দু’টো ম্যাচে নাইটদের হাল দেখার পর লিখেছিলাম, এই নাইটদের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আমি দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু বৃহস্পতিবার যে ভাবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মতো শক্তিশালী টিমকে নাইটরা উড়িয়ে দিল, তার পর শাহরুখকেই ‘কোট’ করতে ইচ্ছে করছে। ‘হার কর জিতনেওয়ালোকে বাজিগর কহতে হ্যায়’ বলে ওর সুপারহিট সিনেমার একটা ডায়লগ আছে না? পরিষ্কার বলে রাখি, হারতে হারতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া টিমটা যদি এর পর ঘুরে দাঁড়ায়, যদি সেমিফাইনালে চলে যায়, আশ্চর্য হব না। |
তবে নাইটরা যে শেষ চারে উঠবেই, এমন কথা বলছি না। শুধু সম্ভাবনার কথাটা বলেছি। গ্রুপ টেবলে তিন নম্বরে উঠে এলেও ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটা জিততেই হবে। বেঙ্গালুরু ম্যাচের পর নেট রান (-০.০১৯) রেটটাও ভাল হয়ে রইল ঠিকই, কিন্তু আরও ভাল করতে হবে। মোদ্দা কথায়, অনেক অঙ্ক বাকি। কিন্তু নাইটদের চেহারায় যে আত্মবিশ্বাসটা দেখলাম, সেটাই কিন্তু ওদের এক নম্বর হাতিয়ার হতে পারে।
আর এই বিশ্বাসটা স্রেফ এল গৌতম গম্ভীরের এ রকম দুর্ধর্ষ ব্যাটিংয়ের জন্য। গত দু’তিনটে আইপিএলে ওর এ রকম ইনিংস দেখেছি বলে তো মনে পড়ছে না। নামার পর থেকেই চালিয়ে খেলল। দেখে কে বলবে, এই ছেলেটাই শেষ দু’টো ম্যাচে কিছু করতে পারেনি? হাফসেঞ্চুরিটা তো নিমেষের মধ্যে করে ফেলল। ব্যাটিংয়ে গম্ভীর আমার কাছে ফুলমার্কস পাবে, আর অধিনায়কত্বেও ‘লেটার’ মার্কস তুলবে স্রেফ বিসলাকে বসিয়ে ব্র্যাড হাডিনকে নামানোর জন্য।
হাডিনকে বসিয়ে কেন যে বিসলাকে টানছিল নাইট রইডার্স ম্যানেজমেন্ট, জানি না। হয়তো সাকিবকে খেলানোর জন্য। কিন্তু এর পর মনে হয় বিসলা আর সাকিবদু’জনরেই ছুটি হয়ে গেল। হাডিন যে ভাবে ‘পাওয়ার প্লে’-র সুবিধাটা সুদেআসলে তুলল, তার পর ওকে বসানো সম্ভব হবে না।
|
কী হলে নাইটরা শেষ চারে |
• ওয়ারিয়র্সের বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচ জিততেই হবে।
• গ্রুপে নাইটরা তিনে। আগের দুই দল ওয়ারিয়র্স (+১.২৭৫) এবং সমারসেট (০.২৮৯) নেট রান রেটে এগিয়ে নাইট রাইর্ডাসের (-০.০১৯) থেকে। শেষ ম্যাচে তাই রান রেটও বাড়িয়ে রাখতে হবে নাইটদের। তার পর তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকে। কারণ গ্রুপ থেকে শেষ চারে যাবে দু’টো দল। |
|
হাডিন আরও একটা ব্যাপার নাইটদের পক্ষে গিয়েছে। সেটা হচ্ছে চিন্নাস্বামীর রাতের শিশির। টিভিতে দেখছিলাম, ভেত্তোরি-গেইলরা বল গ্রিপ করতে অসুবিধায় পড়ছিল। ম্যাচটা দেখলাম শেষ পর্যন্ত হাই টেনশনের হয়ে গেল। গালাগালি চলছিল দু’পক্ষে। আসলে নাইটরা এ দিন যা চেয়েছিল, তাই হয়েছে। কিন্তু রোজ এ ভাবে ম্যাচ মুঠোয় আনতে গেলে কয়েকটা ব্যাপারে এখনই নজর দেওয়া দরকার:
১) স্লগে বোলিংয়ের উন্নতি। শেষ দু’টো ম্যাচে নাইটদের হারার কারণ স্লগে বাজে বোলিং। রোগটা যায়নি। এ দিনও বেঙ্গালুরু ইনিংসের শেষ পাঁচ ওভারে বোলিং জঘন্য হয়েছে। ভেত্তোরিকে মারতে দেওয়ার যুক্তি নেই।
২) টপ অর্ডার ঘুরে দাঁড়ালেও মিডল অর্ডার কেমন দাঁড়াল, সেটা দেখা সম্ভব হয়নি। এখনও পর্যন্ত ইউসুফ পাঠানের থেকে একটা ভাল ইনিংস পাওয়া গিয়েছে। মনোজকেও আহামরি লাগেনি।
৩) চাপে পড়লে মিসফিল্ড হচ্ছে।
পঞ্চমীর দিন ওয়ারিয়র্সদের বিরুদ্ধে নামার আগে যদি এই ভুলগুলো শুধরে নেওয়া যায়, তা হলে নাইট সমর্থকদের পুজোটা ভাল কাটতেও পারে।
|
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ১৬৯-৯ (ভেত্তোরি ৪৪, আবদুল্লা ২-২০)
নাইট রাইডার্স ১৭১-১ (কালিস ৬৪ ন:আ:, গম্ভীর ৫৫ ন:আ:) |