মোমবাতি ঠিক ততটা নিরীহ নয়, যতটা নরম তার আলো।
মোমবাতির সলতে পোড়া যে কালো ধোঁয়া বেরোয়, তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পেট্রোলিয়াম জাত পদার্থ ‘প্যারাফিন’কে যথেষ্ট পরিশোধন না করে, তা দিয়েই মোমবাতি তৈরি করার ফলে এই দূষণের উৎপত্তি। অনেক সময়েই ঘরের ভিতরে জ্বালানো হয় বলে আরও বেশি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় মোমবাতি, বলছেন বিজ্ঞানীরা।
কী ধরনের দূষণ হয় সেই ধোঁয়ায়? দেরাদুনের ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোলিয়াম’-এর বিজ্ঞানী ইউ সি অগ্রবাল জানিয়েছেন, প্যারাফিনে ১.৫%-এর বেশি তেল থাকলে তা দিয়ে মোমবাতি তৈরি করা উচিত নয়। অথচ মোমবাতি তৈরির জন্য যে প্যারাফিন বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়, তাতে ৩.৫% পর্যন্ত তেল থাকে। ওই তেলে যে অপরিশোধিত উপাদানগুলি থাকে, তা মারাত্মক বিষাক্ত। তাতে থাকে হাইড্রোকার্বন। মোমবাতি জ্বললে সেই না পোড়া হাইড্রোকার্বন নির্গত হয়ে ভয়ানক দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। |
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য এবং কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ দত্তও জানালেন, আধা-শোধিত প্যারাফিন মোম থেকে তৈরি মোমবাতি জ্বাললে, তা থেকে দূষণ ছড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “ঘরের ভিতরে মোমবাতি জ্বললে সলতে পোড়া কার্বন ডাই-অক্সাইড এবং কার্বন মোনোঅক্সাইড তো থাকেই, তার উপরে প্যারাফিন যদি পরিশোধিত না হয়, তা হলে সেটিও দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।” না-পোড়া হাইড্রোকার্বন দীর্ঘদিন ধরে নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকলে, তা স্থায়ী অসুস্থতার কারণ হতে পারে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে অবশ্য এই বিষয়ে তেমন কোনও তথ্য নেই বলে জানানো হয়েছে।
কলকাতার এক মোম ব্যবসায়ী রাকেশ অগ্রবাল জানান, দেশে বিভিন্ন রকম কাজে মোট দু’লক্ষ টন মোম ব্যবহার হয়। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টনই যায় মোমবাতি তৈরি করতে। ওই মোমের প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে। কিছুটা ‘ইন্ডিয়ান অয়েল’ উৎপাদন করে তাদের দু’টি শোধনাগারে। রাকেশবাবুর বক্তব্য, কোনও বিধি-নিষেধ না থাকায় ইরান থেকে বিপুল পরিমাণে আধা-শোধিত প্যারাফিন এ দেশে আমদানি হয়। মোমবাতি মূলত বানানো হয় ওই দূষণযুক্ত প্যারাফিন থেকেই। এ রাজ্যেই ৭০০ থেকে ১০০০ টন মোমবাতি তৈরি হয় প্রতি মাসে।
‘ইন্ডিয়ান অয়েল’-এর প্যারাফিন উৎপাদনের বেশির ভাগটাই ব্যবহৃত হয় মোমবাতি তৈরিতে। বাকিটা লাগে ত্রিপল ও মোম কাগজে। রাকেশবাবুর বক্তব্য, ‘ইন্ডিয়ান অয়েল’ মূলত উচ্চমানের প্যারাফিন তৈরি করে। সেই প্যারাফিনে তেল থাকে ০.৫%-এর কম। ফলে তার দামও বেশি। তাই আমদানি করা সস্তার প্যারাফিনের উপরেই নির্ভর করেন ব্যবসায়ীরা।
তবে উচ্চ মানের ওই প্যারাফিন খাদ্যে এবং প্রসাধনে ব্যবহার করা হয়। বোতলে ভরার পরে জ্যাম বা জেলির উপরে মোম দিয়ে সিল করা হয়। সেই মোম উচ্চ মানের না হলে, তা স্বাস্থ্যের জন্য ভয়ানক ক্ষতিকর হতে পারে।
|
বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে আমগাছের চারা বিলি করা হল পাঁশকুড়ায়। সোমবার সন্ধ্যায় পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারে সিপিআই-এর শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র বিশ্বকর্মা পুজো মণ্ডপে ওই অনুষ্ঠানে আম্রপালি, হিমসাগর, ল্যাংড়া-সহ বেশ কয়েকটি জাতের হাজার দুয়েক আমের চারা বিলি করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন পশ্চিম পাঁশকুড়ার বিধায়ক ওমর আলি, পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মঙ্গল কুইলা প্রমুখ। |