জামিনে মুক্ত কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহের নাম করে তোলা আদায়ের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে মালদহের বামনগোলা থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম যোগেশ মণ্ডল। ১৯ বছর বয়সী যোগেশ বেঙ্গালুরুতে দিনমজুরের কাজ করতেন। সম্প্রতি সেখান থেকে ফিরে ওই কেএলও জঙ্গির নাম করে টেলিফোনে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের ছক কষে। একাধিক ব্যবসায়ী হুমকি ফোন পেয়ে পুলিশকে জানান। দুজন ব্যবসায়ী ভয় পেয়ে টাকাও দেন। ইতিমধ্যে পুলিশ মালখান সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারে, তাঁর নামে হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টার কথা তিনিও শুনেছেন। পুলিশ ওই যুবককে ধরতে ফাঁদ পাতে। এদিন পাকুয়াহাটের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে ওই যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যোগেশ মন্ডলের বাড়ি বামনগোলার চ্যংনা গ্রামে। আজ, শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জামিনে ছাড়া পাওয়া কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহ ওরফে মাধব মন্ডলের নাম করে বেশ কিছুদিন ধরে দিনমজুর যোগেশ মন্ডল বামনগোলা ও হবিবপুর এলাকার ব্যবসায়ীদের হুমকি দিয়ে তোলা আদায় করছিল। একাধিক ব্যবসায়ী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়। বুধবার পাকুয়াহাটের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তোলা আদায় করে ফেরার পথে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়।” ধৃতের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা, একটি পাইপগান ও চারটি মোবাইলের সিম কার্ড উদ্ধার করেছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। আর কতজন ব্যবসায়ী ও শিক্ষককে হুমকি দিয়ে কত টাকা তোলা আদায় হয়েছে তা জানার জন্য ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেপুলিশ সুপার জানান। মালদহের বামনগোলা, হবিবপুর থানা এলাকা কেএলওদের শক্ত ঘাঁটি। একসময় কেএলও জঙ্গি মালখান সিংহ ওই এলাকার ত্রাস ছিল। ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ী, শিক্ষকদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগে পুলিশ কয়েক বছর আগে মালখান সিংহকে গ্রেফতার করে। প্রায় দু’বছর জেলে সাজা কাটানোর পরে কয়েক মাস আগে মালখান সিংহ জামিনে ছাড়া পায়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিন পর থেকে ফের বামনগোলা ও হবিবপুর এলাকায় মালখান সিংহের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। দেড় মাস আগে মালখান সিংহের নামে চিঠি মিশনারি আশ্রমের এক কর্মাদারের কাছে পৌঁছয়। তাতে ২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। বামনগোলার একাধিক ব্যবসায়ী, শিক্ষকদের কাছেও চিঠি, ফোন যায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে যোগেশের বাবা লক্ষণবাবু মারা যান। বিধবা মা, তিন বোন ও এক ভাই। অভাবের সংসার। সংসার টানতে দিনমজুরি শুরু করে যোগেশ। দিনমজুরির কাজে সে বিহার, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, মুম্বই পাড়ি দিয়েছিল। দু’মাস আগে বেঙ্গালুারু থেকে বাড়িতে পেরে। পুলিশী জেরায় যোগেশ জানিয়েছে, আড়াই মাস আগে একটি হিন্দি সিনেমা দেখার পরেই যোগেশ জঙ্গি সেজে বড়লোকদের কাছ থেকে টাকা তোলার ছক কষে। বেঙ্গালুরু থেকে সে সিম কার্ড কেনায় পুলিশ প্রথমে কিছুই হদিশ করতে পারছিল না। |