স্কুল নির্বাচনে দ্বন্দ্ব কংগ্রেস-তৃণমূলের
মালদহের চাঁচলে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে ঐক্য হয়নি গত বিধানসভা ভোটেও। গোঁজ প্রার্থী ছিল দুই তরফেই। এ বার স্কুল পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও অনৈক্যের পাশাপাশি শাসক দুই জোট তৃনমূল ও কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই শাসক জোটই একে অপরের বিরুদ্ধ প্রচারে ময়দানে নেমে পড়েছে। চাঁচলের ৫টি স্কুলে অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই দুই শাসক জোটের অনৈক্য ও দ্বন্দ্বের চেহারা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে রবিবার দিনই চাঁচলের দুটি স্কুলে ভোট হয়। একটি হল চাঁচল রানি দাক্ষায়নী গার্লস হাই স্কুল। অন্যটি বীরস্থল হাই স্কুল। দুটি স্কুলেই ৬টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে দুই শাসকজোট। শুধু ওই দুই স্কুলেই নয়, চাঁচলের দরিয়াপুর ও খরবা স্কুলেও কয়েক দিন বাদেই পরিচালন সমিতির নির্বাচন। ওই দুই স্কুলেও সব কটি আসনেই পৃথক ভাবে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল। এ ছাড়া কাঞ্চনপুর নয়াটোলা বসন্তপুর হাই মাদ্রাসার অভিভাবক নির্বাচনে দু পক্ষই পৃথক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই ঘটনায় শাসক জোটের অনৈক্য ও দ্বন্দ্ব নিয়ে সরব দু দলেরই নীচু তলার কর্মী সমর্থকরা। স্কুল ভোটে জোট না হওয়ার জন্য অবশ্য দু দলের স্থানীয় নেতারা একে অন্যকে দায়ী করেছেন। চাঁচল-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মজিবর রহমান বলেছেন, “জোট তো দু’পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে হয়। সে জন্য দু’দলের আলোচনা জরুরি ছিল। কিন্তু ওদের তরফ থেকে ওই বিষয়ে কোনও প্রস্তাব আসেনি!
কিন্তু তৃণমূলের তরফ থেকে কি কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল! সভাপতির সাফ কথা, “রাজ্যে বড় দল তো তৃনমূল। আমরা কেন প্রস্তাব দেব, ওরা প্রস্তাব দিলে আমরা ভাবতাম।” আবার ব্লক কংগ্রেসের সম্পাদক ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদারের দাবি, “জোটে আমাদের সায় ছিল। কিন্তু তৃণমূল এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত! ওদের অনেক গোষ্ঠী। ফলে কথা বলার মতো বিশ্বাসযোগ্য কাউকে পাইনি। তাই আর এ নিয়ে এগোইনি।” নেতৃত্বের তরফে যাই বলা হোক না কেন, জোট না করে দু’দলের নেতারা যেভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছে তাতে অশনি সংকেত দেখছেন নীচু স্তরের কর্মীদের পাশাপাশি নেতৃত্বেরও একাংশ। কেননা প্রতিটি স্কুলে প্রার্থী রয়েছে বামেদের। কংগ্রেস ও তৃণমূলের বিরোধে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের। তা ছাড়া শাসক জোট যেন ভাবে লড়াইয়ে নেমেছে তাতে মানুষের কাছেও ভুল বার্তা পৌঁছবে। কারণ শাসক জোটের বিরোধ যত বাড়বে তাদের মধ্যে দূরত্বও তৈরি হবে। যা ওই দু দলের মধ্যে এর মধ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে। চাঁচলে অন্তত শাসক জোটের নেতাদের মধ্যে যে কোনও রকম সমন্বয় নেই তা দু’দলেরই একাধিক নেতা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছেন।
শাসক জোটের ওই বিরোধে যে তাদের বাড়তি সুবিধা হচ্ছে ও হবে তা খোলাখুলি ভাবেই স্বীকার করে নিয়েছেন বাম নেতারা। সিপিএম নেতা তথা চাঁচল জোনাল কমিটির সদস্য মনওয়ার আলম বলেন, “স্কুল ভোটে যে ভাবে ওরা একে অন্যের গায়ে কাদা ছুড়ছে তাতে জোটের চেহারাটাই মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার সুফল আমাদের কিছুটা হলেও মিলবে। ” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলমও ইন্দ্রনারায়ণবাবুর সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, “জেলায় তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী। ফলে কে প্রকৃত নেতা সেটাই তো বুঝতে পারছি না। তা ছাড়া যেখানে ওদের সংগঠন নেই সেখানেও ওরা অর্ধেক আসন দাবি করছে! এটা হতে পারে না। কংগ্রেস একাই লড়ছে।” জেলা তৃনমূল সভানেত্রী শিশু, নারী ও সমাজ কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, ওরা নিজেদের দোষ ঢাকতে এ সব কথা বলছে। কাদের কটা গোষ্ঠী সবাই জানে। আমরা জাট করতে চাই। কিন্তু ওদেরই নেতাদের উপরে নিয়ন্ত্রণ নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.