আকাশপথে দেখলেন ধ্বংসচিত্র
সিকিমকে হাজার কোটি সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর
ভূকম্পে বিধ্বস্ত সিকিমের সাহায্যার্থে এক হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে বাগডোগরা পৌঁছে মিনিট কুড়ির মধ্যেই সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে গ্যাংটক উড়ে যান তিনি। আকাশ পথে প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে ধ্বস্ত-সিকিমের বিভিন্ন জায়গা সরজেমিনে খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। লাচেন থেকে লাচুং, গত ১৮ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পে প্রায় গুঁড়িয়ে যাওয়া পাহাড়ি রাজ্যের জনপদগুলি দেখে স্পষ্টই মর্মাহত দেখায় তাঁকে। গ্যাংটকের কাছেই সিকিম-মণিপাল হাসপাতালও ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। দশ দিন আগের ভয়াবহ ভূমিকম্পে আহত অন্তত ২০০ মানুষ এখনও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেন মনমোহন। খুঁটিয়ে জেনে নেন তাঁদের শারীরিক অবস্থার কথা। পরে গ্যাংটকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সিকিমের মানুষের পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার এক হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সহায়তা দেবে। সিকিম-পুনর্গঠনের জন্য সব রকম সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকার।” দুপুর দু’টো নাগাদ হেলিকপ্টারে বাগডোগরা পৌঁছে রওনা দেন নয়াদিল্লি।
সকালে সিকিম উড়ে যাওয়ার আগে বাগডোগরা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন শিলিগুড়ির পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, রাজ্য কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সুবীন ভৌমিক এবং জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বিধায়ক শঙ্কর মালাকার। পুরসভার তরফে ভূমিকম্পে শিলিগুড়ির ক্ষয়ক্ষতির কথাও জানানো হয়। তথ্য-পরিসংখ্যান-সহ শিলিগুড়ির ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির একটি রিপোর্টও প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ভূমিকম্প-পীড়িতদের সঙ্গে মনমোহন সিংহ। বৃহস্পতিবার গ্যাংটকে। ছবি: পিটিআই
মেয়র বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে শিলিগুড়ি শহরের ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির কথা জানানো হয়েছে। আমাদের এখনও ৩০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলেও তাঁকে জানিয়েছি। আমাদের আশা, কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের আর্জি শুনবেন।”
এ দিন অবশ্য দার্জিলিং ও লাগোয়া সিকিমের আবহাওয়ার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। গত কয়েক দিনে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক গয়াবাড়ি এবং তিনধারিয়ায় রাস্তা ধসে থমকে গিয়েছিল যান চলাচল। এ দিনও সিকিম থেকে দার্জিলিঙে পৌঁছতে রোহিনী, মিরিক এবং পাঙ্খাবাড়ির ঘুরপথই ব্যবহার করতে হয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের মেরামতির কাজ শুরু হতে চলেছে।”
পাশাপাশি, রোদ ঝলমলে গ্যাংটক এখন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরতে শুরু করেছে। তবে, আবহাওয়া ভাল থাকলেও ভুমিকম্পের আতঙ্কে গ্যাংটক এখনও কার্যত পর্যটক শূন্য। অক্টোবর মাসের প্রথম দিন থেকেই সিকিমে পর্যটন মরসুম শুরু হয়। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে গ্যাংটকের এমজি মার্গ অবশ্য সে কথা বলছে না। বিকেল থেকেই কার্যত জনহীন ব্যস্ত পাহাড়ি-শহর। গ্যাংটকের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বছরের এই সময়টা শহরের পরিবেশ খুবই মনোরম থাকে। দিনের বেলায় নরম রোদ্দুর আর বিকেল থেকে হালকা কুয়াশা। কিন্তু এ বছরে আতঙ্কের ঠেলায় আদৌ পর্যটকের ঢল নামবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
এ দিন অবশ্য গ্যাংটক-মঙ্গন সড়ক ফের খুলে গিয়েছে। উত্তর সিকিমের এই মঙ্গনই ছিল ভুমিকম্পের উৎসস্থল। রাস্তা খুললেও মঙ্গনের ত্রাণ শিবিরে এখনও প্রায় তিনশো বাসিন্দা রয়েছেন। এঁরা সকলেই উত্তর সিকিমের লাচুং, লাচেন-সহ ভুমিকম্প-দীর্ণ এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় প্রশানের এক কর্তা জানান, সিকিম জুড়ে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে প্রায় দেড়শো ত্রাণ শিবির। যেখানে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় হাজার তিনেক মানুষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.