|
|
|
|
|
বিডসের মালা,
ছেলেদের কানে দুল
অর্পিতা মজুমদার • দুর্গাপুর |
|
মানতাসা-সাতনরি হারের দিন বোধ হয় ফুরল।
সোনার ভরি ৩০ ছুঁইছুঁই। হাজারে। ‘পুজোয় এক জোড়া মোটাসোটা বালা চাই’ বলে বায়না করার অবকাশই রইল না বাঙালি গিন্নির। ভারী গয়না বরাবরই না-পসন্দ কম বয়সীদের। এ বার বুঝি পঞ্চাশ পেরনো মহিলাদেরও হাল ট্রেন্ডি গয়নার দিকে ঝুঁকতে হবে।
মাটি, ডোকরা, বিটস, প্লাস্টিক, বাহারি পুঁতি, কাঠ এমনকী নানা ফলের বীজের গয়না এ বার সাড়া ফেলেছে বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গত দু’তিন বছর ধরেই এই ট্রেন্ড লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এক ধরণের গয়নাও বিক্রি হচ্ছে ব্যাপক হারে। সে গয়না সোনার মতো দেখতে কিন্তু সোনা নয়। কারণটা সেই এক। দুর্গাপুরে বেনাচিতির এক দোকানদারের কথায়, “একেই সোনা মহার্ঘ। তার উপরে রাস্তায় গয়না ছিনতাইয়ের ভয় আছে। তার চেয়ে সোনার গয়নার অবিকল বিকল্প, আকর্ষণীয় ডিজাইনের এই গয়নাগুলি পরাই ভালো। দাম কম, ডিজাইন মনোগ্রাহী, আবার খোওয়া গেলেও ভয় নেই।”
পুজোর বাজারে এই দুই হালকা ফ্যাশনেবল গয়নার এত চাহিদা যে শহরের প্রতিটি শপিং মলে আলাদা কাউন্টার খোলা হয়েছে। শপিং মলের কর্মীরা জানাচ্ছেন, পুজো উপলক্ষে কেনা হলেও এই সব গয়না কিন্তু পরা যায় সারা বছর ধরে যে কোনও অনুষ্ঠানেই। কিন্তু দুর্গাপুজোয় স্বাভাবিক ভাবেই পছন্দের জিনিস কেনার হিড়িক বেড়ে যায়। সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। জমকালো শাড়ির সঙ্গে এ সব গয়না লুক বদলে দেয় নিমেষে। জিন্স-কুর্তার সঙ্গে লম্বা বিডসের মালা আর বড় কানের দুলে অষ্টমীর সন্ধ্যা মাতাতে তৈরি হচ্ছেন টিনএজাররা।
বিভিন্ন জুয়েলারি দোকান ঘুরে জানা গেল, সোনার গয়না যে মানুষ একেবারে কিনছেন না এমন নয়। তবে চাহিদা বদলেছে। বনেদি বাড়ির পুজোয় এখনও সাবেক সোনার গয়নার চল রয়েছে। কিন্তু সে বড়ই অল্প। এখন সূক্ষ্ম কারুকাজ করা হালকা ডিজাইনই ক্রেতারা বেশি পছন্দ করছেন। তাই চেষ্টা হচ্ছে সাবেকিয়ানার সঙ্গে আধুনিক সূক্ষ্ম ডিজাইনের মিশ্রন ঘটানোর। একে বলা হচ্ছে ফিউশন কালচার। মূলত কমবয়সীদের মধ্যেই এই ফিউশন জুয়েলারির চাহিদা বেশি বলে জানিয়েছেন দোকান মালিকেরা। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, দামি পাথর বা হিরে বসানো অত্যন্ত হালকা ওজনের সোনার গয়নাও চাইছেন অনেকে। আসল চমক কিন্তু অন্যত্র। জুয়েলারি দোকান বা শপিং মলে গয়নার কাউন্টারে উঁকি দিতেই দেখা গেল, মহিলাদের পাশাপাশি গয়না কিনতে হাজির পুরুষও। মহিলাদের চোখ যখন গলার হার, চুরি বা নেকলেসের দিকে, পুরুষ তখন খুঁজছে হাতের বালা, কানের ছোট্ট দুল। জিনস, টি-শার্ট, স্নিকার, রঙীন চুলের সঙ্গে হাতে ডিজাইনার বালা আর এক কানে দুল। তবেই নাকি কমপ্লিট হয় ফ্যাশন! শিল্পীরা এমন সব ডিজাইন বাজারে আনছেন যার আকর্ষণ থেকে রেহাই নেই পুরুষেরও। |
|
|
|
|
|