শাশুড়ির থেকে শম্পা শিখছেন পুজোর পাঠ
থিত আছে, প্রায় ৩০০ বছর আগে ভোলানাথ সাহার স্ত্রী আনন্দময়ী দেবী স্বপ্নাদেশ পান। সেই মতো জমিজমার আয়ে শুরু হয় দুর্গাপুজো। সেই থেকেই আমড়াই গ্রামের সাহাবাড়িতে প্রায় সাত পুরুষ ধরে চলে আসছে পুজো।
বস্তুত, দুর্গাপুর ও তার আশপাশের গ্রামগুলিতে এক সময়ে বেশ কয়েকটি পারিবারিক পুজোর সূচনা হয়েছিল। সেগুলিতে এখন বহু শরিক জড়িয়ে থাকেন। শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়ি ফেরেন অন্যত্র ছড়িয়ে থাকা লোকজন। কিন্তু সাহাবাড়িতে শরিকের তেমন ব্যাপার নেই। বাড়ির কর্তা শান্তি সাহা। তবে পুজোর কর্ত্রী তাঁর স্ত্রী সরস্বতী দেবী। তাঁর কথায়, “বিয়ের পর থেকেই দেখেছি, শাশুড়ি নিজের দায়িত্বে বাড়ির মেয়েদের নিয়ে সব কাজ সামলাতেন। আমিও এখন সে ভাবেই বাড়ির রীতিনীতি মেনে চলছি।”
গ্রামেরই রায়বাড়ির সঙ্গে একই উপাচার মেনে পুজো হয় সাহাবাড়িতে। পুরনো মন্দিরে সাবেক একচালার ডাকের সাজের প্রতিমায় বৈষ্ণব মতে। ভিড় করে আসেন গ্রামের লোকজন। বৈষ্ণব মতে পুজো হওয়ায় পাঁঠা বলি হয়না। তার বদলে সপ্তমীতে আখ, অষ্টমীতে চালকুমড়ো আর নবমীতে আখ ও চালকুমড়ো বলি হয়। চার দিনই চলে নিরামিষ খাওয়া-দাওয়া। শান্তিবাবু জানান, দেবীর জন্য কোনও দেবোত্তর সম্পত্তি নির্দিষ্ট নেই। তাই সাধ্য মতো নিজেদের টাকাতেই তাঁরা দেবীর পুজো করে আসছেন।
সময়ের পরিবর্তনেও কিছু জিনিস যেমন পাল্টায়নি, কিছু পাল্টেও গিয়েছে। যেমন, বংশ পরম্পরায় পুজোর কাজ করেন পুরোহিত, কুমোর ও ঢাকিরা। আবার বলির খবর যেখানে আগে যেত মুখে-মুখে, এখন যায় মোবাইলে। অষ্টমী পুজোর আগে সাহাবাড়ির মন্দির থেকে পাঁচশো মিটার দূরে রায়দের মন্দির পর্যন্ত সার দিয়ে সকলে দাঁড়িয়ে থাকতেন। ক্ষণ এলে মুখে মুখে সে খবর ‘রিলে’ হত। খবর এসে বলি হত সাহাবাড়িতে। এখন সে খবর আসে মোবাইলে।
বাড়ির জামাই গোপাল সাহা জানান, বছর পাঁচেক আগেও দশমীতে প্রায় ২৫ জন মানুষের কাঁধে প্রতিমা নিরঞ্জনে যেত। এখন আর তা হয় না। এখন দেবী যান ট্রাক্টরে। গোপালবাবুর খেদ, “এখন আর তত লোক কই!” ভাল হোক বা খারাপ, এ-ও এক পরিবর্তন।
তবে সবই পাল্টে যায়নি। সরস্বতী দেবীর পরের প্রজন্ম হাল ধরেছে। সাহাবাড়িতে সদ্য বধূ হয়ে আসা শম্পা যেমন বলেন, “পুজোয় বাপের বাড়ি যেতে পারিনি। কিন্তু তাতে দুঃখ নেই। আমাকেও তো শাশুড়ির কাছ থেকে সব শিখে নিতে হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.