|
|
|
|
জীবন হাতে জলের নীচে রাস্তা হাতড়েই যাতায়াত বেলুনিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢোলাহাট |
গ্রামে ঢোকার মূল রাস্তার দু’ধারে পুকুর। বর্ষার বৃষ্টিতে পুকুর উপচে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তা ধসে গিয়ে একাকার হয়ে গিয়েছে দু’টি পুকুর। ফলে কোথায় রাস্তা আর কোথায় পুকুর তা বোঝা দুষ্কর। তবে দিনের পর দিন ঝুঁকি নিয়ে জলের নীচে রাস্তা হাতড়ে হাতড়েই চলছে যাতায়াত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের ঢোলাহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলুনি মোড় থেকে বেলুনি গ্রামে ঢুকতে গেলে এ ভাবেই যাতায়াত করতে হচ্ছে। এলাকার মানুষের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে জেলা প্রশাসন সর্বত্র সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু সমস্যা থেকেই গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গয়েছে, সপ্তাহ তিনেক আগে প্রবল বর্ষায় গ্রামে ঢোকার মুখে ওই মাটির রাস্তার প্রায় দেড়শো ফুট ভেঙে গিয়ে পুকুরে নেমে গিয়েছে। ফলে কোথাও হাঁটুসমান আবার কোথাও কোমর সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। তার উপর দু’পাশের পুকুরই উপচে এককার হয়ে গিয়েছে। ফলে কোথায় রাস্তা আর কোথায় পুকুর তা বোঝাই দুষ্কর। একটু অসাবধান হলেই পুকুরে পড়ে গিয়ে সলিলি সমাধির আশঙ্কা। তিন ফুট চওড়া ওই রাস্তা দিয়ে নিত্য অতি সাবধানে বাচ্চা থেকে বুড়ো সকলকে চলাফেরা করতে হচ্ছে। জলে ডোবা রাস্তা দিয়ে রোজ স্থানীয় একটি প্রাইমারি ও হাই মাদ্রাসার পড়ুয়াদের যাতায়াত করতে হয়। পাছে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে এই আতঙ্কে দিন কাটে তাদের অভিভাবকদের। জলের নীচে রাস্তা হাতড়াতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই পা হড়কে জলে পড়ে গিয়ে ভিজে যাচ্ছে পড়ুয়াদের জামাকাপড়, বইপত্তর। দিনের বেলায় কোনওরকমে যাতায়াত করা গেলেও রাতের অন্ধকারে যাতায়াত করাই দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর সাপখোপের ভয় তো আছেই।
বেলুনি গ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় তিন হাজার মানুষের বাস। স্থানীয় বাসিন্দা মইদুল্লা কয়াল, মনোরমা বিবি, মতিউর রহমান হালদার, নজরুল গায়েনরা জানালেন, “মাদ্রাসা ও প্রাথমিক স্কুল মিলিয়ে মোট সাতশো ছাত্রছাত্রী দৈনিক ওই রাস্তায় যাতায়াত করে। বেশিরভাগ দিনই কেউ না কেউ পড়ে যায়। জামাকাপড়, বইপত্র ভিজে একাকার হয়ে যায়। ফলে অনেকের পড়তে যাওয়া হয় না। আত্মীয় স্বজনেরাও রাসতার এমন অবস্থায় আসা যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পঞ্চায়েত ও স্থানীয় বিধায়ককে বহুবার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু দুর্ভোগ কমেনি।”
ঢোলাহাট পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাকিবিল্লা হালদার বলেন, “ওই রাস্তায় যাতায়াতের জন্য আপাতত বালির বস্তা ফেলার ব্যবস্থা হচ্ছে। পরে পাকাপাকি ভাবে সারানোর ব্যবস্থা করা হবে।” কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের স্বার্থে ওই মাটির রাস্তায় ইট পাতার জন্য ইতিমধ্যেই তিন লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছে। জল নামলে কাজ শুরু করা হবে।” |
|
|
|
|
|