আদ্রার ‘প্রাণের পুজোয়’ তাল কাটল বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ
রেল শহর আদ্রায় বিশ্বকর্মা পুজো আক্ষরিক অর্থেই ‘প্রাণের পুজো’ বলে পরিচিত। মণ্ডপ, আলোকসজ্জা-সহ সমস্ত বিষয়ই নজরকাড়া। দুর্গাপুজোর সঙ্গে বিশ্বকর্মাপুজোর রীতিমতো প্রতিযোগিতা হয় এখানে। রেলের বিভিন্ন দফতর ও অন্যান্য পুজো মিলিয়ে প্রায় ত্রিশটি বিশ্বকর্মা পুজো হয় এখানে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতর আদ্রা থেকে রাঁচিতে চলে যাওয়ার পরে মাঝে আদ্রায় বিশ্বকর্মা পুজোর জৌলুস কমে গিয়েছিল। গত কয়েক বছরে আদ্রায় ফের পুরনো বিশ্বকর্মা পুজোর জাঁকজমক ফিরে এসেছে।
কিন্তু, বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ও বিদ্যুতের সংযোগ রেল থেকে না পাওয়ায় এ বার আদ্রার উৎসবের রঙ যেন কিছুটা ফিকে হয়ে গিয়েছে। রেল সূত্রের খবর, পুজোর দু’দিন আগে শুক্রবার উদ্যোক্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন আদ্রার এডিআরএম রাহুল গৌতম। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ট্রান্সফর্মার বিকল হওয়াতে এ বছর রেল মণ্ডপগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারবে না। ডিআরএম অমিতকুমার হালদার জানান, দুটি ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে আদ্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। একটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। তার উপর মণ্ডপগুলিতে বিদ্যুৎ দিতে গেলে পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এ বার মণ্ডপগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর রেল কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ছড়িয়েছে পুজো উদ্যোক্তাদের মধ্যে। প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে রেলের বিদ্যুৎ ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কিছু পুজোর মণ্ডপে রবিবার মোমবাতি, লণ্ঠন জ্বালিয়ে রাখা হয়। তবে, এই সমস্যার মধ্যেও আদ্রার বিশ্বকর্মা পুজোর ঐতিহ্য বজায় রাখার প্রয়াস বজায় রেখেছেন কিছু পুজো উদ্যোক্তারা। চট দিয়ে মণ্ডপ নির্মাণ করে বড় বাজেটের পুজো করছেনর্ ইী্জিনিয়ারিং বিভাগের পিডব্লউআই (ওয়েস্ট) দফতর। সেই পুজোর কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু, দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শকদের হতাশ করতে চাইনি। তাই জেনারেটর ভাড়া করে পুজোর আয়োজন করেছি।”একই মত রেলের রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসপ দফতরের।
পুজোর উদ্যোক্তারা মূলত পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে মাটির মডেল নির্মাণ করে বিভিন্ন কাহিনি দৃশ্যায়িত করে ভিড় টানার প্রতিযোগিতায় নামেন। যেমন বিক্রম-বেতালের কাহিনি বা মনসার জন্ম- এই ধরণের থিম দেখা গিয়েছে। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দর্শকরা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরেছেন। এমনই এক পুজো উদ্যোক্তা বিধান কালিন্দী বলেন, “দুর্যোগ ও বিদ্যুৎ না পাওয়ার সমস্যার মধ্যেও সাধ্যমত দর্শকদের খুশি করার চেষ্টা করেছি।” ডিআরএম বলেন, “বিকল ট্রানসফর্মারটি মেরামত করতে সমস্যা হওয়ায় এ বার মণ্ডপগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া গেল না।”
অন্য দিকে আদ্রার পার্শ্ববতী এলাকাগুলিতে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় বিশ্বকর্মা পুজোর ঢেউ সেখানেও ছড়িয়েছে। বড় মাপের পুজো শুরু হয়েছে রঘুনাথপুর শহর-সহ ডিভিসির নির্মিয়মান বিদ্যুৎ প্রকল্প ও সাঁওতালডিহিতে। দুমদুমিতে ডিভিসি’র নির্মিয়মান বিদ্যুৎ প্রকল্পে পুজোর প্রসঙ্গে সহকারী মুখ্য বাস্তুকার প্রভাত কিরণ বলেন, “পুজোকে ঘিরে এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহ লক্ষ্য করার পরেই পুজোর দিনগুলিতে প্রকল্প এলাকার ভিতরে পুজো দেখতে তাঁদের অবাধ প্রবেশ করে দেওয়া হয়েছে।” রবিবার থেকে শুরু হওয়া এই পুজোর রেশ চলবে আরও কয়েক দিন। তাই, এলাকার নিরাপত্তায় সতর্ক পুলিশ। রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “আদ্রায় বিশ্বকর্মা পুজোয় বরাবরই ভালো ভিড় হয়। ভিড় সামলানো থেকে আইন-শৃঙ্খলা জমিত সমস্যা মোকাবিলায় মহকুমার বিভিন্ন থানা থেকে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.