|
|
|
|
ভেস্তে গেল মন্ত্রীর বৈঠক |
বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি-বৃদ্ধি অথৈ জলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিক, মালিক এবং সংগঠনগুলির সঙ্গে রাজ্য শ্রমমন্ত্রীর বৈঠক শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেল বৃহস্পতিবার।
মহাকরণে শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর ঘরে এ দিন ঘণ্টা তিনেক ধরে চলা ওই বৈঠকে মুর্শিদাবাদের বিড়িশিল্পের সঙ্গে যুক্ত সিটু, আইএনটিইউসি-সহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন জেলার বিড়ি মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও। এর আগে প্রশাসনিক পর্যায়ে এ ব্যাপারে ৫ দফা বৈঠক হয়েছে জেলায়। বৈঠকের শেষে পূর্ণেন্দুবাবু বলেন, “বিড়ি শিল্প স্বীকৃত শিল্প। সেক্ষেত্রে ওই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সব শ্রমিকদেরই সরকার নির্দিষ্ট হারে নুন্যতম মজুরি দিতে হবে বিড়ি মালিকদের। এর বাইরে কোনও বিকল্প মজুরি চুক্তি কার্যকরী করতে কোনও ভূমিকা নেবে না রাজ্য সরকার। শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের এ কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১০ বার শ্রমিক ও মালিক চুক্তিতে মজুরি বেড়ে বর্তমানে তা ৫৫ টাকা চালু রয়েছে।
তিনি বলেন, “অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রের যাবতীয় নিয়ম বিড়ি শিল্পের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এত দিন ধরে শ্রমিক ও মালিক সংগঠন গুলি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করে যে সব মজুরি চুক্তি করেছে কার্যত তা শ্রমিকদের বঞ্চনা ছাড়া কিছু নয়। এ পর্যন্ত কোনও দিন বিড়ি শিল্পে বোনস দেওয়া হয়নি। বর্তমান রাজ্য সরকার ওই ব্যবস্থার পক্ষপাতী নয়।”
ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন আইএনটিইউসি-র রাজ্য কমিটির সদস্য ও মুর্শিদাবাদ জেলা বিড়ি মালিক সংগঠনের সম্পাদক বাদশার আলি। তিনি বলেন, “শ্রমিক সংগঠনগুলির সরকার নির্দিষ্ট নূন্যতম মজুরির দাবি রাজ্য শ্রমমন্ত্রী সমর্থন করেছেন। তবে আগামী এক বছর শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য সংগ্রহের পর এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি জানান।” বর্তমানে মুর্শিদাবাদে বিড়ি শিল্পে ৫৫ টাকা মজুরি চালু রয়েছে প্রতি হাজার বিড়ি বাঁধাইয়ে। প্রতি বছরই এ সময় মজুরি বাড়ে। তাই অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য মজুরি বৃদ্ধির চুক্তির প্রস্তাব রাখা হয় বৈঠকে। কিন্তু শ্রমমন্ত্রী বৈঠকে জানান, নূন্যতম মজুরি ছাড়া রাজ্য সরকারের এ ধরণের চুক্তির ব্যাপারে কোনও সমর্থন নেই। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক কর্তারাও কোনও ভূমিকা নেবেন না। শ্রমিক ও মালিক সংগঠন নিজেদের মধ্যে কি চুক্তি করবেন সেটা তাঁদের ব্যাপার। এর পর আর আলোচনা এগোয়নি।
সিটুর মুর্শিদাবাদ জেলা বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন সরকার বলেন, “সরকার নির্দিষ্ট মজুরি বিড়িশিল্পে চালু হলে তো ভালই। বিগত বামফ্রন্ট সরকার তা চালু করতে পারেনি। কিন্তু বিপুল সমর্থনে জিতে এসেছে বতর্মান রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে বিড়িশিল্পে নুন্যতম মজুরি ও বোনাস চালুর দায়িত্ব নিতে হবে তাদেরই। সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখা মানে বিড়ি মালিকদের সুবিধা করে দেওয়া।” বিড়ি মালিক সংগঠনের অন্যতম কর্তা খলিলুর রহমান বলেন, “বিড়িশিল্পের যা পরিস্থিতি তাতে ১৪২ টাকা ৪৭ পয়সার নুন্যতম মজুরি চালু করা অসম্ভব ব্যাপার। এতে জেলায় বিড়ি উৎপাদন কমে যাবে। ৬ লক্ষ শ্রমিক কাজ হারাবেন।” তিনি বলেন, “প্রশাসনকে বাইরে রেখেই শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে আলোচনায় বসে মজুরি বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা হবে পুজোর আগেই। বোনাস দেওয়ার বিষয়টিও তখন আলোচনা করা হবে।” |
|
|
|
|
|