্য জানান, মন্ডপের ভিতরে বাংলার বিভিন্ন মনীষীদের ফটো লাগানো হয়েছে। বাইরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জীবনী তুলে ধরা হয়েছে। শহরে পুজোর সময়ে মদ-সহ নানা ধরনের নেশার ট্যাবলেটের ব্যবহার বাড়ছে বলে বুধবার অভিযোগ করেছেন আলিপুরদুয়ারের পুর চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। কিছু দোকানে এই সব বিক্রি করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.