কোচবিহার জেলার ‘চাপে’ উদয়ন-বিতর্কে আপাতত পিছু হটতে হল ফরওয়ার্ড ব্লক রাজ্য নেতৃত্বকে।
দলের রাজ্য দফতরে বৃহস্পতিবার ফব-র রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে বৈঠকে গোটা কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীই এক সুরে জানিয়েছে, দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য থাকার মধ্যে ‘অস্বাভাবিক’ কিছু নেই। ওই পর্ষদে থেকেই তিনি উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের প্রশ্নে সরব হতে পারবেন। ফব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ বৈঠকে জেলা নেতৃত্বকে জানান, তাঁদের মতামতকে ‘যথাযোগ্য গুরুত্ব’ দেওয়া হবে। পরে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকেও আলোচনা হয়, আপাতত আর বিষয়টি নিয়ে এগোনো হবে না।
ফব নেতৃত্বের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতার নেতৃত্বাধীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য করা হয়েছিল উদয়নবাবুকে। উত্তরবঙ্গ থেকে উদয়নবাবুই ওই কমিটিতে একমাত্র বাম প্রতিনিধি। মমতা এই ভাবে বেছে বেছে বিধায়কদের বিভিন্ন কমিটিতে মনোনীত করে বাম শিবিরে ‘ভাঙন’ ধরাতে চাইছেন বলে যুক্তি দেখিয়ে গোড়াতেই বিষয়টির বিরোধিতা করেছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কিন্তু তার পরেও উদয়নবাবু মুখ্যমন্ত্রীর পৌরোহিত্যে পর্ষদের বৈঠকে অংশগ্রহণ করায় ফব-য় সমস্যা ঘনীভূত হয়। কমিটি থেকে সরে না-দাঁড়ালে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার কথাও বিবেচিত হচ্ছিল। কিন্তু জেলা নেতৃত্ব তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় উদয়নবাবু পর্ষদের সদস্য হিসাবে আপাতত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
উদয়নবাবুই ফব-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক। জেলায় বামফ্রন্টের চার জন বিধায়কই ফব-র। এই পরিস্থিতিতে উদয়নবাবুর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করলে কোচবিহারে তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা ছিল। সব বিবেচনা করে রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে আর এগোতে চাইছেন না বলে দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা। খোদ উদয়নবাবু বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপরে বিতর্কে তাঁর বক্তৃতার উল্লেখ করে বলেন, উত্তরবঙ্গে যে সব দলের বিধায়ক আছেন, প্রত্যেকের প্রতিনিধিকেই ওই পর্ষদে রাখার পক্ষে তিনি সওয়াল করেন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ১১ সদস্যেরই বক্তব্য শোনা হয়েছে। পুজোর পরে প্রয়োজন হলে আবার আলোচনা হতে পারে।” |