নবমীর সন্ধ্যায় জনজোয়ারে ভেসে গেল ব্যারাকপুর-কল্যাণী শিল্পাঞ্চল। সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়। আর ভিড় সামলাতে হিমসিম পুজো উদ্যোক্তারা ও পুলিশ। মানুষের স্রোত আটকাতে বিভিন্ন রাস্তায় বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে। যান নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও এনসিসি’র স্বেচ্ছাসেবকদের পথে নামানো হয়েছে। প্রতিটি থানার পুলিশ কর্তারা ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই রাতভর এলাকায় টহলদারি শুরু করেছেন। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। টহলদারিও বাড়ানো হয়েছে।’’ |
শিল্পাঞ্চলে কয়েকশো থিমের পুজোয় যেগুলি ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম বা সংস্থার বিচারে সেরা বলে বিবেচিত হয়েছে সেগুলির সামনে লাইন চোখে পড়ার মতো। বেলঘরিয়ার মানসবাগ বা পঞ্চাননতলার বাণী মন্দিরের পুজোয় নবমীর রাতে ভিড় এতটাই মাত্রা ছাড়ায় যে একটা সময় দর্শনীর্থীদের আটকে দিতে বাধ্য হন উদ্যোক্তারা। প্রসঙ্গত, দু’বছর আগে পলতা স্টেশন লাগোয়া নেতাজি সংঘের পুজোয় তাজমহলের থিমে তৈরি মণ্ডপ ভিড়ের চাপে ভেঙে পড়েছিল। বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী জখম হয়েছিলেন। তারপরেই অবশ্য পুলিশ-প্রশাসনের তরফে বড় পুজোগুলিতে মণ্ডপ তৈরির বিষয়ে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর আগে থেকেই থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত অফিসারেরা সংশ্লিষ্ট এলাকার মণ্ডপগুলি ঘুরে দেখেন।’’ এ বছর অধিকাংশ থিমের মণ্ডপেই আগুন নেভানোর প্রাথমিক ব্যবস্থা-সহ অন্যান্য আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদ্যোক্তারা জানান, সেরা হওয়ার ক্ষেত্রে যে নিয়মাবলী আছে তা মানতে গিয়ে এখন সব ব্যবস্থাই রাখতে হচ্ছে।
কল্যাণীতে আইটিআই মোড়ের পুজোয় নবমীর সন্ধ্যা থেকে লম্বা লাইন পড়ে যায়। পুজোর এক কর্মকর্তা অরূপ মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘অনেকেই ভিড় এড়াতে দিনে মণ্ডপ দেখতে আসছেন। ফলে দিনের বেলাও বেশ ভিড় হচ্ছে।’’ নেবুলার পুজোয় প্রতিবারের মতোই প্রতিমাকে সাজ এ বারও নান্দনিক। এখানেও রীতিমতো মেলা। বি ব্লকে নবপত্রিকা সংঘের পুজোয় পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা নিয়ে উদ্যোক্তারা মূর্তি পুজোর পরিবর্তে গাছকেই পুজো করছেন দুর্গা ও অন্য দেবতাদের প্রতীক হিসাবে। কাঁচরাপাড়া, হালিশহর বা নৈহাটিতেও মণ্ডপগুলিতে যেমন ভিড় তেমনি রাস্তাও যানজটে প্রায় অবরুদ্ধ।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে এ বার অবশ্য পাহাড়, উপত্যকা, আদিবাসী জীবন ও হেরিটেজের উপরেই বেশি থিম হয়েছে। ব্যারাকপুর শীতলা মন্দির সমাজের পুজোয় জলজ্যান্ত একটা আদিবাসী গ্রামকেই তুলে আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে যানজট, ভিড়ে জমে গিয়েছে শিল্পাঞ্চলের পুজো। |