|
|
|
|
টু-জি কেলেঙ্কারি |
সিবিআই তদন্ত, ইস্তফার দাবি তুলল বিরোধীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
টু-জি কেলেঙ্কারিতে খোদ প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ফের রক্তের স্বাদ পেয়ে গেল বিরোধীরা। সরকারের ‘গৃহযুদ্ধ’ থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে আসরে নেমেছে সব বিরোধী দলই।
নেতৃত্বের লড়াইয়ে জর্জরিত বিজেপি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে তোপ দেগে নিজেদের সংগঠিত করার সুযোগ পেল। চিদম্বরমের ইস্তফা ও তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হলেন অরুণ জেটলি থেকে মুরলী মনোহর জোশী। অন্য দিকে চিদম্বরমের ঘোর বিরোধী তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন। অবিলম্বে চিদম্বরমকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর দাবিও তুলেছেন তিনি। সিপিএম-ও দাবি করেছে, টু-জি দুর্নীতিতে চিদম্বরমের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে সিবিআই-কে দিয়ে তদন্ত করানো উচিত।
এমন নয়, বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের নোটে চিদম্বরমকে দায়ী করার ফলে মনমোহন সিংহের সরকারের উপর যে নতুন সঙ্কট ঘনীভূত হয়েছে, তার সুযোগ নিতে সকলেই তৎপর।
টু-জি কেলেঙ্কারিতে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি ওঠে। এখন বিজেপি-র তথ্যের অধিকার সেলের প্রধান বিবেক গর্গের উদ্যোগে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চিদম্বরমের বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র পাওয়া গেল। এই অস্ত্র প্রাপ্তির সময়টাও তাৎপর্যপূর্ণ। লালকৃষ্ণ আডবাণী না নরেন্দ্র মোদী আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে বিতর্কে জেরবার দল। আর তাতে কংগ্রেসেরই সুবিধা হচ্ছিল। টু-জি বিতর্কে নয়া মোড় বিজেপি-কে অন্তর্কলহ সরিয়ে রেখে শাসক দলকে আক্রমণ করার সুযোগ এনে দিল। যে সুযোগ স্বাভাবিক ভাবেই হাতছাড়া করতে নারাজ জোশী, জেটলিরা।
তাই আজ তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন জোশী। এর আগে যখন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, চিদম্বরম তখন মন্তব্য করেছিলেন, এক জন মধ্য মেধার ব্যক্তিও বুঝতে পারবেন, তিনি এই দুর্নীতিতে সামিল নন। সেই কটাক্ষের জবাব দিয়ে আজ জোশী বলেন, “এ বার প্রণব মুখোপাধ্যায় সম্পর্কেও কি একই কথা বলবেন চিদম্বরম? সিবিআই এখনও কেন চিদম্বরমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করছে না? তাঁর অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত। তা না হলে তাঁকে অপসারণ করা হোক।”
সরকারের এই ‘গৃহযুদ্ধ’ উস্কে দিতে জেটলি আবার প্রণববাবুকে ‘অভিনন্দন’ জানিয়েছেন। সে সঙ্গে বলেছেন, বিষয়টি ‘বিচারাধীন’ বলে না এড়িয়ে অর্থমন্ত্রীর উচিত সরব হওয়া। জেটলির কথায়, “টু-জি মামলায় শেষ কথা এখনও বলা হয়নি। অনেক রহস্য উন্মোচন বাকি।” প্রধানমন্ত্রী ‘সব কিছু জেনে’ কী করে চুপ থাকলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে বিজেপি।
চিদম্বরমের প্রতি জয়ললিতার রাগ সর্বজনবিদিত। আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ওঠায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে কালবিলম্ব করেননি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, “প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী এ রাজা যদি এই অপরাধের জন্য জেলে যেতে পারেন, তা হলে চিদম্বরমের বিরুদ্ধেও সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত। অবিলম্বে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করা উচিত।” বামেরাই অনেক আগে থেকে টু জি নিয়ে সরব। তবে প্রকাশ কারাট আজ চিদম্বরমের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি করলেও তাঁর ইস্তফার দাবি জানাননি। বামেদের আশঙ্কা, কংগ্রেস দুর্বল হলে বিজেপি তার ফায়দা তুলতে পারে। কারণ, কারাটরা জানেন, এই মুহূর্তে তৃতীয় বিকল্প সে ভাবে দানা বাধছে না। তাঁদের বড় ভরসা জয়ললিতাই সম্প্রতি মোদীর অনশন মঞ্চে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। ফলে এখন কংগ্রেসের সঙ্কট নিয়ে বেশি হইচই করে বিজেপি-র হাত শক্ত করতে চান না বামেরা। |
|
|
|
|
|