|
|
|
|
ফের তোলা চেয়ে হুমকি-টেলিফোন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • স্বরূপনগর |
ফের তোলার দাবিতে দুষ্কৃতীদের হুমকি-ফোন পেলেন স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া বাজারের এক ওষুধ ব্যবসায়ী। গত শুক্রবার সৃষ্টিধর মণ্ডল নামে ওই ব্যবসায়ীকে দু’বার ফোন করে দুষ্কৃতীরা। থানায় লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে দুষ্কৃতীরা এক লক্ষ টাকা দাবি করে। না পেলে খুনের হুমকি দেয়। পুজোর মুখে এই ঘটনায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে।
স্বরূপনগরের ওই বাজারে তোলাবাজদের দৌরাত্ম্য নতুন নয়। গত এক বছরে পুলিশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু তোলাবাজি বন্ধ হয়নি। ভয়ে অনেক ব্যবসায়ী পুলিশের কাছে যান না।
সৃষ্টিধরবাবুর বাড়ির তলাতেই দোকান। তিনি বলেন, “গত শুক্রবার বিকালে আমার মোবাইলে ফোন করে এক লক্ষ টাকা চায় দুষ্কৃতীরা। না পেলে খুনের হুমকি দেয়। ভয়ে এবং ফের যাতে ফোন না আসে সে জন্য মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলাম। সন্ধ্যায় দুষ্কৃতীরা বাড়ির ফোনে একই দাবিতে হুমকি দেয়। আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি।” বসিরহাট মহকুমা ওষুধ ব্যবসায়ী সংগঠনের সম্পাদক তাপস রায় বলেন, “এই ঘটনায় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। পুলিশকে বলা হয়েছে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করার জন্য। এমন ভাবে হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের ভয় দেখানো চলতে থাকলে আমরা দোকান বন্ধ রেখে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।” এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার জানিয়েছেন, ওষুধ ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমেছে। যে ফোন নম্বর থেকে ওই ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়া হয়, সেই নম্বরের মালিক কে তা জানার চেষ্টা চলছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা ওই বাজারে তোলাবাজদের উপদ্রব চলছে। দুর্গাপুজোর সময়ে সেই উপদ্রব বাড়ে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত বছর দুর্গাপুজোর সময়ে ওই বাজার সংলগ্ন হরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা, স্কুল শিক্ষক রামপদ গাইনের কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করে ফোন করে দুষ্কৃতীরা। অষ্টমীর রাতে রামপদবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। রামপদবাবুকে লক্ষ করে তারা গুলি চালায়। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে রামপদবাবুর বাড়িতে আসা এক কিশোরীর গায়ে লাগে। কয়েক দিন পরে একই ভাবে তোলা চেয়ে ফোন আসে তেঁতুলিয়া বাজারের ব্যবসায়ী গোপালচন্দ্র মণ্ডলের কাছে। তাঁকেও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। ওই ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই এক রাতে বাদুড়িয়ার কুলিয়া গ্রামে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয় গোপালবাবুর। দুষ্কৃতীরা স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি, কংগ্রেস নেতা মুজিবর রহমানের মোবাইলেও এসএমএস করে খুনের হুমকি দেয়।
কয়েক মাসের মধ্যে পর পর তোলাবাজদের হুমকি এবং খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায় ব্যবসায়ী মহলে। পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। পুলিশের বক্তব্য, কাছেই সীমান্ত হওয়ায় দুষ্কৃতীরা অপরাধ করে পালিয়ে যায়। তাই সব সময়ে তাদের ধরা যায় না। কিন্তু ওই বাজার এবং সংলগ্ন এলাকায় টহলদারি চলে। |
|
|
|
|
|