আমজনতার দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ফের সেই ১০ শতাংশ ছুঁইছুঁই অবস্থানেই ফিরে গেল খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশছোঁয়া দামে রাশ টানতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গত দেড় বছরে টানা ১২ বার সুদ বাড়ানোর পরেও। তবে এই দুশ্চিন্তা পাশে সরিয়ে রেখে ইউরোপের আর্থিক সঙ্কট মেটার আশায় উঠেছে শেয়ার বাজার। এই উত্থানে ইন্ধন জুগিয়েছে ডেরিভেটিভ লেনদেনের শেষ দিনে শেয়ার কেনার তাগিদও।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৭ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ২০১০ সালের এই একই সময়ের সাপেক্ষে দাঁড়িয়েছে ৯.১৩%। ঠিক আগের সপ্তাহের ৮.৮৪ শতাংশের তুলনায় যা কিছুটা বেশি। পেট্রোল, বিমান জ্বালানি (এটিএফ) এবং ন্যাপথার দাম বৃদ্ধির দরুন ঊর্ধ্বগামী জ্বালানি সূচকও। ১৩.৯৬% থেকে বেড়ে আলোচ্য সপ্তাহে তা হয়েছে ১৪.৬৯%।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বার বার সুদ বাড়ানোর পরও খাদ্যপণ্যের এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “বিষয়টি গুরুতর।” প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজন আবার মনে করেন, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে তার জোগান বাড়ানো জরুরি।
এক দিকে, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে ফের এক দফা সুদ বৃদ্ধির আশঙ্কা। আর অন্য দিকে, এশিয়ার পড়তি বাজার। মূলত এই দুই কারণে এ দিন খোলার পর দ্রুত পড়ছিল ভারতের শেয়ার বাজার। কিন্তু এর পরই ইঙ্গিত মেলে যে, গ্রিস-সহ সমগ্র ইউরো জোনের আর্থিক সঙ্কট মেটাতে ৪৪ হাজার কোটি ইউরোর ‘মেগা’ ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করা যাতে সম্ভব হয়, সে বিষয়টি বিবেচনা করছে জার্মানি। জানা যায়, ওই তহবিলে ২১,১০০ কোটি ইউরো পর্যন্ত দিতে পারে তারা। এর পরই উঠতে শুরু করে বাজার। ভারতে শেয়ার বাজার বন্ধ হওয়ার পর এই ত্রাণ প্রকল্পের প্রস্তাব পাশও হয়েছে জার্মান সংসদে। তা ছাড়া মাসের শেষ বৃহস্পতিবার হওয়ায়, আজ ছিল ডেরিভেটিভ লেনদেনের শেষ দিন। তাই প্রতিশ্রুত শেয়ার বা টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য তাগিদ ছিল শেয়ার কেনারও। এবং মূলত এই দুই কারণেই এ দিন ২৫২.০৫ পয়েন্ট উঠেছে সেনসেক্স। থিতু হয়েছে ১৬,৬৯৮.০৭ অঙ্কে। |