ইডেনে ম্যাচ না হওয়ায় মন খারাপ সাকিবের
দু’হাত ভর্তি বড় বড় প্লাস্টিক ব্যাগ। দুপুর দু’টো নাগাদ শপিং সেরে সবে ফিরলেন ‘মল’ থেকে। মুখোমুখি হয়েই প্রথম প্রশ্ন, “আপনি বাঙালি? আচ্ছা, ইডেনের কী খবর? ম্যাচ হচ্ছে না?”
মিনিট পাঁচেকের মধ্যে একটা থ্রি কোয়ার্টার আর টি-শার্ট গলিয়ে যে চেহারাটা লবির সোফায় গা এলিয়ে দিল তাঁকে দেখে কে বলবে, ইনিই গত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অধিনায়ক ছিলেন? লাজুক, বিনয়ী একটা ভাব সব সময় লেগেই আছে। গত রাতের নাইটদের রুদ্ধশ্বাস জয়ে তাঁর বড়সড় অবদান ছিল। টিম মূলপর্বে ওঠা থেকে আর এক পা দূরে। মন বেশ ফুরফুরে থাকার কথা।
কিন্তু সাকিবের মন ভাল নেই।
“ইডেনে ম্যাচ হবে না শুনে কারও ভাল লাগতে পারে? ভারতে আমার ঘর-বাড়ি বলতে তো ওটাই,” আফশোস ধরা পড়ে সাকিবের গলায়। একটু থেমে ফের বলেন, “নাইট রাইডার্স নামটাই আমাদের দেশে একটা আলাদা আবেগ তৈরি করে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমরা খেলছি শুনে ঢাকায় এখন যেমন সবাই কেকেআর।” কিন্তু সেটা কী আপনি টিমে আছেন বলে? হেসে উত্তর আসে, “মাশরাফি ভাই যখন ছিলেন, তখন থেকেই উন্মাদনাটা এসেছে। এখন চলছে আমাকে নিয়ে।”
বাংলাদেশ অধিনায়কের চাকরি গিয়েছে। আনকোরা জিম্বাবোয়ের কাছে টেস্ট সিরিজ হারতে হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সাকিবের সঙ্গে খোলাখুলি মিশতে জুনিয়ররা ভয় পান। খারাপ লাগে না? “লাগে। তবে আর ভাবি না। বোর্ডের সঙ্গে। অধিনায়ক হিসাবে একশো শতাংশ দিয়েছি। ওরা মনে করেছে, সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বছরে যদি পাঁচটা করে টেস্ট খেলা হয়, তা হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের এগোনো মুশকিল। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান মোটেই ভাল নয়। তাই টেস্ট খেলতে অসুবিধা হয়। বছরে অন্তত দশটা টেস্ট তো খেলা দরকার।” তবে অধিনায়কত্ব গিয়েছে বলে দেশের প্রতি ভক্তি কমেছে ভাবলে ভুল হবে। ধোনিদের অভিশপ্ত ইংল্যান্ড সফরের কারণ হিসাবে লোকে যখন ক্রিকেটারদের আইপিএল-প্রেমকে দায়ী করছে, তখন সাকিব কিন্তু দিব্যি বলে গেলেন, “দেশ আমার কাছে সব সময় আগে। বোর্ড যদি আইপিএল বাদ দিয়ে টেস্ট-ওয়ান ডে খেলতে বলে, নাইট রাইডার্স ছেড়ে দেব।”
অধিনায়কত্ব নিয়ে না ভেবে বরং নিজেকে আরও ধারালো করতে চাইছেন সাকিব। ওয়াসিম আক্রমকে কাছ থেকে দেখে শিখছেন, বড় ক্রিকেটার হতে গেলে মানসিকতা কেমন হওয়া উচিত। নিজেই বললেন, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকেই নতুন জীবন শুরু করার ইচ্ছে আছে। তথ্যের খাতিরে জানানো যাক, আর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে সমারসেটের বিরুদ্ধে কোয়ালিফাইং রাউন্ডের শেষ ম্যাচ নাইটদের এবং ব্র্যাড হাডিনকে পাওয়া যাবে কি না নিশ্চিত নয়। তার মধ্যে এ দিন নেমেই নাইটদের চিন্তা বাড়িয়ে দিল সমারসেট। অকল্যান্ডকে হারিয়ে। কোয়ালিফাইং পর্বের নিয়ম যা তাতে, দুটো গ্রুপের সেরা টিমের সঙ্গে একটা তৃতীয় টিম উঠবে মূলপর্বের জন্য। এবং তৃতীয় টিম ঠিক হবে রান রেটের ভিত্তিতে। ঘটনা হচ্ছে, ইতিমধ্যেই মূলপর্বে উঠে গিয়েছে ত্রিনিদাদ। বাকি থাকছে দু’টো দল। নাইট রাইডার্স যদি বুধবার সমারসেটকে হারিয়ে দেয়, তা হলে তারা চলে যাবে মূলপর্বে। কিন্তু হেরে গেলে নাইটদের ভাগ্য নির্ভর করবে দুপুরের লেস্টারশায়ার বনাম রুহুনু ম্যাচের উপর। ওই ম্যাচের জয়ী টিমের রান রেটের চেয়ে যদি নাইটদের রান রেট ভাল হয়, তা হলেই মূলপর্বে যাবে নাইটরা। নইলে ছিটকে যাবে টুর্নামেন্ট থেকে।
“কিন্তু অত ভাবব কেন?” শুনে পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন সাকিব। “ক্ষমতা অনুযায়ী খেললে আমাদের কেউ আটকাতে পারবে না। গত কালের ম্যাচ দেখে বিচার করবেন না টুর্নামেন্টটা জিততেই আমরা এসেছি।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.