বাবু মাস্টার গ্রেফতার, স্বস্তি হাসনাবাদে
‘সন্ত্রাস’ করে এক সময় হাসনাবাদে এলাকা দখলে অভিযুক্ত বাবু মাস্টারকে অবশেষে গ্রেফতার করল পুলিশ।
হাসনাবাদের ভবানীপুরের মডেলবাজারের বাসিন্দা ফিরোজ কামাল মনি ওরফে বাবু মাস্টারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে পুলিশের খাতায় খুন-জখম, ধর্ষণ, মারামারি-সহ একাধিক অভিযোগ ছিল। পেশায় মডেলবাজারের একটি হাইস্কুলের শিক্ষক বাবুর দাপটে এলাকার সাধারণ মানুষ ‘অতিষ্ঠ’ ছিলেন। অভিযোগ, এক সময়ে সিপিএমের ‘ছত্রছায়া’য় থাকা বাবুর নেতৃত্বে এলাকার ‘দখল’ নিয়েছিলেন বামপন্থীরা। ঠিক যেমন শাসনে প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক মজিদ মাস্টারকে সামনে রেখে উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ ভেড়ি এলাকায় ‘আধিপত্য’ বিস্তার করা হয়েছিল। এ হেন বাবু মাস্টার ধরা পড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই এলাকায় স্বস্তি এসেছে।

বাবু মাস্টার ছবি: নির্মল বসু
রাজ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে বাবু ক্রমশ ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “মানুষের শান্তি নষ্ট করছিল বাবু। সে জন্যই তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশকে বলা হয়েছিল। ওর কাছে অনেক অস্ত্র আছে। সে সব উদ্ধার করুক পুলিশ।” বাবু যে এক সময় তাঁদের সঙ্গে ছিলেন, তা মেনে নিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্বও। দলের জেলা কমিটির সদস্য শক্তি মুখোপাধ্যায় বলেন, “এক সময়ে আমাদের দলের সদস্য ছিলেন ওই ব্যক্তি। ওঁকে বহিষ্কারও করা হয়। তার পরে উনি তৃণমূলের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে প্রকাশ্যে আমাদের লোককে হুমকি দিচ্ছিলেন।”
এত দিন পুলিশের চোখে ‘ফেরার’ ছিলেন বাবু। সোমবার হাসনাবাদ থানার ওসি অনিমেষ সিংহরায়ের কাছে খবর আসে, মধ্যমগ্রামে বাদু রোডে হুমাইপুরের কাছে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন মাঝবয়সী ওই ব্যক্তি। সেই মতো রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বারাসত থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাসনাবাদের পুলিশ সেখানে হানা দেয়। গ্রেফতার করে রাতেই বাবুকে আনা হয় হাসনাবাদে। তাঁকে জেরা করে আমলানি থেকে একটি রিভলভার এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার বলেন, “একাধিক সংঘর্ষ, ধর্ষণ, খুনের ঘটনায় বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। ২০-২২টি মামলা ঝুলছে তাঁর নামে।” বাবুকে গ্রেফতারের বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কাছেও গুরুত্ব পাচ্ছিল বলে জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। যদিও ধৃত বাবু এ দিন দাবি করেন, তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
বস্তুত, দলের সঙ্গে নানা মামলায় অভিযুক্ত বাবুর ‘ঘনিষ্ঠতা’ মেনে নিতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্বের বড় অংশ। যদিও বাবু ‘তৃণমূল নেতা’ হিসাবে এলাকায় ‘স্বীকৃতি’ পেতে উঠেপড়ে লাগেন। ‘রাজনৈতিক’ সভাও করেন হাসনাবাদে। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের যে অংশটি সরব হয়েছিল, তাঁদের কয়েক জনকে মারধর করার অভিযোগও ওঠে বাবুর বিরুদ্ধে। জ্যোতিপ্রিয়বাবু ঘটনার কথা জানতে পেরে বাবু মাস্টার ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের উদ্দেশে ‘বার্তা’ দেন, জোর করে কেউ দলে ঢুকতে চাইলে তা গ্রাহ্য করা হবে না। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতারা।
এর পরেও দাপট কমেনি বাবুর। কিছু দিন আগেই বসিরহাট উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের আসন্ন উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়ের সামনেই হেনস্থা হতে হয় বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলামকে। তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই কিছু নেতা-কর্মী অভিযোগ তোলেন, বাবুকে ‘প্রশ্রয়’ দিচ্ছেন নুরুল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.