শৌচাগার নির্মানে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি বরাবাজারের। তথ্যের অধিকার আইনে ওই এলাকার সার্বিক স্বাস্থ্য বিধান প্রকল্পে শৌচাগার নির্মাণের তথ্য পেয়ে এই অভিযোগ তুলেছেন বরাবাজারের উপর পাড়ার বাসিন্দা নরোত্তম নামাতা। তাঁর অভিযোগ, “উপভোক্তা হিসেবে অনেক ভুয়ো লোকের নাম ঢুকিয়ে মোটা টাকার দুর্নীতি করা হয়েছে।” এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।
নরোত্তমবাবু জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে তথ্যের অধিকার আইনে আবেদন করে দুর্নীতির বিষয়টি জানা যায়। যে স্যানিটারি মার্ট বরাবাজার এলাকায় সার্বিক স্বাস্থ্য বিধান প্রকল্পে শৌচাগার নির্মাণের কাজ করেছে তাঁরা ওই দুর্নীতিতে যুক্ত। তাঁর অভিযোগ, “ওই সংস্থা গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত কয়েক দফায় শৌচাগার নির্মাণের জন্য প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা পেয়েছে। কিন্তু, এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে দেখেছি, তাঁদের শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া অনেক উপভোক্তার কোনও অস্তিত নেই। অথচ, দেখা যাচ্ছে ওই সব নামে সরকারি ভর্তুকির টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।”
তাঁর দাবি, বরাবাজার পঞ্চায়েতের বেলাবাঁধ গ্রামে ২ জন, পাততোড়িয়া গ্রামে ৩ জনকে শৌচাগার দেওয়া হয়েছে বলে ওরা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু, গ্রামগুলিতে গিয়ে ওই নামের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আবার, বেলাবাঁধ গ্রামের ৩ জনের, ধাদকিডি, পাড়কিডি গ্রামের কয়েক জনকে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে বলে মাস্টার রোলে উল্লেখ করা থাকলেও তাঁদের তা দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।
ওই সংস্থার সম্পাদক সন্দীপ নিয়োগী বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি প্রণব নিয়োগীর ভাই। সংস্থার ম্যানেজার সুবর্ণ নিয়োগী সভাপতির ভাইপো। ফলে, সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণেরও অভিযোগ উঠেছে। সুবর্ণবাবুর দাবি, “ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে উপভোক্তাদের শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। কোনও বেনিয়ম করা হয়নি।”
একই সুরে সভাপতিও দাবি করেন, “তৃণমূলের কয়েক জন রাজনৈতিক উদ্দেশে আমার নাম জড়িয়ে অপপ্রচার করছে। ওদের অভিযোগ বিশ্বাস করি না।” তিনি বলেন, “ওই সংস্থার ৪২২টি শৌচাগার তৈরি করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের কাছে অভিযোগ সর্ম্পকে কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়েছে।” বরাবাজারের বিডিও দেবজিৎ বসু বলেন, “অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হয়েছে। জেলা থেকেও তদন্ত শুরু হয়েছে।” |