বিদায়ঘণ্টার মধ্যেই শুরু ডার্বি বনাম সচিব
ডার্বি-বিসর্জন দিয়ে মোহনবাগানে নতুন কোচের আগমনীর মাঝখানে শক্ত ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে ক্লাবের প্রধান স্পনসর ইউ বি গ্রুপ। কিন্তু শনিবার ডার্বির নানা বিস্ফোরক মন্তব্যের পর আরও প্রবল হল কোচ-পরিবর্তনের হাওয়া। সবুজ-মেরুনের বিদেশি কোচ আরও গাড্ডায় ফেললেন নিজেকে।
“অ্যাতো সকাল-সকাল। কী ব্যাপার, নতুন কোচ এল কি না দেখতে এসেছেন?”
সাংবাদিকদের দেখে মোহনবাগান মাঠের গেট ছুঁয়ে আবার ফিরে এলেন ডার্বি। ব্যারেটোদের প্র্যাক্টিসের চেয়েও যেন বেশি জরুরি কথাটা বলার জন্য। ঠোঁটের কোণে হাল্কা হাসি থাকলে কী হবে, ভিতরের চাপা রাগ কিন্তু লুকোতে পারছেন না!
ফেড কাপে চরম বিপর্যয়ের পর থেকেই ডার্বির বদলি হিসেবে ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্যের নাম জোরালো ভাবে ঘোরাফেরা করছে মোহন-তাঁবুতে। এ রকম উল্টো হাওয়ার মধ্যেও শনিবার সকালে মোহনবাগান প্র্যাক্টিসে নেমে পড়লেন ডার্বি। তা হলে কি মোহনবাগান কোচ তিনিই থাকছেন? নাকি ডার্বির সরে যাওয়াটা শুধুই সময়ের অপেক্ষা? প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই অবশ্য এ দিন অভিযোগ আর পাল্টা-অভিযোগে সরগরম মোহনবাগান তাঁবুতে বেঁধে গেল ক্লাব সচিব বনাম কোচের লড়াই।
ডার্বির প্রথম অভিযোগ, “দলে গতিময় ফুটবলারের অভাব। যা বদলানো এখন আর সম্ভব নয়। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড কিংবা বার্সেলোনায় প্রথমে কোচ নির্বাচন হয়। তার পর কোচ নির্বাচন করেন ফুটবলারদের। এখানে তা হয় না। আগেই দল তৈরি করে কোচকে দেওয়া হয়।” সচিব অঞ্জন মিত্র পাল্টা বলছেন, “একদম শেষ সময়ে উনি কোচ হয়েছেন। ডার্বির জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকলে, এ বছর আর দলই তৈরি করতে পারতাম না।”
সমস্যার জালে ডার্বি। শনিবার মোহনবাগান মাঠে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বিদেশি কোচের দ্বিতীয় অভিযোগ, “রক্ষণে লোকের অভাব। বাধ্য হয়ে তাই প্রথম দলে স্টোরিকে রেখে দিতে হয়েছিল। যদিও স্টোরি আমার প্রথম পছন্দ নয়। জাপানের এক ডিফেন্ডারকে খুব পছন্দ হয়েছিল। কিন্তু ক্লাবের বাজেটের জন্য তাঁকে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এমনকী পুণেতে ওয়াহিংডো এবং লাজংয়ের বিরুদ্ধে এ কারণেই আমাকে ৩-৫-২ ছকে খেলতে হয়েছে।” জবাবে মোহন-সচিব বললেন, “ডার্বির ওপর আমরা বিশ্বাস করেছিলাম। উনিই তো দায়িত্ব নিয়ে স্টোরিকে এনেছেন। এখন চেঁচাচ্ছেন কেন। একটা বিদেশি ফুটবলারের মান যদি ভারতীয় ফুটবলারের থেকে বেশি না হয়, তা হলে তাঁকে দলে নিয়ে লাভ কী। আর বাজেট তো অবশ্যই একটা ব্যাপার। সেটাকে ছাপিয়ে তো আর দল গড়তে পারি না।”
ডার্বির তৃতীয় অভিযোগ, “ফেডারেশন কাপের মধ্যে আমার সঙ্গে কোনও কর্তাই যোগাযোগ করেননি। কেউ জানতেও চাননি, কেন এ রকম খারাপ ফল হয়েছে।” জবাবে অঞ্জন বলছেন, “ফেডারেশন কাপের সময় ডার্বির সঙ্গে কথা না হলেও ম্যানেজারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গিয়েছি। টিমের সুবিধে-অসুবিধে জানতে। ডার্বির কোনও সমস্যা থাকলে, আমাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে পারতেন। বারবার পরিকাঠামো, মাঠ নিয়ে প্রেসের কাছে মুখ খুলে লাভ কী? ডার্বি আসলে বুঝতে পারেননি, ভারতীয় ফুটবলের মান এত বেড়ে গিয়েছে। তাই এখানে এসে হকচকিয়ে গিয়েছেন।”
ফেড কাপে জঘন্য পারফরম্যান্সের জন্য ফুটবলারদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ডার্বি। তাঁর কথায়, “কম হোমওয়ার্কের জন্য দল ভোগেনি। ভুগেছে গোল নষ্টের জন্য। আই লিগে নামার আগে একটা ভাল টুর্নামেন্ট খেলার প্রয়োজন আছে। কিন্তু ক্লাবের নীতির ফলে ডুরান্ডেও খেলতে পারছি না আমরা।”
টিমের এ সব ফাঁকফোকর ভরাট করার গুরুদায়িত্ব এ বার যাঁর ঘাড়ে চাপার প্রবল সম্ভাবনা সেই সুব্রত ভট্টাচার্যকে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাওয়া হল, ডার্বির সব অভিযোগ কি সত্যি? সুব্রত এক কথায় উত্তর সারলেন “আমি এ সব নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”
তবে যে রকম উত্তেজক পরিস্থিতি, পুজোর আগেই কোচ বদল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মোহনবাগান। এ মাসের শেষে প্রধান স্পনসর ইউ বি গ্রুপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসছেন কর্তারা। তার পরে ডার্বি-অধ্যায়ের শেষ পর্ব জানা যাবে। সমস্যা হল, ইউ বি থেকে ডার্বিকে নিয়োগ করা হয়েছে। তাই তাঁকে এত সহজে ছেঁটে ফেলতে পারছে না মোহনবাগান। তবে শোনা যাচ্ছে, সেই বৈঠকে ইউবি-কে বোঝানোর প্রাণপণ চেষ্টা করবেন ক্লাব সচিব যে, কেন ডার্বিকে সরানো দরকার। ডার্বি আবার আর্সেনাল কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গারের তুলনা টেনে বলছেন, “যা হাতে নেই, সেটা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবে নিজে থেকে সরব না। সরিয়ে দিলে আলাদা কথা। তবে এখন পর্যন্ত আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি কর্তাদের। কোনও ফোনও আসেনি।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.