|
|
|
|
ক্ষুব্ধ মোদীকে দিল্লি আনার চেষ্টা |
দৌড়ে নেই আডবাণী, বললেন গডকড়ীও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রথযাত্রার কথা ঘোষণা করে তিনি যা-ই ভেবে থাকুন, দল যে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে প্রধানমন্ত্রী পদে প্রার্থী হিসেবে ভাবছে না, তা আজ স্পষ্ট করে দিলেন বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী। আডবাণীর প্রস্তাবিত রথযাত্রার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করতে গিয়ে আজ নিতিন জানিয়েছেন, রথযাত্রার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।
আডবাণী-বিতর্ক চাপা দেওয়ার চেষ্টার মধ্যেই গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিড়ম্বনায় বিজেপি নেতৃত্ব। এমনিতেই আডবাণীর সঙ্গে মোদীর সম্পর্ক এখন যথেষ্ট তিক্ত। তার মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মোদী দলকে জানিয়েছেন, আগামিকাল থেকে দিল্লিতে শুরু হওয়া জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে তিনি আসবেন না। ‘ক্ষুব্ধ’ মোদীকে সামাল দিয়ে তাঁকে দিল্লিতে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন গডকড়ী নিজেই। |
|
ওজন কমানোর অস্ত্রোপচারের পরে আজই প্রথম দিল্লিতে এসেছেন নিতিন। আজ আডবাণীর প্রস্তাবিত রথযাত্রার মানচিত্র প্রকাশ করেন তিনি। যাত্রায় অযোধ্যার মতো বিতর্কিত স্থানগুলির পাশাপাশি সোমনাথকেও এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে আডবাণীর থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে নিতিন বলেন, “আডবাণীর রথযাত্রার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদের কোনও সম্পর্ক নেই।” তা হলে কি আডবাণী প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী হচ্ছেন না? গডকড়ীর জবাব, “নাগপুরে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের সঙ্গে দেখা করার পরে আমার বাড়িতে বসেই আডবাণী সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি জানান, জনসঙ্ঘের জমানা থেকে আজ পর্যন্ত তিনি যা পেয়েছেন, তা প্রধানমন্ত্রী পদের থেকেও অনেক বেশি। ফলে তিনিই এই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আপনারা যা জানতে চাইছেন, তা উনিই বলেছেন।”
দলের এক নেতার ব্যাখ্যা, সঙ্ঘ নেতৃত্ব যে আডবাণীকে প্রধানমন্ত্রী পদে আর প্রার্থী করতে চাইছেন না, গডকড়ী সেটি প্রকাশ্যে বলেননি ঠিকই। কিন্তু একই সঙ্গে এর পিছনে সঙ্ঘের যে কোনও হাত নেই, তা বোঝাতে বিষয়টি সুকৌশলে আডবাণীর ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছেন। ওই নেতা বলেন, “নিতিন
বোঝাতে চাইলেন, আডবাণী নিজেই তো আর প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে থাকতে চাইছেন না!”
নেতৃত্বের লড়াই থেকে আডবাণীর বিদায়ের সুর বেঁধে দিলেও মোদীকে নিয়ে নিতিনের বিড়ম্বনা বেড়েছে। যে ভাবে আডবাণী তাঁর এ বারের সোমনাথ যাত্রা বাতিল করেছেন, তাতে এমনিতেই খুশি নন মোদী। তার উপর, তাঁর সঙ্গে কথা না বলে যে ভাবে গুজরাত থেকে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনা গোড়ায় করেছিলেন আডবাণী, তা-ও ভাল ভাবে নেননি মোদী। তাঁর মনোভাব বুঝে রথযাত্রা গুজরাতের বদলে মোদী-বিরোধী নীতীশ কুমারের বিহার থেকে শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আডবাণী। এতে আডবাণীর সঙ্গে মোদীর দূরত্ব আরও বেড়েছে। এর মধ্যেই তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর সঞ্জয় জোশীকে যে ভাবে উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন গডকড়ী, তাতে মোদীর ক্ষোভ চরমে পৌঁছেছে বলে দলেরই একটি সূত্রের বক্তব্য।
মোদী অবশ্য দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, তাঁর নবরাত্রির উপবাস চলছে। এ সময় তিনি গুজরাতের বাইরে গিয়ে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তবে মোদীকে দিল্লি আনতে রাত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। গডকড়ী নিজেই বলেছেন, “প্রতি বারই কর্মসমিতির বৈঠকে মোদী থাকেন। এ বারে নবরাত্রি বলে তাঁর কিছুটা অসুবিধা রয়েছে। আমরা কথা বলে দেখছি।” মোদী-ঘনিষ্ঠ নেতা পুরুষোত্তম রূপালা
বলেন, “এমন নয়, নবরাত্রির সময় গুজরাতের বাইরে যান না মুখ্যমন্ত্রী। তবে নবরাত্রির সময় নিজের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে রাখেন। আমরা সকলেই তাঁর আসার জন্য অপেক্ষা করে আছি। কে বলতে পারে, শেষ মুহূর্তে তিনি চলেও আসতে পারেন!” |
|
|
|
|
|