এক সঙ্গে ১৪৫টি ‘প্যান্ড্রোল ক্লিপ’ উধাও হয়ে গিয়েছে বর্ধমান-কাটোয়া ন্যারো গেজ লাইনে। যদিও সময় মতো বিষয়টি নজরে আসায় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই লাইনে রেলের ‘কি-ম্যান’ মনোরঞ্জন প্রামাণিক দেখেন, জাজিগ্রাম পলিক্লিনিক কলেজের কাছে একের পর এক ‘প্যান্ড্রোল ক্লিপ’ নেই। বিপদ বুঝে কাটোয়ামুখী একটি ট্রেনকে লাল ‘ব্যানার ফ্ল্যাগ’ দেখিয়ে কাটোয়ার গাঙ্গুলিডাঙার কাছে আটকে দেন তিনি। ফলে, সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রেল কর্তৃপক্ষ জানান, ‘বর্ধমান-কাটোয়া লাইন’ বলে পরিচিত হলেও লাইনটি বর্তমানে কাটোয়া থেকে বলগোনা পর্যন্ত রয়েছে। ভাতারের বলগোনা থেকে বর্ধমান পর্যন্ত লাইনটি ব্রড গেজে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রতি দিন চার জোড়া ট্রেন যাতায়াত করে। |
পুজোর ঠিক আগে বৃহস্পতিবার কাটোয়ামুখী ট্রেনে ভালই ভিড় ছিল। কাটোয়ার জাজিগ্রাম রেলগেটের কাছ থেকে শ্রীখণ্ড পর্যন্ত লাইন পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা কি-ম্যান মনোরঞ্জনবাবুর হঠাৎ চোখে পড়ে, প্রায় দেড় কিলোমিটার ধরে ১৪৫টি প্যান্ড্রোল ক্লিপ উধাও। তাঁর কথায়, “আমি সকাল ৬টায় কাজে যোগ দিয়ে দেখি, পলিক্লিনিক কলেজের কাছ থেকে গাঙ্গুলিডাঙা গ্রামের কাছ পর্যন্ত একটি লাইনের প্যান্ড্রোল ক্লিপ নেই।” সঙ্গে-সঙ্গে তিনি কাটোয়া স্টেশনে খবর দেন। তত ক্ষণে একটি ট্রেন গাঙ্গুলিডাঙা পেরিয়ে জাজিগ্রামের দিকে রওনা হয়ে গিয়েছিল। মনোরঞ্জনবাবু লাল পতাকা দেখিয়ে সেটিকে থামান। ট্রেনের চালক আব্দুল মান্নান বলেন, “লাল পতাকা দেখেই বুঝতে পারি কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। ট্রেন থামিয়ে দিই। প্রায় এক ঘণ্টা পরে লাইন ঠিক হওয়ার পেয়ে ধীরে ধীরে জাজিগ্রাম গেট পার হই।” ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কাটোয়ার সেকশন ইঞ্জিনিয়ার (রেললাইন) সুনীল সরকারের নেতৃত্বে লাইন পরিদর্শন চলছে। তখনও প্যান্ড্রোল ক্লিপ লাগানো হয়নি। এর মধ্যেই ওই লাইন দিয়ে বলগোনামুখী ট্রেন যায়। সুনীলবাবু আশ্বস্ত করেন, “ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন গেলে অসুবিধা হয় না। তবে যাত্রী সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” বর্ধমানে রেল রক্ষী বাহিনীর কাছে মনোরঞ্জনবাবুই প্যান্ড্রোল ক্লিপ চুরির অভিযোগ দায়ের করেছেন। কাটোয়ার আরপিএফ ইনস্পেক্টর সমরেশ রায়ও ঘটনাস্থলে যান। যদিও আরপিএফ সূত্রের খবর, ওই জায়গাটি কাটোয়ার নয়, বর্ধমানের এক্তিয়ারভুক্ত। বর্ধমানের আরপিএফ ইনস্পেক্টর এস ভগৎ বলেন, “আমাদের ধারণা, স্থানীয় দুষ্কৃতীরাই এতে যুক্ত। তবে এক দিনেই এই চুরি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” কাটোয়ার স্টেশন ম্যানেজার দিলীপ মণ্ডল বলেন, “আমরা বিষয়টি ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছি।”
|