তালাবন্ধ পার্টি অফিস খোলাতে গিয়ে হামলার মুখে পড়লেন কোচবিহারের ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ নৃপেন রায়।
বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহারের সিতাই থানার জোরাম এলাকার ঘটনা। ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ, হামলাকারীরা তৃণমূল সমর্থক। তারা সাংসদের গাড়িও ভাঙচুর করেছে। ওই কার্যালয়ের দখলও নিয়েছে তৃণমূল। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন দুপুর থেকে সিতাই থানার সামনে অনশনে বসেন নৃপেনবাবু। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ। রাজ্যের শাসক দলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অশোকবাবু বলেন, “এই ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। সাংসদের উপরে হামলা হচ্ছে, খবর পেয়ে প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারিনি! মুখ্যমন্ত্রী বুধবারই বলেছেন, কোথাও রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে যেন হামলা না হয়। তারপরেই সিতাইয়ে আমাদের কার্যালয় দখল করা হল! মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, যা তিনি মুখে বলছেন, কাজেও যেন তা-ই হয়। নইলে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে!” |
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “ফব-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই অফিসে তালা ঝোলে। এ দিন তা খোলানো নিয়ে ওদের নিজেদের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। অহেতুক তৃণমূলের নাম জড়ানো হচ্ছে।” কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধীর মন্তব্য, “মহকুমাশাসককে বিশদে খোঁজ নিতে বলেছি।” কোচবিহারের ডিএসপি রানা মুখোপাধ্যায় জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফব-র অভিযোগ, সম্প্রতি জোরামে দলের একটি আঞ্চলিক কমিটির কার্যালয়ের দখল নেন এলাকার তৃণমূল সমর্থকেরা। কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে তার সামনে স্থানীয় একটি ক্লাবের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ দিন সকালে সাংসদ নৃপেনবাবু ওই এলাকায় পৌঁছনো মাত্র কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক তাঁকে ঘিরে ধরে গালিগালাজ শুরু করেন। সাংসদের অভিযোগ, “পুলিশকে জানিয়েই এ দিন কার্যালয়ের তালা খুলতে যাই। সেই সময়ে আমাদর উপরে লাঠিসোটা নিয়ে তৃণমূলের সমর্থকেরা হামলা করে। গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়। পুরো ঘটনা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” কোনও রকমে ওই এলাকা থেকে বার হয়ে সাংসদ সিতাইয়ে পৌঁছন। অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবি করে তিনি সিতাই থানার সামনে অনশনে বসে পড়েন। ফব-র জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর দাবি, “নতুন যারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, হামলা করেছে তারাই। পুলিশ সতর্ক থাকলে এই ঘটনা ঘটত না। অভিযুক্তদের দ্রুত ধরা না-হলে বড় আন্দোলনে নামব।” সম্প্রতি ওই এলাকায় ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জগদীশ বসুনিয়া তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার পর থেকেই এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে ফব-র বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ফব-র কোচবিহারের সাংসদের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকেরাই ওই পার্টি অফিসের দখল নেন। তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “কোচবিহারের সাংসদ বার বার আদিবাড়ি ঘাটে সেতুর আশ্বাস দিয়ে ভোটে জিতেও কিছুই করতে পারেননি। রাজ্যের নয়া সরকার ওই সেতু তৈরির জন্য ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এখন এই সব ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন নৃপেনবাবু।” |