কঙ্কাল মামলায় হাইকোর্টে জামিন হল না সুশান্তের
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বর্তমান বিধায়ক সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সারবত্তা আছে বলেই মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে তারা।
গড়বেতা-৩ ব্লকের দাসেরবাঁধ বেনাচাপড়ায় কঙ্কাল উদ্ধারের মামলায় সুশান্তবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। তার পর থেকে প্রায় ৫০ দিন জেল-হাজতে আছেন তিনি। তদন্ত শেষ করে ওই মামলায় আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে সিআইডি। তার পরে জামিনের আর্জি জানান প্রাক্তন মন্ত্রী। ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল এবং বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তাদের বক্তব্য, প্রাক্তন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে-অভিযোগ উঠেছে, তার সারবত্তা রয়েছে বলে তারা মনে করছে। চার্জশিটে সুশান্তবাবুর বিরুদ্ধে দাঙ্গা ও সশস্ত্র দাঙ্গা, অস্ত্র দিয়ে মারধর, খুন, হত্যার চেষ্টা, আত্মহত্যায় প্ররোচনা, বড়ি ভাঙা, বেআইনি জমায়েত এবং খুনের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আদালতে জমা দেওয়া কেস ডায়েরি অনুযায়ী ২০০২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিয়াশালা গ্রামে তৃণমূলের অফিস খোলা এবং পতাকা তোলার জন্য কয়েক জন জড়ো হন। সেই সময় ওই জেলার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা সুশান্ত ঘোষ, তরুণ রায়, এন্তাজ আলির নেতৃত্বে সশস্ত্র সিপিএম সদস্যেরা সেখানে হাজির হন। তার পরে সাত জনকে হত্যা করা হয় কেটাগড়ের মাঠে। তাঁদের মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয়।
সুশান্তবাবুর পক্ষে সওয়াল করে রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলাই রায় বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই এই মামলা। জামিনের আবেদনকারী দীর্ঘদিনের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এফআইআর অনুযায়ী ন’বছর আগেকার ওই ঘটনার তদন্ত হয়েছে। মামলা এবং বিচারও হয়েছিল। তাতে অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
সম্প্রতি দাসেরবাঁধ বেনাচাপড়ায় মাটি খুঁড়ে কিছু কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। সিআইডি-র রিপোর্ট বলছে, দু’টি কঙ্কাল অজয় আচার্য ও রাজু শেখের বলে শনাক্ত করেন তাঁদের আত্মীয়েরা। চার্জশিটে বলা হয়েছে, সুশান্ত ঘোষের নির্দেশেই ওই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিল। সিআইডি-র বক্তব্য, সুশান্তবাবুর বেনাচাপড়ার বাড়ির কাছে দাসেরবাঁধে নিহতদের দেহ যখন পুঁতে দেওয়া হচ্ছিল, তখন ওই নেতা সেখানে হাজির ছিলেন। প্রমাণ হিসেবে তাঁর গাড়ির ‘কলবুক’-এর তথ্য চার্জশিটের সঙ্গেই পেশ করেছে সিআইডি।
রাজ্য সরকারের পক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর দেবাশিস রায় বলেন, তদন্তে যে-সব তথ্য এবং প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, তাতে এটা বলা যায় যে, আবেদনকারী ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত। ঘটনার সময় রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল আবেদনকারীর দল। তাই সে-দিন অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করেননি। পালাবদলের পরে এখন তাঁরা মুখ খুলেছেন। কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে এখন সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানানো ছাড়া সুশান্তবাবুর সামনে আর কোনও পথ নেই। পুজোর পরে তাঁকে নিম্ন আদালতে হাজির করানো হবে। তখন তিনি জামিনের আবেদন করতে পারেন। কিন্তু হাইকোর্টে জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরে নিম্ন আদালতে জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করছেন আইনজীবীরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.