ছাত্র, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের রাজনৈতিক মিছিল সমাবেশের উপর’ রাজ্য সরকার যে ‘নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে চলিয়াছে’ তার সমর্থনে প্রকাশিত (১৭-৯) সম্পাদকীয় ‘শিশুর অধিকার’ বিষয়ে দু-চার কথা বলতে চাই। ‘স্কুলের কাজ পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন’, এবং ‘ক্লাসের বদলে রাজনৈতিক দলের মিছিলে ভিড় বাড়ানো পড়ুয়াদের কাজ নয়’ এটা একশো ভাগ সত্যি। কিন্তু তা রোধ করার জন্য কি নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন আছে? স্কুলে পড়াশোনা হবে, এবং যারা, যে কোনও কারণেই স্কুলে অনুপস্থিত থাকে তাদের সেই কাজটি সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণের অধিকার স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে আগের থেকেই দেওয়া আছে।
তা হলে কি স্কুল পরিচালনার যে নীতিনিয়ম বিদ্যমান সেটা অপ্রতুল? অথবা সেগুলি ফলপ্রসূ হচ্ছে না? প্রথমত, অপ্রতুলতা যা আছে সেটা নিয়মকানুন অপেক্ষা অনেক বেশি বাস্তব ব্যবস্থাপনার। এই সংবাদপত্রেই বহু বার স্কুল পরিকাঠামোর শোচনীয় অভাবটি তুলে ধরা হয়েছে। এ রাজ্যে আইন প্রণেতারাই আহোরাত্র আইন ভেঙে চলেন। এই আইন প্রণেতারা আওয়ামকে আইন মেনে চলার পরামর্শদানের অধিকার হারিয়েছে। আওয়ামও আইন ভাঙার আনন্দ আঠারো আনা উপভোগ করছে।
নিয়ম ভাঙার সর্বাপেক্ষা বড় নজিরটি সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার। শিশুর অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য যা যা করণীয় তার কত অংশ সাধিত হচ্ছে, সেটা অজানা নয়। অঙ্গনওয়াড়ি, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, বিদ্যালয় কোথায়ও শিশুর অধিকারের মান্যতা দেখা হয় না। শিক্ষার যে ক্ষেত্র তার আলিটাই ভাঙা, যেটা বন্ধ করার একটা উপায় হতে পারে শিক্ষার অধিকার আইনকে বলবৎ করা। কিন্তু, দেশের আঠারোটি রাজ্যে এই আইন চালু হয়ে গেলেও বঙ্গীয় নবজাগরণের আলোকদীপ্ত পশ্চিমবঙ্গে এ বিষয়ে সক্রিয়তার কোনও লক্ষণ নেই।
মদনমোহন মণ্ডল। কলকাতা-৯৮ |