বৃক্ষরোপণের ডাক দিয়ে সেজে উঠছে পুজোমণ্ডপ
ক্সিজেন ছাড়া মানুষ বাঁচে না। কিন্তু যে ভাবে বনভূমি, গাছপালা সাফ হতে শুরু করেছে তা ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে। এই দুশ্চিন্তাই তাড়া করে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্বকে। বিশ্বজুড়েই ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ নিয়ে নানা গবেষণা, আলোচনা, তার থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে ব্যস্ততা। আরও আরও গাছ লাগানো ছাড়া যে পরিত্রাণের পথ নেই, তাও সবারই জানা। পুজোর দর্শককেও সেই কথাটাই আবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাইছে মেদিনীপুর শহরের শরৎপল্লি নাগরিক সমিতি।
যাদের পুজোর প্যান্ডেল হচ্ছে বাকিংহাম প্যালেসের আদলে। আর ২৫টি বড় ফ্লেক্সে নানা ভাবে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বৃক্ষরোপণ-প্রসঙ্গ। একটি গাছ কত পরিমাণ অক্সিজেন দেয়, কত পরিমাণ কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে, এক জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বেঁচে থাকতে দৈনিক কত পরিমাণ অক্সিজেন প্রয়োজন, কত গাছ লাগালে কত মানুষ কী ভাবে উপকৃত হবেন--এ সবই তথ্য-পরিসংখ্যানে তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি তুলে ধরা হচ্ছে কী ভাবে জঙ্গল শেষ হয়ে যাচ্ছে, তার পরিণাম কতটা মারাত্মক, তা-ও। আয়োজন করা হচ্ছে পরিবেশ-বিষয়ক ক্যুইজও। যে ক্যুইজে বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা তো বটেই অংশ নিতে পারবে প্রাপ্তবয়স্করাও। ঠিক উত্তর দিতে পারলে রয়েছে পুরস্কারও। বিষয় পরিকল্পনা করেছেন চিকিৎসক গুরুপদ বেরা। তিনি বলেন, “গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে এখন বিশ্বজুড়েই চর্চা হচ্ছে। এটা যে কী ভয়ঙ্কর তা বোঝাতেই এই পরিকল্পনা। যাতে মানুষ সচেতন হন এবং বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত হন।”
পরিবেশ ভাবনায় শরৎপল্লি নাগরিক সমিতি। নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর শহরেরই মণ্ডলমাঠ পুজো কমিটির থিমও ‘পরিবেশ’। যে পরিবেশে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এক সাজানো গ্রাম। যে গ্রামে রয়েছে ছোট্ট নদী। চার দিকে গাছপালা। সাঁকোর উপর দিয়ে হেঁটে চলেছেন মানুষ। অর্থাৎ যে পরিবেশে দূষণ নিতান্তই কম। দর্শনার্থীরা যখন সাঁকোর উপর দিয়ে নদী-গাছগাছালি দেখতে দেখতে মণ্ডপের দিকে এগিয়ে যাবেন, তখন নিশ্চয়ই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাঁদের আকৃষ্ট করবে। দর্শনার্থীরাও বুঝতে পারবেন, এই মনোরম পরিবেশ কতটা সুখকর। এমন পরিবেশ কতটা কাঙ্ক্ষিত। পুজো কমিটির পক্ষে নিরুপম জানা বলেন, “সুন্দর প্রকৃতি আমাদের জন্মগত অধিকার। নদী, গাছপালার পৃথিবী থেকে আমাদের বঞ্চিত করা মেনে নেওয়া যায় না। মণ্ডপের পরিবেশ দেখে যদি দর্শনার্থীরাও পরিবেশ-রক্ষায় আরও অগ্রণী ভূমিকা নেন, আরও আরও গাছ লাগাতে উৎসাহিত হনতবেই মানব আমাদের প্রয়াস সার্থক।”
খড়্গপুরের কৌশল্যা শারদ সম্মিলনী দুর্গোৎসব কমিটি আবার মহালয়ার দিনেই শোভাযাত্রা বের করে। যে শোভাযাত্রার শ্লোগানই ছিল, ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’। মানুষকে গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত ও সচেতন করার জন্যই শোভাযাত্রা। উদ্যোক্তাদের মতে, বাড়ির চত্বরেও কিছু জায়গা থেকে যায়। যেখানে অনায়াসে গাছ লাগানো সম্ভব। বাড়িতে ফল বা ফুলের গাছ থাকলে বাড়ির পরিবেশ যেমন সুন্দর হবে, তেমনই ফুল-ফলও মিলবে। আবার পরিবেশের ভারসাম্যও বজায় থাকবে। এ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই শোভাযাত্রার আয়োজন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.