তদন্তের নির্দেশ মমতার
অনিয়মের দায়ে কাঠগড়ায় বুদ্ধের তথ্য দফতর
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জমানায় তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে এ বার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন জমানায় তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার হাতেই।
বুদ্ধবাবুর আমলে রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অধীনে ‘ডিরেক্টরেট অফ আর্কিওলজি অ্যান্ড মিউজিয়াম’-এর জন্য দ্বাদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগ নিয়েই উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন যেমন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে-থাকা দফতরগুলির মধ্যে তথ্য ও সংস্কৃতি রয়েছে, অতীতে তেমনই বুদ্ধবাবু দীর্ঘ দিন ওই দফতর চালাতেন। সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে এই দফতরের কাজকর্ম দেখার জন্য সৌমেন্দ্রনাথ (অঞ্জন) বেরাকে প্রতিমন্ত্রী করে নিয়ে এসেছিলেন বুদ্ধবাবু।
বামফ্রন্ট রাজত্বে ওই দফতরের পরিচালন ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে ‘সিপিএমের দলবাজি ও দুর্নীতি’র নানা অভিযোগ তৎকালীন বিরোধীরা তুলতেন। বুদ্ধবাবুরা অবশ্য সেই সমস্ত অভিযোগকে কোনও গুরুত্বই দিতেন না।
রাজ্যে ‘পরিবর্তনে’র পরে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের কাজকর্ম নিয়ে একটি বিশেষ ‘অডিট রিপোর্ট’ মমতার কাছে এসেছে। সেই রিপোর্টে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের একটা বিভাগেই কোটি কোটি টাকার ‘আর্থিক বেনিয়মে’র অভিযোগ ধরা পড়েছে।
তার প্রেক্ষিতেই বর্তমান সরকার ‘কড়া পদক্ষেপ’ করতে চলেছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অধীন ‘ডিরেক্টরেট অফ আর্কিওলজি অ্যান্ড মিউজিয়াম’ বিভাগে সাড়ে ৬০ লক্ষ টাকা তছরুপ হয়েছে। ওই টাকা সমেত অনুদান হিসাবে পাওয়া মোট ৩ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার কোনও হিসাব নেই। অনুদান হিসাবে পাওয়া ওই টাকা কোথায়, কোন খাতে খরচ হল, তার কোনও বিল, ভাউচার বা উপযুক্ত নথিপত্রই পাওয়া যাচ্ছে না। ওই রিপোর্টে রয়েছে, নগদে ১১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কিন্তু ‘স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা’র কারণে সাধারণ ভাবে সরকারি লেনদেনের ক্ষেত্রে নগদে নয়, ‘অ্যাকাউন্ট পেয়ি’ চেকের মাধ্যমে কাজ হয়ে থাকে। অথচ এ ক্ষেত্রে তা হয়নি।
এমনকী, লেনদেনের নথিপত্র যে ভাবে রাখা উচিত, হয় সে ভাবে তা রাখা হয়নি অথবা অর্থ সংক্রান্ত সরকারি নিয়ম- নীতির তোয়াক্কা না-করেই তা খরচ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভাগীয় তো বটেই, ডিরেক্টরেট বা ‘নোডাল এজেন্সি’র কোনও নিয়ম-নীতি এবং নজরদারির ব্যবস্থা না-থাকায় সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে চরম বিশৃঙ্খলা হয়েছে।
পাশাপাশি, ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন যে ১০০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছে, তা ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দফতর ও ডিরেক্টরেটকে অনেক বেশি ‘সতর্ক’ থাকতে ওই বিশেষ অডিট রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে। রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, চালু যে পরিচালন ব্যবস্থা, তা বজায় থাকলে ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ করা বিপুল অর্থ বরাদ্দ খরচেও সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। রাজ্য সরকারের একটি সূত্রের বক্তব্য, রিপোর্টের সুপারিশকে ‘সতর্ক-বার্তা’ বলেই সরকার মনে করেছে। সুপারিশ খুঁটিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট দফতর এবং প্রশাসনিক স্তরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.