হিংসা বন্ধে আর্জি মুকুলের, তবে মাওবাদীরা রইল উহ্যই
ঙ্গলমহলে মাওবাদীরা ফের খুন-নাশকতা শুরু করায়, বিশেষ করে গত মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের সাপধরায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা লালমোহন মাহাতো খুন হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক স্তরে ‘কঠোর’ ব্যবস্থারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে মাওবাদীদের ‘খুনের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের রাজ্য ও জেলাস্তরের নেতাদের। ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রাম-সহ জঙ্গলমহলে ফের শুরু হয়েছে যৌথ বাহিনীর চিরুনি তল্লাশি। আর শনিবার ‘হিংসার বিরুদ্ধে শান্তি-পদযাত্রা’ করল তৃণমূল। প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকদুই স্তরেই যে মাওবাদী-মোকাবিলা চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এ দিন তাঁর দলের কর্মসূচিতেই তা স্পষ্ট।
আবার মাওবাদীদের সঙ্গে সম্ভাব্য আলোচনার পথও যে রাজ্য সরকার পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চাইছে না, তারও ইঙ্গিত মিলেছে তৃণমূলের এ দিনের কর্মসূচিতে। মাওবাদী-হানায় দলীয় নেতা খুনের প্রতিবাদে পদযাত্রা ও পথসভায় কিন্তু এক বারের জন্যও মাওবাদীদের নামোচ্চারণ করেননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়। তাঁর বক্তব্য, “কিছু মানুষ নৃশংস ভাবে লালমোহন মাহাতোকে খুন করেছে। জঙ্গলমহলের জন্য বিশেষ উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়ন ব্যাহত করতেই কিছু লোক হিংসার আবহ তৈরি করতে চাইছে। আমরা কিন্তু শান্তি ও উন্নয়নের জন্যই লড়াই করব।”
শনিবার ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের শান্তি মিছিল। ছবি তুলেছেন দেবরাজ ঘোষ।
রাজ্য সরকার জঙ্গলমহলের উন্নয়নে ইতিমধ্যেই কী পরিকল্পনা করেছে, পদযাত্রা-শেষের পথসভায় তারও ফিরিস্তি দেন মুকুলবাবু। মাওবাদী-মদতে বছর তিনেক আগে জনগণের কমিটির উত্থান যে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে, সে কথা মনে রেখে মুকুলবাবুর আবার দাবি, “নতুন সরকার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরে কিন্তু অকারণে পুলিশি হয়রানি বন্ধ হয়েছে।”
দলের শীর্ষনেতার এই বক্তব্য শান্তি-প্রক্রিয়া জিইয়ে রাখার স্বার্থেই বলে ব্যাখ্যা তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের। নেতারা নাম না-করলেও পদযাত্রায় সামিল কয়েক হাজার মানুষের কারও কারও হাতে অবশ্য মাওবাদী হিংসার বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড দেখা গিয়েছে। মাওবাদী-বিরোধী ‘জনজাগরণ মঞ্চে’র নেতা নিশীথ মাহাতো জানিয়েছেন, এ বার তাঁরা আলাদা ভাবেই মাওবাদী হিংসা-বিরোধী জনসভা করবেন। তৃণমূল নেতারা মাওবাদীদের নাম না-করায় যে তাঁরা ‘হতাশ’, তা-ও জানিয়েছেন এই মঞ্চ-নেতা।
এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রথমে পুকুরিয়ায় যান মুকুলবাবু। এখানেই নিহত হয়েছিলেন লালমোহনবাবু। নিহত নেতার বাড়ি গিয়ে পরিজনেদের সমবেদনা জানান তিনি। এর পর হত্যাস্থলে তৈরি ‘শহিদ বেদি’তে মাল্যার্পণ করেন। তার পর পুকুরিয়া থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য মন্ত্রিসভার তিন সদস্যও--পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, স্বনিযুক্তি প্রকল্প ও স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিষয়ক মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। ছিলেন গোপীবল্লভপুরের চূড়ামণি মাহাতো-সহ জঙ্গলমহলে দলের অন্য বিধায়কেরাও।
এ ছাড়াও অধুনা রাজ্যসভার সাংসদ দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনন্দ সান্যালের মতো বিশিষ্টজনেরাও ছিলেন। তবে এত দিন জঙ্গলমহলে দলের যে কোনও কর্মসূচিতে যাঁকে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যেত, তমলুকের সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সেই শুভেন্দু অধিকারী ছিলেন গরহাজির। শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “দলের কাজেই অন্যত্র ব্যস্ত ছিলাম বলে এ দিন ঝাড়গ্রামে আর যেতে পারিনি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.