|
|
|
|
|
শিল্পনৈপুণ্যে টেক্কা দিতে
তুমুল লড়াই তমলুকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
|
কোথাও নেপালের বৌদ্ধ মন্দিরে দেবীর আরাধনা। আবার কোথাও জমিদার বাড়ির দালানে সপরিবার উঠে এসেছে উমা। মণ্ডপসজ্জা ও প্রতিমার বৈচিত্র্যে এ বার জমজমাট পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদরের পুজো। মহালয়ার দিন থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় হাসি ফিরেছে উদ্যোক্তাদের মুখে। জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। শিল্পনৈপুণ্যে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার ঠান্ডা লড়াইও চলছে তলায়-তলায়। বাইরে থেকে অবশ্য তা বোঝার উপায় নেই।
এ বার পুজোয় তমলুক শহরের হ্যামিল্টন হাইস্কুল চত্বরে নেপালের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে প্লাইউড ও কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে অলস্টার ক্লাবের মণ্ডপ। মণ্ডপসজ্জার মূল উপকরণ কাঠ। প্লাইউড ও কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি মন্দিরের বাইরের দেওয়ালে কাঠের গুড়ো দিয়ে রামায়ন ও মহাভারতের নানা কাহিনীর চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরের ভিতরের দেওয়ালে থাকছে দুর্গার নানা কাহিনী। প্রায় ৪০ ফুট উচ্চতার মণ্ডপের ভিতরে শ্বেতশুভ্র দুর্গা প্রতিমা। ক্লাবের সম্পাদক তথা তমলুক পুরসভার কাউন্সিলর সুব্রত রায় বলেন, “নেপালের প্যাগোডার আদলে মণ্ডপ করা হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়ে। মাটির শ্বেতশুভ্র প্রতিমাও সকলের নজর কাড়বে বলে আশা করছি।” শহরের মালিজঙ্গল পাড়ায় নটিবয় ক্লাবের পুজোর থিম ত্রিপুরার ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির। এখানে মণ্ডপ ও প্রতিমার মূল উপকরণ বাঁশ। বাঁশ ও প্লাইউড দিয়ে বানানো হচ্ছে ৬০ ফুট উঁচু মণ্ডপ। মণ্ডপের ভিতরে বাঁশেরই শিল্পকর্ম। এর জন্য ভগবানপুর থেকে দক্ষ শিল্পীদের এনেছেন পুজোকমিটির উদ্যোক্তারা। প্রতিমাও তৈরি করা হচ্ছে বাঁশের উপকরণ দিয়েই। নটিবয় ক্লাবের পুজোকমিটির সম্পাদক সৌম্যজিৎ দে বলেন,“ বাঁশ দিয়েও যে কত সুন্দর শিল্পকর্ম হতে পারবে, তার নিদর্শন মিলবে আমাদের মণ্ডপে। বাঁশ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরিতে।”
তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ের ওয়ান হার্টেড ক্লাবের মণ্ডপ হচ্ছে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে। ওড়িশার অন্যতম দর্শনীয় এই মন্দিরকে ‘থিম’ করে মণ্ডপসজ্জার পাশাপাশি ডাকের সাজের গয়নায় সজ্জিতা দশভূজা দর্শকদের মন কেড়ে নেবে বলে আশা পুজোকর্তাদের। শহরের শালগেছিয়ায় নিউব্রাইট স্টার ক্লাবের পুজোর মণ্ডপ হচ্ছে মহারাষ্ট্রের নাসিকের বিষ্ণুজোড়া মন্দিরের আদলে। পাটের চট ও থার্মোকল দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে মন্দিরের শিল্পকর্ম। তমলুক শহরের বেনেপুকুর স্কোয়ারে ‘জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো’ থিম। জমিদার বাড়ির আদলে মণ্ডপের ভিতরের সাজ। মাদুরকাঠি দিয়ে সাজানো হয়েছে মণ্ডপের ভিতরের দেওয়াল। মণ্ডপের প্রবেশপথও জমিদার বাড়ির আদলে। সাবেক ও আধুনিকতার মিশেল মাটির প্রতিমার গড়নে। জমিদার বাড়ির দালানে সপরিবারে উমা।
পিছিয়ে নেই ছোট বাজেটের পুজোগুলোও। চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সকলে। কথা বলার ফুরসতটুকুও নেই উদ্যোক্তাদের।
ভিড় পুজোর বাজারেও। জামা-কাপড়ের দোকানে উপচে পড়ছে ভিড়। শেষবেলায় জুতো ও সাজগোজের দোকানে ভিড়টা যেন একটু বেশিই। সব মিলিয়ে দশভূজার আরাধনায় প্রস্তুত তমলুক। |
|
|
|
|
|