সারা বছর একই কমপ্লেক্সে থাকা। অথচ অনেকের সঙ্গে দেখাই হয় না।
আবাসনের পুজোর সবচেয়ে বড় পাওনা, সবার সঙ্গে সবার দেখা হওয়া, চুটিয়ে আড্ডা মারা, অন্ত্যাক্ষরী খেলা। সারা বছর বাথরুমে গলা সেধে পুজোমণ্ডপে গান গাওয়াও! তাই বছর বছর পুজো করতে কোমর বাঁধেন আবাসনের কর্তাব্যক্তিরা।
দুর্গাপুর শহরের অন্যতম বড় আবাসনের পুজো হয় বিধাননগরের গ্রুপ হাউসিংয়ে। প্রায় ছ’শো আবাসনের হাজার দুয়েক বাসিন্দার এই পুজোর সূচনা ১৯৯৫ সালে। ‘নমো নমো’ করে শুরু হলেও যত দিন গিয়েছে জৌলুস তত বেড়েছে। এ বার মণ্ডপ হয়েছে বাঁকুড়ার গন্ধেশ্বরী মন্দিরের আদলে। প্রতিমা সাবেক, ডাকের সাজ। পুজোয় তিন দিন সব পরিবারে অরন্ধন। সবাই মিলে মণ্ডপে একসঙ্গে খাওয়া। কলকাতা থেকে শিল্পী এনে জলসা। পাশাপাশি, স্থানীয়দের নিয়েও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বিধাননগরেরই আরণ্যক পূর্ব হাউসিংয়ে আবাসনের সংখ্যা ২০৪। গত দশ বছর ধরে পুজো হচ্ছে। মণ্ডপ ও প্রতিমায় তেমন জাঁকজমক নেই। ঘরোয়া পরিবেশে সাবেক প্রতিমায় পুজো। প্রতি সন্ধ্যায় আবাসিকেরা নিজেরাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অষ্টমী ও নবমীতে আবাসনে রান্না বন্ধ। সবাই মিলে মণ্ডপে খাওয়া।
বিধাননগরের ইস্পাত পল্লি হাউসিং কো-অপারেটিভের দুর্গাপুজোর এ বার ৩৪তম বর্ষ। পুজো কমিটির সম্পাদক সীতাংশুশেখর দাস জানান, আবাসিক পরিবারের সংখ্যা একশোর উপরে। পুজো হচ্ছে আবাসনের কমিউনিটি হলেই। তিন দিন সেখানেই খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। শুধু শোওয়া ও বিশ্রামের সময়টুকু বাদে চার দিন আবাসিকদের সময় কাটে সেখানেই। বিধাননগরের মতো অত আবাসন নেই সিটি সেন্টারে। সেখানকার ভূ-বাসন আবাসনে পুজো হচ্ছে ২০০২ থেকে। সেখানকার আবাসিকেরা আগে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া থাকতেন। পাড়ার পুজোয় মেতে উঠতেন। আবাসনে এসে সবাই মিলে ঠিক করেন, সেখানেই নিজেরা পুজো করবেন। সেই শুরু। গত কয়েক বছরে মহিলারা বাড়তি উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁদের অন্যতম মঞ্জু চট্টোপাধ্যায়, রীতা ভৌমিকেরা জানান, আজ, দশমীতে সিঁদুর খেলা হবে ধুমধাম করে। তার পরে বিজয়া সম্মিলনী। |