ফেসবুকে বিধান পরিষদের চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সাসপেন্ড হতে হল পরিষদেরই দুই কর্মীকে। জেডিইউয়ের ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধান পরিষদ সদস্য তথা সাহিত্যিক প্রেমকুমার মণিকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে ফেসবুকে মন্তব্য করেছিলেন দুই কর্মী, অরুণ নারায়ণ এবং মুসাফির বৈঠা। তার জেরেই সাসপেন্ড করা হয়েছে দু’জনকে। যদিও এ ব্যাপারে বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান তারাকান্ত ঝা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর দাবি, “বিষয়টি এখন বিচারাধীন। এ ব্যাপারে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
চলতি মাসের প্রথম দিকে পার্টিবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে প্রেম কুমার মণির বিধান পরিষদের সদস্যপদ খারিজের আর্জি জানিয়েছিল জেডিইউ। ওই আবেদনে সাড়া দিয়ে গত সপ্তাহে প্রেম কুমার মণির সদস্যপদ খারিজ করে দেন বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান। জনপ্রিয় সাহিত্যিকের এই হেনস্থার সমালোচনা করে এর পরেই ফেসবুকে মুসাফির বৈঠা লেখেন, “প্রদীপের নীচেই সবচেয়ে বেশি অন্ধকার। বিহার বিধান পরিষদের ক্ষেত্রেও এ প্রবাদ কার্যকর। যে বিধান পরিষদে আমি চাকরি করি, সেখানেই বিধানের তোয়াক্কা কেউ করে না।”
অন্য দিকে, অরুণ নারায়ণ তাঁর ফেসবুকের ‘ওয়াল’-এ লেখেন, “নীতীশ কুমারের গণতন্ত্রে, বিরোধিতা করা মানে ওঁর তৈরি ফ্যাসিবাদে শহিদ হয়ে যাওয়া। আজ সন্ধ্যায় খবর পেলাম প্রেমকুমার মণির সদস্যপদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু প্রেম কুমার মণির বিরুদ্ধে পার্টি-বিরোধী কার্যকলাপের কোনও প্রমাণ জেডিইউ পেশ করতে পারেনি। তবে নীতীশের সঙ্গে মতানৈক্যের বেশ কিছু প্রমাণ পেশ করা হয়েছে। মতানৈক্য তো গণতন্ত্রের স্তম্ভ। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যানের জেডিইউয়ের প্রতি নরম মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।”
ফেসবুকে এই দু’টি মন্তব্যের খবর পাওয়ার পরেই দুই কর্মীকে সাসপেন্ড করেন চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে দু’জনকেই কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছে। অরুণ নারায়ণ চেয়ারম্যানের এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো হতাশ। তাঁর কথায়, “আমরা তো নাগরিকও। সামাজিক নেটওয়ার্কিং-এও সরকার নজরদারি চালাবে!” অরুণ জানিয়েছেন, এখনই তাঁরা বিধান পরিষদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবেননি। তবে শেষ প র্যন্ত তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলে তাঁরাও আইনের পথে হাঁটবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা আইনি পরামর্শ নিয়েছি। অপেক্ষা করছি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য। তার পরে যা করার করব।” |