ভাঙা হবে প্রায় সব থানা খোঁজ চলছে দক্ষ অফিসারের
দিল্লি পুলিশের আদলে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটকে ঢেলে সাজাতে চাইছে পুলিশ। তার পরিকল্পনা এক রকম চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আপাতত শুধু মহাকরণ থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার অপেক্ষা।
গত কয়েক বছরে রাজ্যের সবচেয়ে বেশি অপরাধপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১ সেপ্টেম্বর বর্ধমান জেলা পুলিশের থেকে আলাদা করে কমিশনারেট গড়া হয়েছে। কিন্তু এখনও গোটা ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হয়নি। বিধানসভা নির্বাচনের পরে অবৈধ কয়লার কারবার কিছুটা স্তিমিত হলেও মাফিয়ারা যে কোনও সময়ে ফের মাঠে নামতে পারে। সম্প্রতি একের পর এক খুন ও সংঘর্ষের ঘটনাও পুলিশকে বেকায়দায় ফেলেছে।
এই পরিস্থিতিতেই থানাগুলিকে ভেঙে এলাকা ছোট করে ‘নিয়ন্ত্রণ’ বাড়াতে চাইছে কমিশনারেট। গত সোমবার মহাকরণে স্বরাষ্ট্রসচিবের ঘরে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায়-সহ পদস্থ অফিসারেরা সেখানে হাজির ছিলেন। পুলিশকর্তারা ইতিমধ্যে প্রাথমিক ছাড়পত্রও দিয়েছেন। বর্তমানে আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমা মিলিয়ে ১৫টি থানা রয়েছে। এর মধ্যে দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ ও কোকওভেন বাদে বাকি সমস্ত থানার এলাকা পুনর্বিন্যাস করা হবে বলে জানা গিয়েছে। নতুন থানা হবে ১৩টি। মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮-এ। প্রতিটি থানায় ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের দায়িত্বে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, কমিশনারেটের অন্তর্গত কোনও থানার দায়িত্বে আর ‘ওসি’ থাকবেন না, থাকবেন ‘আইসি’। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “গোটা পরিকল্পনা মহাকরণে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ চলেছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু করার চেষ্টা হচ্ছে।”
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, আগামী ১ নভেম্বর থেকেই বর্ধমান শিল্পাঞ্চলের কমিশনারেটে নয়া ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। প্রায় ১৬০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গড়া এই এলাকায়া প্রায় ৩১ লক্ষ মানুষের বাস। বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে আন্তঃরাজ্য সীমানাও রয়েছে। ফলে গোটা বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে স্বরাষ্ট্র দফতর।
রাজ্য প্রশাসনের কর্তাদের মতে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী পুলিশ কমিশনারেট পূর্ণ জেলার মর্যাদাই পায়। দুর্গাপুর, অন্ডাল, রানিগঞ্জ ও আসানসোল (দক্ষিণ) থানার দায়িত্বে ইতিমধ্যেই আইসি পদমর্যাদার অফিসারেরা রয়েছেন। অন্যত্রও তা-ই হবে। দু’টি বাদে বাকি প্রতিটি থানা এলাকাকে দু’ভাগ করা হবে। রূপনারায়ণপুর, নিয়ামতপুর ও বরাকরে হবে নতুন থানা। তবে আপাতত ওই সব এলাকায় যে আউটপোস্ট রয়েছে সেখান থেকেই কাজ চলবে। শুধু দুর্গাপুর মহকুমার কাঁকসা ও বুদবুদ থানা আপাতত বর্ধমান পুলিশ সুপারের অধীনেই থাকছে।
আপাতত যে পরিকল্পনা হয়েছে সেই অনুযায়ী, কমিশনারের পরেই থাকবেন ডিআইজি পদমর্যাদার এক জন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার। এ ছাড়া পূর্ব, পশ্চিম ও মধ্য এই তিন ডেপুটি কমিশনারের পদও তৈরি হবে। পাশপাশি থাকছে আরও চারটি ডেপুটি কমিশনারের পদ ডিসি (ট্রাফিক), ডিসি (ডিডি), ডিসি (সদর) এবং ডিসি (আইবি)। ওই চার পদে থাকবেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার অফিসারেরা। ১২টি অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনারের পদও তৈরি করা হবে। সেগুলিতে নিয়োগ করা হবে ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসারদের। সব মিলিয়ে ৮০০ কনস্টেবলের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এখনই কনস্টেবল পদে নিয়োগ সম্ভব নয় বলে রাজ্য প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। আসানসোলের প্রতিটি থানার জন্য ইতিমধ্যেই ‘দক্ষ’ অফিসারদের খোঁজ শুরু হয়েছে। অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে জেলায় পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকা অফিসারদেরই। সম্প্রতি সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর পদে উন্নীত হওয়া অফিসারদেরও নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, নতুন ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে ভাল পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.