|
|
|
|
বোনাসে আনন্দ পুজোয় |
নিলয় দাস • ফালাকাটা |
ভুটান পাহাড়ের কোলে চা বাগানের মাঝে মাদলের তালে আপন মনে গান গাইছেন বিফাই ওঁরাও। দীর্ঘ ৯ বছর পরে বাগান খুলেছে। এই প্রথম মালিকপক্ষ পুজোর বোনাসও দিয়েছেন। অন্যান্য বাগানের তুলনায় বোনাসের হার কম হলেও বোনাস বলে কথা! তাই বোনাস নিয়ে মনখারাপ থাকলেও নমো নমো করে পুজো কেউ চাইছেন না কাঁঠালগুড়ি, রামঝোরার শ্রমিকরা। তাই পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছেন সকলে। মঙ্গলবারই কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের শ্রমিকদের বোনাস মিলেছে। বাগানে বোনাস মেলার আগাম খবরে পেয়ে ফুটবল মাঠে আগাম হাটও বসে গিয়েছে। পুরনো জামাকাপড়ের বদলে বাগানের মাঠে লাল, নীল, সবুজ, হলুদ নানান রঙবেরঙের নতুন পোশাকের পসরা নিয়ে বসেছেন বানারহাটের হাট ব্যবসায়ীরা। কাঁঠালগুড়ি বাগানের পুজোর মন্ডপ সাজাতে এ বার স্থানীয় এক শিল্পীকে দায়িত্ব দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। বানারহাট থেকে প্রতিমার বায়না করা হয়েছে। অষ্টমীতে খিচুড়িভোগ আর মন্ডপ ঘিরে জমজমাট মেলা, সবই থাকছে কাঁঠালগুড়ি বাগানে। ২০০২ সালে বানারহাটের কাঁঠালগুড়ি বাগান বন্ধ হওয়ার পরে মাথায় হাত পড়ে শ্রমিকদের। ১১১২ জন শ্রমিক ও তাদের পরিবারে নেমে আসে চরম দুরবস্থা। বহু মানুষ অনাহারজনিত নানান অসুখে ভুগে মারা যান। ঠিক একই সময় বন্ধ হয় বীরপাড়ার রামঝোরা চা বাগানও। দুই বাগানের চা গাছ পরিচর্যার অভাবে শুকিয়ে যায়। কচি পাতা উৎপাদন কমে যায়। মৃত্যর হাত থেকে পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে বহু শ্রমিক ছুটে যান ভুটানের পাহাড়ে পাথর খাদানে। তখনও কষ্টেসৃষ্টে কোনও মতে দুর্গা পুজো চালিয়ে গিয়েছেন শ্রমিকেরা। মন্ডপের সাজসজ্জা কমিয়ে প্রতিমার আয়তন কমিয়ে কোনও রকমে পুজো হচ্ছিল। রামঝোরা চা বাগানের বাসিন্দা তথা শ্রমিক নেতা রমেশ শর্মা বলেন, “মা দুর্গা কবে মুখ তুলে তাকায় সেটাই আমরা সারা বছর ভাবতাম। চরম দুঃসময়েও আমরা পুজো বন্ধ করিনি। আজ ঠাকুর আমাদের দিকে চোখ মেলে তাকিয়েছে।” তবে বিশ্ব বাজারে চায়ের দাম বাড়ায় এই দুটি বাগানের পাশাপাশি ঢেকলাপাড়া বাদে সবকটি বাগান চালু করে নতুন মালিকরা। কাঁঠালগুড়ি বাগানের অফিসবাবু তথা পুজো কমিটির সম্পাদক বরুণ নন্দীর কথায়, কম হলেও ৯ বছর পরে শ্রমিকরা বোনাস পেল। এটাই বড় আনন্দ। মালিক, শ্রমিক ও অফিসের কর্মীরা সকলে মিলে পুজোর ৪ দিন আনন্দে মেতে উঠব।” |
|
|
|
|
|