নানারকম টালবাহানা এবং অবশেষে সভাপতি মারফৎ ডার্বিকে রেখে দেওয়ার সরকারি ঘোষণা। এক কথায় এই হল ফেড কাপ ব্যর্থতা পরবর্তী মোহনবাগানি পদক্ষেপ।
নাটক ছিল তার মধ্যেই। প্রচারমাধ্যমের সামনে আসার আগে আধ ঘণ্টা ফুটবলার-কোচ-কর্মকর্তা ত্রিমুখী রুদ্ধদ্বার বৈঠক। তারপরে সভাপতির বিবৃতি। যেখানে স্বপনসাধন বসু বলছেন, “ফুটবলারদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা হয়েছে। ভাল পারফরম্যান্সের জন্য ওরা সময় চেয়েছে।” সাংবাদিক সম্মেলন শেষে সভাপতির দাবি “কোচ এবং ফুটবলারদের বেশ করে বকুনিই দিলাম মিটিংয়ে।” বকুনি কি বকলমে কোচের জন্য কোনও সাবধানবাণী? নেতিবাচক উত্তর এল সভাপতির কাছ থেকে। সভাপতির পাশে বসে আবার অঞ্জন মিত্রের সংযোজন, “পরীক্ষায় এক বার অজানা প্রশ্ন আসায় খারাপ ফল হতেই পারে। তবে সেটা তো বারবার হওয়াটা ঠিক নয়।”
স্টিভ ডার্বিকে রেখে দেওয়ার পক্ষে সভাপতির যুক্তি, “১৭ সেপ্টেম্বর ম্যাচের দিন কোচ এসএমএস করে তাঁর মায়ের শরীর খারাপের কথা জানান। তখন ডার্বি ভেবেছিলেন মায়ের ক্যান্সার হয়েছে। হয়তো বাড়ি ফিরতে হবে।” এর পর সভাপতি-সহ ক্লাব কর্তারা ঠিক করেন, ডার্বির অনুপস্থিতিতে সুব্রত ভট্টাচার্যকে ফেড কাপে কোচ করার। সভাপতির দাবি, “সুব্রত ভট্টাচার্যর সঙ্গে সৃঞ্জয়ের কথা বলার পরই কোচ সরিয়ে দেওয়া হবে, এ রকম ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।” তখনই প্রশ্ন, ডার্বিকে যদি সেই রেখেই দেওয়া হবে, তা হলে ইউ বি গ্রুপের সঙ্গে ঘনঘন আলোচনা কেন? সভাপতির দাবি, “ডার্বির অনুপস্থিতিতে আমরা যে সুব্রতকে কোচ হিসাবে চাইছি সেটা বলার জন্যই ইউবির সঙ্গে বসতে হয়েছিল।” ডার্বির কোচিংয়ে কি একটুও অনাস্থা জন্মায়নি? প্রথমে ‘না’ বলেও রক্ষণাত্মক সভাপতি পরে ব্যাকফুটে, “আমি এর উত্তর দেব না।” পরে অবশ্য যোগ করছেন, “কাজে সন্তুষ্ট না হলে কি ডার্বিকে দায়িত্বে রাখতাম?”
তাঁর মায়ের অবস্থা ততটা গুরুতর নয় জেনেই ডার্বি না ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। কোচের চোখে গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নেওয়ার প্রধান কারণ একগাদা গোলের সুযোগ নষ্ট। একই সঙ্গে জানাচ্ছেন, ফুটবলারদের দিকে আঙুল তোলেননি। “কোনও ফুটবলারকে নাম করে দোষী বলিনি।” বিতর্ক তৈরির জন্য কোচ মিডিয়ার দিকে আঙুল তুলতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে থামিয়ে দেন স্বপনসাধন বসু। বলেন, “এই ঘটনায় বিতর্ক তৈরিতে মিডিয়ার কোনও ভূমিকা নেই।” সচিব অঞ্জন মিত্র আগে বলেছিলেন, ঠিক মতো হোমওয়ার্ক না করাতেই ভুগতে হয়েছে দলকে। এ ব্যাপারে ডার্বির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কোচকে কোনও মন্তব্য করতেই দেননি সভাপতি। |