শোয়েব আখতার বা ব্রেট লি নয়, এ বার সচিনের বিরুদ্ধে বল হাতে তাঁরই শহরের পুরসভা বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বা বিএমসি। স্বপ্নের বাংলোয় গৃহপ্রবেশের পর দিনই বিতর্ক ধেয়ে এল সচিনের দিকে। বিএমসি দাবি করল বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’ না নিয়েই নতুন বাংলোয় থাকতে শুরু করেছেন সচিন, আর তার জন্য জরিমানা গুনতে হবে তাঁকে। রাতেই মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষে বিএমসি-র কমিশনার সুবোধ কুমারের কাছে জরিমানা মকুব করার জন্য আবেদন করেছেন রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী মহম্মদ আরিফ নাসিম খান।
নাসিম খান বলেছেন, “সচিন দেশের গর্ব। জাতীয় নায়ক। কমিশনার সুবোধ কুমার আমাকে কথা দিয়েছেন ব্যাপারটা খতিয়ে দেখবেন। সচিন সব নিয়মই মেনেছেন। জরিমানা অবশ্যই মকুব করা উচিত।” তার আগে খোদ বিএমসি মেয়রও এই নিয়ে বিবৃতি দিতে ছাড়েননি। মেয়র শ্রদ্ধা যাদব বলেছেন, “নিয়ম সবার জন্যই সমান। তা তিনি সাধারণ মানুষই হোন বা বিখ্যাত।”
মেয়র শিবসেনার। তাই বিতর্কে লেগেছে রাজনীতির রং-ও। কংগ্রেসের একটা মহল থেকে বলা হচ্ছে, সচিন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরের ঘনিষ্ঠ বলেই শিবসেনার রোষে পড়েছেন এবং সামান্য ব্যাপারকে এ ভাবে প্রচার করা হচ্ছে। যদিও শিবসেনার কার্যনির্বাহী সভাপতি উদ্ধব ঠাকরে আজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সচিন নিয়ম ভেঙেছেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। উদ্ধবের কথায়, “সচিন সব সময় কড়া নিয়ম মেনে চলেন। আম্পায়ার আউট না দিলেও আমরা তাঁকে মাঠ ছেড়ে যেতে দেখেছি। আমার মনে হয় না, সেই সচিনই এমন কাজ করবেন।” |
রাত পর্যন্ত সচিন অবশ্য এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেননি। মুম্বইয়ের ক্রিকেটমহল এবং সচিন ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, ‘অকুপেন্সি সার্টিফিকেট’-এর জন্য আইনমাফিক আবেদন করা হয়েছে। সার্টিফিকেটও পেয়ে যাওয়ার কথা। সচিন জানতেন না যে এই সার্টিফিকেট ছাড়া নিজের বাংলোতে থাকা যায় না। কর্পোরেশন থেকে বিবৃতির পর সচিনের বাংলোর স্থপতি প্রকাশ সাপরে গোটা ব্যাপারটা দেখছেন। প্রয়োজন হলে জরিমানার জন্য নির্দিষ্ট ৪২ হাজার টাকা দিয়েও দেওয়া হবে। বিএমসি-র সঙ্গে যুক্ত এক ইঞ্জিনিয়ার মুম্বই থেকে ফোনে বললেন, “সামান্য একটা সার্টিফিকেট নিয়ে এত জলঘোলার একটাই কারণ, মালিকের নাম সচিন তেন্ডুলকর। অহেতুক বিতর্কও সেই জন্য।”
গত কাল সচিন বান্দ্রার পেরি ক্রস রোডে তাঁর নতুন বাংলোয় উঠেছেন। হঠাৎই সংবাদসংস্থাকে বিএমসি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) রাজেশ কুকুনুর বলে দেন, “আমরা সচিনকে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট (ওসি) দিইনি। সেটা বিবেচনাধীন এবং পেতে দশ দিন সময় লাগে। সব কাগজপত্র ও অডিট চার্জ না পেলে সেটা দেওয়া সম্ভব নয়। ওসি ছাড়া বাংলোয় থাকতে শুরু করলে সচিনকে জরিমানা দিতে হবে।” আর এক কর্তা আবার যোগ করেন “বাংলোয় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই সচিনের ‘গৃহপ্রবেশ’ করা উচিত হয়নি।” |