বিজেপি-র সব্জি মান্ডি ধর্মতলায়, ‘ভীত’ পুলিশ-ক্রেতা |
সোৎসাহে বিজেপি-র মঞ্চ থেকে সব্জি কিনছেন উর্দি পরা পুলিশকর্মী! কিন্তু ক্যামেরা দেখলেই মুখ লুকিয়ে চিত্রসাংবাদিককে অনুরোধ করছেন, “দয়া করে আমার ছবি তুলবেন না।” বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইল ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেল!
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিজেপি এ দিন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মেট্রো চ্যানেলে মঞ্চ বেঁধে সব্জি বিক্রি করেছে। তবে বর্তমান ইউপিএ সরকারের আমলের দামে নয়। প্রাক্তন এনডিএ সরকারের আমলের দামে। অর্থাৎ অনেক সস্তায়। বিজেপি অবশ্য বর্তমান বাজার-দরেই ওই সমস্ত সব্জি কিনেছিল। তার পর দলীয় তহবিল থেকে ভর্তুকি দিয়ে সেগুলি কম দামে বিক্রি করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই বাজারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন পথচলতি মানুষ। এমনকী, পুলিশরাও। যাঁরা ওই কর্মসূচিতেই আইনশৃঙ্খলা সামলানোর দায়িত্বে। তবে আম আদমি ক্রেতার সঙ্গে তাঁদের একটা তফাৎ ছিল। আম আদমি কেনাকাটা করছিলেন ‘নির্ভয়ে’। পুজোর মুখে বিরাট দাঁও মারার খুশিতে। আর পুলিশকর্মীরা কেনাকাটা করছিলেন ‘সভয়ে’। চিত্রসাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখলেই লুকিয়ে ফেলছিলেন মুখ!
কিন্তু সবজি বাজার তো মাওবাদী-মোকাবিলার মতো কোনও কাজ নয়, যে তাতে পুলিশোচিত ‘সাহস’ লাগবে! নিরীহ আম আদমিসুলভ সাহস থাকলেই চলে! সেখানে পুলিশকর্মীরা এত ভয় পাচ্ছেন কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্মী বললেন, “টিভিতে বা কাগজে ছবি দেখা গেলে প্রশ্ন উঠতে পারে, কর্তব্যরত অবস্থায় ব্যক্তিগত কাজ করেছি কেন? এমনকী, সরকারের বিরোধিতা করছি, এই অভিযোগও তোলা হতে পারে। কিন্তু আমরা সামান্য বেতন পাই। এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে বাজারে গেলে এমনিতেই নাভিশ্বাস ওঠে। তার উপরে পুজোর সময়ে বাড়তি কেনাকাটার খরচ। ফলে এখানে এত সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না!”
ধর্মতলায় এ দিন বিজেপি-র ‘সব্জি মান্ডি’তে আলু ২ টাকা কেজি, পটল, ঢ্যাঁড়শ, লাউ, পেঁয়াজ ৫ টাকা কেজি, বেগুন ৬ টাকা কেজি, উচ্ছে ৭ টাকা কেজি এবং কাঁচা লঙ্কা ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ নিজেই বিক্রিবাটা করেন। দলের অন্য নেতারাও ছিলেন। রাহুল বলেন, “এনডিএ এবং ইউপিএ আমলের সবজির দামের তফাৎটা সকলকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।” |