অষ্টমীতে ইলিশ, নবমীতে
মুরগি, উৎসব জেলেও

প্রতিমার সামনে ঢাকের তালের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নেচে চলেছেন এক যুবক। ঘিরে ধরে হাত তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন অন্যরা। অন্য বারের মতো এ বারও ওই যুবকের ধুনুচি নাচ ছিল প্রেসিডেন্সি জেলের দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ। তাঁর নাম জাফর সিদ্দিকি ওরফে গুড্ডা। তোলাবাজি, ডাকাতির অভিযোগে এখন সাজা খাটছেন এক সময়ের কলকাতার ‘ত্রাস’ গুড্ডা।
অষ্টমীর সন্ধ্যায় আলিপুরের মহিলা জেলে নাচের অনুশীলনে ব্যস্ত ছিলেন বিচারাধীন দুই বন্দি মিনু দাস, নন্দিতা সাহা। আর, পুজোর আয়োজনের ফাঁকে গানের অনুশীলন করছেন সুজাতা দত্ত, নীলিমা বর্মণ। জেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে শনিবার। মহিলা বন্দিদের অনুষ্ঠানের দায়িত্বে যাবজ্জীবন দণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত অপরাজিতা বসু ওরফে মুনমুন। ১২ বছর ধরে এই জেলের আবাসিক তিনি। জানালেন, “অনুষ্ঠানের বিষয় পুরোটাই রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের ‘অভিসার’-কে নিয়ে এ বার নাচ-গানও হবে।”
পুজোয় মহা আনন্দ আলিপুর জেলের খুদে বন্দি তিতলি, রনিদের। বন্দি মায়েদের সঙ্গে ওরা ২১ জন খুদে থাকে আলিপুর মহিলা জেলে। দিন সাত আগে জেলেই জন্মেছে একটি মেয়ে। ছোট্টরা এই নয়া সঙ্গী পেয়ে মহা খুশি। পুজোয় ওদের বাড়তি পাওনা নতুন জামা-জুতো।
সপ্তমী থেকেই জেলে জেলে খাবারের মেনু বদলে গিয়েছে। এসেছে উৎসবের বৈচিত্র।
সপ্তমীতে খিচুড়ি, পাঁপড়, চাটনি, কাবলি ছোলার ঘুগনি, আলুর দম, মিষ্টি। ১০ বছর বাদে পুজোয় ইলিশ মাছ এলো প্রেসিডেন্সি জেলের ২০৫০ জন বন্দির জন্য। অষ্টমীতে তাঁদের পাতে পড়ল সেই মাছ। নবমীতে বরাদ্দ ছিল মুরগির মাংস।
এ দিন কেবল আলিপুরের মহিলা জেলের ২৬৩ জনের জন্য আনা হয়েছে ৪২ কিলো ছাড়ানো মুরগি। আছে লুচি-তরকারি, আলুর দম, ঘুগনি, কলা-কেক-ডিম-মিষ্টি, ঝিঙে পোস্ত। দশমীর সকালে বন্দিরা হই হই করে খাবেন মুড়ি-বোঁদে। এর মধ্যেই প্রেসিডেন্সি জেলে কড়া পাহারায় অষ্টমীর সন্ধ্যায় গৌর চক্রবর্তী, পতিতপাবন হালদারের মতো মাওবাদীদের জেলের ঠাকুর দেখানো হয়েছে।
এ বারের পুজোটা একেবারেই অন্য রকম প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের। আলিপুর জেলে পুজো হচ্ছে। কিন্তু তা নিয়ে যেন কোনও হেলদোল নেই তাঁর। পুজোর ক’দিন সেলে-ই ছিলেন। স্ত্রী করুণা দেখা করতে এসেছিলেন মহালয়ার দিনে। দু’চারটে মাত্র কথা হয়েছিল। তার পর আর দেখা হয়নি। আসেননি দলের নেতারাও। জেলে সুশান্তবাবুর সময় কাটছে কাগজ আর বই পড়ে। করুণা জানান, “পুজো নিয়ে মাতামাতি ওঁর কোনও কালেই ছিল না। পুজোর সময় দলের অফিস, বইয়ের স্টল এ সব নিয়েই থাকতেন।”
এ বার পুজোয় বাড়তি আনন্দ কেএলও নেতা টম চৌধুরীর। বেশ কিছু দিন বন্দি ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলে। সক্রিয় ভূমিকা নিতেন জেলের পুজোয়। অষ্টমীতে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফিরে গেলেন বাড়ি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.